MUSLIM WOMAN Posted August 4, 2012 Report Share Posted August 4, 2012 রোজায় আসে ইখলাসের শিক্ষা শরীফ মুহাম্মদ আজ মাহে রমজানের পনেরতম দিন। মোবারক এ মাসটির অর্ধেক সময় পার হয়ে গেছে। এ মাসে ঈমান ও ইহতিসাবের সঙ্গে রোজা রাখার ফল হচ্ছে গোনাহ থেকে ক্ষমাপ্রাপ্তি এবং জান্নাত লাভ। বিভিন্ন হাদিস শরীফে রোজা বা সিয়াম সাধনার এ ফজিলত ও পুরস্কারের কথা ঘোষিত হয়েছে। এমন পুরস্কার ঘোষিত হওয়ার একটি কারণ হচ্ছে, রোজার মাধ্যমে বান্দার হৃদয়ে ইখলাসের অনুভূতি জাগ্রত হয়। ইখলাস কী? ইখলাসের অর্থ হলো, আমরা যে কাজই করি না কেন, তা একমাত্র আল্লাহর জন্য ও তাঁর সন্তুষ্টির নিয়তেই সম্পাদন করব। এছাড়া আমাদের আর কোনো লক্ষ্য-উদ্দেশ্য থাকবে না। তাওহিদ বা একত্ববাদের পূর্ণতা ইখলাসের মাধ্যমেই সাধিত হয়। মনীষীরা বলেন, সব ইসলামী আদব, আখলাক ও আমলের প্রাণ ও মধ্যমণি হচ্ছে ইখলাস। যা করছি কেবল আল্লাহর জন্যই করছি—ইখলাসের এই মূলমন্ত্র রোজা বা সিয়াম সাধনার সবটুকু জুড়েই ছড়িয়ে আছে। রোজার সওয়াব ও প্রতিদান সম্পর্কে হাদিসে কুদসির ভাষ্য হলো, (আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন) : ‘রোজা আমার জন্য, আমি নিজে রোজার প্রতিদান দেব।’ অন্য উচ্চারণে এই হাদিসের অর্থ হয় ‘রোজা আমার জন্য, তাই রোজার প্রতিদান আমি নিজেই’ (অর্থাত্ রোজাদার বান্দা আমাকে পেয়ে যাবে)। এখানে ভাবার বিষয় হলো, সব ইবাদতই তো আল্লাহর জন্য, শুধু রোজাকে কেন তিনি ‘আমার জন্য’ বললেন? আসলে অন্য সব ইবাদতেই ইবাদত করার পাশাপাশি প্রদর্শনের মনোভাব সক্রিয় রাখার সুযোগ থাকে। নামাজ, হজ, জাকাতসহ দান-খয়রাত, জিকির-আজকার, তেলাওয়াত সব ইবাদতেই—নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখলে—নাম জাহির করার অবকাশ আছে। কিন্তু রমজানের রোজার ক্ষেত্রে একটা পর্যায় পর্যন্ত এর আর কোনো অবকাশ থাকে না। আল্লাহর ভয়ই সেখানে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। কারণ নাম জাহির করা বা আত্মিক অসততা মুখ্য হয়ে থাকলে লোকজনের দৃষ্টির আড়ালে গিয়ে হলেও কিছু খেয়ে বা পান করে রোজার কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়ার অস্থিরতা চাড়া দিয়ে উঠবে। আর এমন করলে তো রোজা ভেঙেই যাবে। রোজা যদি কেউ রাখেই তাহলে তো তাকে সংযমী থাকতেই হবে এবং সেটা প্রকাশ্যে ও আড়ালে সব ক্ষেত্রেই। সুতরাং রোজা রাখার মানেই হলো আল্লাহর নির্দেশের সামনে বিশ্বস্ত থাকা। অবিশ্বস্ত হলে রোজা হবে না। রোজাকে আল্লাহর পক্ষ থেকে ‘আমার জন্য’ বলার এটি অন্যতম তাত্পর্য। মুহাদ্দিসিনে কেরামের অভিব্যক্তি এরকমই। এই যে আল্লাহর নির্দেশের সামনে ফাঁকিহীনভাবে আত্মসমর্পণ—এটাই তাকওয়ার প্রধান বৈশিষ্ট্য এবং এটাই ইবাদতের ইখলাস। রোজায় এই ইখলাসের প্রশিক্ষণ হয়, তাকওয়ার পুনরুজ্জীবন ঘটে। ইখলাসের এই বৈশিষ্ট্যটি অর্জিত হয় ইহসানের মাধ্যমে। আর ইহসান হচ্ছে ইবাদতের সময় আল্লাহকে হাজির জ্ঞান করা। বিখ্যাত হাদিসে জিবরাইলের বর্ণনা অনুযায়ী, আগন্তুক (হজরত জিবরাইল (আ.) রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রশ্ন করেছিলেন, ইহসান কী? নবীজী উত্তরে ইরশাদ করেছেন : ‘আল্লাহর ইবাদত করবে এমনভাবে যেন তুমি তাঁকে দেখছ। আর যদি দেখতে নাও পারো, অন্তত তিনি তোমাকে দেখছেন—এই একিন রাখবে।’ বান্দাকে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে দেখার এই একিনের উজ্জ্বল প্রশিক্ষণ হয় সিয়াম সাধনায়। কোনো রোজাদার, যত দুর্বল রোজাদারই হোক, রোজা যেহেতু তিনি রাখছেন তখন তার অন্তরে সচেতন কিংবা অবচেতনভাবে এই অনুভূতিই জাগ্রত থাকে যে, আল্লাহ তাকে দেখছেন। সব রোজাদার বান্দার কর্তব্য হচ্ছে, রোজাসহ সব ইবাদত এবং জীবনের সব আচরণে ইহসান ও ইখলাসের এই অনুভূতি জাগ্রত করা। ইখলাসের বিপরীতার্থবোধক বিষয় হচ্ছে প্রদর্শন বা প্রদর্শন-মনোভাব, স্বার্থযুক্ততা, নিষ্ঠাহীনতা। সব ইবাদতের ক্ষেত্রেই ইখলাস পরিপন্থী অবস্থান পরিহার করতে পারলে ইনশাআল্লাহ আমরা অশেষ সৌভাগ্য হাসিল করতে পারব। অন্য সময় আমরা অসতর্ক থাকি, উদাসীন থাকি। রোজার সময় আমাদের সামনে ইখলাসের শিক্ষা জাগ্রত হয়ে ওঠে। এ শিক্ষাকেই সঞ্চিত ও অনুভূতিময় করে রাখতে পারলে জীবনভর ইবাদত ও জীবনাচারে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে কবুলিয়াতের সৌভাগ্য নসিব হবে। আল্লাহ তায়ালা তাওফিক দান করুন। আরও জানতে দেখুন বিশেষ আয়োজন ‘রমজান প্রতিদিন’ http://www.amardeshonline.com/pages/details/2012/08/04/157693 Link to comment Share on other sites More sharing options...
Recommended Posts
Create an account or sign in to comment
You need to be a member in order to leave a comment
Create an account
Sign up for a new account in our community. It's easy!
Register a new accountSign in
Already have an account? Sign in here.
Sign In Now