Jump to content
IslamicTeachings.org

খোশ আমদেদ মাহে রমাদ্বান


MUSLIM WOMAN

Recommended Posts

:assalam:

 

 

 

 

 

 

 

খোশ আমদেদ মাহে রমাদ্বান

 

Welcome

THE MONTH OF RAMADAAN

 

 

 

 

মূলঃ খুররম মুরাদ

 

অনুবাদঃ শেখ জেবুল আমিন দুলাল

 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

 

আরেকবার আমাদের উপর রহমতের ছায়া বিস্তার করার জন্য রমাদ্বানের মোবারক মাস এগিয়ে আসছে। আল্লাহ্ তা‘আলার বরকত ও করুণাধারায় আমাদের জীবনগুলোকে সিক্ত করতে পবিত্র মাহে রমাদ্বান ফিরে আসছে পুনরায়। যেখানে স্বয়ং নবী করীম (সাঃ) এ মাসটিকে ‘শাহরুন আজীম’ এবং ‘শাহরুম মোবারাকাহ্’ নামে আখ্যায়িত করেছেন, সেই পবিত্র মাসের মহত্ব এবং বরকত সম্পর্কে আমাদের আর কি ই বা বলার থাকতেপারে? অর্থাৎ এ মাসটি হচ্ছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং মহান মাস, বরকতের মাস। আমাদের বিবরণ এ মাসের মহত্বকে ছুঁতেও পারবেনা, আমাদের ভাষা এর বরকত বর্ণনা করে শেষও করতে পারবেনা।

 

এই মাসটি কেন এতো মহান?

মাসেরই আঁচলে এমন একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও মহামুল্যবান রাত্রি লুকায়িত আছে, হাজার মাসে যাকিছু দেয়া হয় সেই একটি রাতে তার চেয়েও বেশী বরকত ও কল্যাণের ভান্ডার লুটিয়ে দেয়া হয়ে থাকে। সেই মোবারক মাসেই আমাদের মহান প্রতিপালক আমাদের জন্য তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ রহমত আমাদের উপর নাযিল করেছেন। এরশাদ হচ্ছেঃ إِنَّاأَنزَلْنَاهُفِيلَيْلَةٍمُّبَارَكَةٍإِنَّاكُنَّامُنذِرِينَ অর্থাৎ ‘আমরা সুস্পষ্ট ঐ কিতাবকে বরকতের রাতে নাযিল করেছি’ (সূরা দোখানঃ৪৪:৩)। এই কিতাবটা হচ্ছে رَحْمَةًمِّنرَّبِّكَ‘তোমার প্রভুর পক্ষ থেকে রহমত’ (সূরা দোখানঃ৪৪:৬)। প্রকৃত অবস্থা হচ্ছে এমাসের প্রতিটি দিবস পবিত্র, প্রতিটি রাত বরকতপূর্ণ। এর প্রতিটি দিনে সুর্যোদয়ের সাথে সাথে অগণিত বান্দাহ্ প্রভূর আনুগত্য ও সন্তুষ্টির জন্য নিজেদের শরীরের প্রয়োজনীয় চাহিদা এবং বৈধ আকাঙ্খা পরিত্যাগ করে স্বাক্ষ্য দেয় যে, শুধুমাত্র আল্লাহ্ তা‘আলাই তাদের প্রভূ এবং একমাত্র তিনিই তাদের চাওয়া-পাওয়ার মূল লক্ষ্যবস্তু। জীবনের প্রকৃত ক্ষুধা ও পিপাসা হচ্ছে তাঁর আনুগত্য এবং ইবাদাত করা, একমাত্র তাঁর সন্তুষ্টির মধ্যে নিহিত রয়েছে অন্তরের প্রশান্তি আর শিরা-উপশিরার প্রবাহ। আর যখন রাতের অন্ধকার নেমে আসে, তখন অসংখ্য বান্দাহ্ আল্লাহ্ তা‘আলার সামনে ক্কিয়াম, তাঁর সাথে কথা বলা এবং তাঁর যিকিরের স্বাদ ও বরকত সংগ্রহ করে করে ধন্য হতে থাকে, আর এভাবে তাদের অন্তরগুলো উজ্জল প্রদীপের ন্যায় রাতের আকাশে তারার মতো চমকাতে থাকে।

 

 

 

 

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ তা‘আলা কথাটা এভাবে বলছেনঃ

اللَّهُنُورُالسَّمَاوَاتِوَالْأَرْضِمَثَلُنُورِهِكَمِشْكَاةٍفِيهَامِصْبَاحٌالْمِصْبَاحُفِيزُجَاجَةٍالزُّجَاجَةُكَأَنَّهَاكَوْكَبٌدُرِّيٌّيُوقَدُمِنشَجَرَةٍمُّبَارَكَةٍزَيْتُونِةٍلَّاشَرْقِيَّةٍوَلَاغَرْبِيَّةٍيَكَادُزَيْتُهَايُضِيءُوَلَوْلَمْتَمْسَسْهُنَارٌنُّورٌعَلَىنُورٍيَهْدِياللَّهُلِنُورِهِمَنيَشَاءوَيَضْرِبُاللَّهُالْأَمْثَالَلِلنَّاسِوَاللَّهُبِكُلِّشَيْءٍعَلِيمٌ۝فِيبُيُوتٍأَذِنَاللَّهُأَنتُرْفَعَوَيُذْكَرَفِيهَااسْمُهُيُسَبِّحُلَهُفِيهَابِالْغُدُوِّوَالْآصَالِ۝رِجَالٌلَّاتُلْهِيهِمْتِجَارَةٌوَلَابَيْعٌعَنذِكْرِاللَّهِوَإِقَامِالصَّلَاةِوَإِيتَاءالزَّكَاةِيَخَافُونَيَوْمًاتَتَقَلَّبُفِيهِالْقُلُوبُوَالْأَبْصَارُ۝

 

 

 

অর্থাৎ ‘আল্লাহ্ আকাশমন্ডল ও যমীনের নুর, তাঁর নুর-এর দৃষ্টন্ত হচ্ছে এরূপ, যেমন একটি তাকের উপর প্রদীপ রাখা হয়েছে, প্রদীপ রয়েছে একটি ফানুসের মধ্যে। ফানুসের অবস্থা হচ্ছে মোতির মতো ঝকমক করা তারকা। আর সেই প্রদীপ যাইতুনের এমন এক বরকতপূর্ণ গাছের তেল দ্বারা উজ্জল করা হয়, তা পূর্বের ও নয়, পশ্চিমের ও নয়। যে তেল আপনা আপনিই উথলে পড়ে, আগুন যদি না ও লাগে। (এইভাবে) আলোর উপর আলো (বৃদ্ধি পাওয়ার সব উপাদান একত্রিত)। আল্লাহ্ তাঁর নুরের দিকে যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করেন। তিনি লোকদেরকে উদাহরণ দিয়ে কথা বুঝিয়ে থাকেন। তিনি সর্ব বিষয়ে ভালোভাবে ওয়াকিফহাল। (তাঁর নুরের দিকে হেদায়েতপ্রাপ্ত লোক) সে সব ঘরে পাওয়া যায় যেগুলোকে উচ্চ-উন্নত করার এবং যার মধ্যে আল্লাহকে স্মরণ করার তিনি অনুমতি দিয়েছেন। তাতে এ সব লোক সকাল-সন্ধ্যা তাঁর তসবীহ্ করে, যাদের ব্যবসা ও কেনা-বেচা আল্লাহর স্মরণ, সালাত কায়েম ও যাকাত আদায় করা থেকে গাফিল করে দেয়না, তারা সেই দিনকে ভয় করতে থাকে যেদিন দিল উল্টে যাওয়ার এবং চক্ষুদ্বয় পাথর হয়ে যাওয়ার অবস্থা দেখা দিবে। (সূরা আন্ নুরঃ ২৪৩৫-৩৭)।’

 

 

 

এই মাসের প্রতিটি মুহূর্তের মধ্যে এতো বেশী বরকত লুকায়িত আছে যে, এ মাসে করা নফল কাজগুলো ফরজ কাজের মর্যাদা পায়, আর ফরজ কাজগুলো সত্তর গুণ অধিক মর্যাদা পায় (বায়হাকীঃ সালমান ফারসী রাদ্বিআল্লাহু ‘আনহু)। ‘রমাদ্বানের মোবারক মাস এলে আকাশের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়, সৎ পথে চলা সকলের জন্য সহজ এবং উম্মুক্ত হয়ে যায়, শয়তানকে শিকলে আবদ্ধ করা হয়। অন্যায় ও অসৎ তৎপরতা বিস্তারের সুযোগ অপেক্ষাকৃত কমতে থাকে’ (বুখারী, মুসলিমঃ আবু হোরায়রা রাদ্বিআল্লাহু ‘আনহু)। ‘অতঃএব যে ব্যক্তি রমাদ্বানের সম্পূর্ণ রোযা রাখবে, তার সকল গুনাহ্ মাফ করে দেয়া হবে। ‘লাইলাতুল ক্কদর’-এ যে ব্যক্তিগণ ক্কিয়াম করে রাত কাটিয়ে দিবে, তাদেরকেও ক্ষমা করে দেয়া হবে শুধুমাত্র এই শর্তে যে, আল্লাহ্ তা‘আলার সকল বাণী আর ওয়াদাকে তারা সত্য মনে করবে, বান্দাহ্ হিসেবে নিজের সকল দায়িত্ব বিশ্বস্ততার সাথে পালন করবে এবং সর্বদা সতর্কতার সাথে আত্মসমালোচনার কথাও মনে রাখবে’ (মুসলিম: আবু হোরায়রা রাদ্বিআল্লাহু ‘আনহু)।

 

আপনার অংশ

এ মাস নিঃসন্দেহে অত্যন্ত আত্মমর্যাদা ও বরকতের মাস। গতানুগতিকতার স্বাভাবিক প্রবাহে যারা এ মাসটিকে পেয়েছে, এর মর্যাদা ও বরকত তাদের জন্য নয়। বৃষ্টি নামলে বিভিন্ন নদী, পুকুর, ডোবা, নিজ নিজ প্রশস্ততা ও গভীরতা অনুযায়ী বৃষ্টির পানি ধারণ করে। ভূখন্ডের বিভিন্ন অংশ নিজের ঊর্বরতা অনুসারে ফসল উৎপাদন করে, অথচ বৃষ্টির পানি ভূখন্ডের সকল অংশে সমানভাবে বর্ষিত হয়। একটি বড় প্রশস্ত পুকুর যে পরিমান পানি ধারণ করতে পারবে, একটি ছোট কলসীতে সে পরিমান পানি ধারণ করানো সম্ভব নয়। এমনিভাবে যদি বিস্তীর্ণ মরুভূমি বা অনুর্বর জমিতে বৃষ্টির পানি পড়ে, তা তো শুধু প্রবাহিত হয়েই চলে যায়, ভূমি তা থেকে উপকৃত হতে পারেনা। কিন্তু ঊর্বর জমিতে বৃষ্টির পানি পড়লেই ফসল জীবন্ত হয়ে উঠে।

 

 

 

ঠিক একই অবস্থা মানুষেরও। রমাদ্বানুল মোবারকের ঐ অফুরন্ত সম্পদ থেকে আপনি কি কিছু পেতে চান? ঊর্বর ভূমির মতো আপনার মনটাকে নরম করুন, নিজের অন্তরে ঈমানের বীজ বপন করুন, নিজের যোগ্যতা ও ধারণ ক্ষমতা থাকলে বীজ অঙ্কুরিত হবে, সম্পূর্ণ বৃক্ষ হবে, আর বৃক্ষ সৎ কাজের পত্ররাজী, ফুল ও ফলে সুশোভিত হয়ে উঠবে। অতঃপর আপনারা সাফল্যের ফসল কেটে ঘরে উঠাবেন। কৃষকের মত আপনি শ্রম দেবেন, কাজ করবেন, প্রতিদানে জান্নাতের পুরষ্কারসমূহের ফসল আপনার জন্য প্রস্তুত হতে থাকবে। যত বেশী শ্রম দেবেন, তত বেশী ফসল পাবেন। পক্ষান্তরে যদি আপনাদের মন পাথরের মতো শক্ত হয় এবং আপনারা অসতর্ক কৃষকের মতো শুয়ে-বসে দিন কাটান, তাহলে রোযা, তারাওয়ী, ক্কিয়াম ও তিলাওয়াতের বিনিময়ে পাওয়া রহমত ও বরকতের সমস্ত পানি বয়ে চলে যাবে অথচ আপনার তহবিলে কিছুই আসবেনা।

 

 

 

প্রকৃত অর্থে আল্লাহর দেয়া সুযোগ ছাড়া সত্যিই কিছু পাওয়া যায়না, আর যারা চেষ্টা-সাধনা এবং পরিশ্রম করে, এই ‘আল্লাহর দেয়া সুযোগ’ শুধু তাদেরই হস্তগত হয়। দেখুন, এ ব্যাপারে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি বলেন? ‘আপনি তাঁর দিকে এক হাত অগ্রসর হলে আল্লাহ্ আপনার দিকে দু’হাত অগ্রসর হবেন। আপনি তাঁর দিকে হেঁটে অগ্রসর হলে আল্লাহ্ আপনার দিকে দৌড়ে অগ্রসর হবেন’ (মুসলিম: আবু জর্দ রাদ্বিআল্লাহু ‘আনহু)। কিন্তু পিছন দিকে ফিরে, অসচেতন বা বেপরওয়াভাবে আপনি যদি দাঁড়িয়ে থাকেন, তাহলে বলুন, কিভাবে আপনাকে আল্লাহ্ সুযোগ সৃষ্টি করে দিবেন?

পুরো রমাদ্বান মাস অতিক্রান্ত হয়ে যাবে, আর আপনার তহবিল শূন্যই থেকে যাবে, এমন দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি কেউ সৃষ্টি করবেননা। কিছু করার জন্য ও নিজের ভাগের রহমত লুটে নেয়ার জন্য কোমর কষে নিন এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এই সতর্কবাণীটিকে ভালোভাবে স্মরণ রাখুন; ‘অনেক রোযাদার এমন আছে, যারা নিজেদের রোযা থেকে ক্ষুৎ-পিপাসার কষ্ট ছাড়া আর কিছুই পায়না, অনেকে রাতের নামাজ আদায় করে থাকে, কিন্তু তাদের এ নামাজ রাত্রি জাগরণ ছাড়া আর কিছুই দিতে পারেনা’ (দারামীঃ আবু হোরায়রা রাদ্বিআল্লাহু ‘আনহু)।

 

 

 

নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাদ্বানের আগমনের পূর্বে নিজের সাথীদেরকে উদ্দেশ্য করে এই মাসের মহত্ব ও বরকত সম্পর্কে আলোচনা করতেন এবং এই মাসের বরকতের ভান্ডার থেকে নিজেদের হিসসা (অংশ) পুরোপুরি সংগ্রহ করার জন্য ব্যাপক পরিশ্রম ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার তাগিদ করতেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে আজকে আমিও একই বিষয়বস্তুর উপর আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। অর্থাৎ, রমাদ্বান মাসের মহত্ব ও বরকতের গূঢ় রহস্য কি? এ মাস থেকে পরিপূর্ণ কল্যাণ লাভের জন্য কি পরিমাণ সতর্কতা ও প্রস্তুতি প্রয়োজন, কোন্ কাজগুলোর প্রতি অগ্রাধিকার দিতে হবে, লক্ষ্যপানে পৌঁছানোর জন্য কোন্ পথে চলতে হবে এবং ভ্রান্ত পথ কোনটা তা চিহ্নিত করতে হবে।

 

 

visit link to read the full article

 

http://www.nirmanmag...ition (নির্মাণ)

Link to comment
Share on other sites

Create an account or sign in to comment

You need to be a member in order to leave a comment

Create an account

Sign up for a new account in our community. It's easy!

Register a new account

Sign in

Already have an account? Sign in here.

Sign In Now
×
×
  • Create New...