Jump to content
IslamicTeachings.org

আমাদের প্রিয় অতিথিঃ আসুন এই অতিথিকে আন্তরিক স্বাগতম জানাই


MUSLIM WOMAN

Recommended Posts

:assalam:

 

 

আমাদের প্রিয় অতিথিঃ আসুন এই অতিথিকে আন্তরিক স্বাগতম জানাই

 

 

প্রবন্ধটি পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন না

 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

 

ওয়েব সম্পাদনাঃ মোঃ মাহমুদ -ই- গাফফার

 

 

 

আপনি যখন জানবেন আপনার খুবই পরিচিত এবং আপন একজন আপনার বাসায় আসছেন আর কিছুদিন আপনার সাথে থাকবেন আপনি কি করবেন? আপনি তার জন্য কত কিছুরই না ব্যবস্থা করবেন – তার থাকার ঘরের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, তার পছন্দের সুস্বাদু খাবারের ব্যবস্থা ইত্যাদি। অতিথির জন্য এই ধরনের পূর্বপ্রস্তুতির ব্যপারটি মানুষের একটি আন্তরিক স্বভাব বলা যেতে পারে।

 

তবে আমি এখানে এমন এক অতিথির কথা বলছি যার আসার ফলে আমাদের অনেকের জীবনেই আমূল পরিবর্তন আসে। অথবা বলা যেতে পারে এই অতিথিকে আলিঙ্গনের ফলে তা আমাদের জীবনে এমন এক সুবাস ছড়িয়ে দেয় যা আমাদের সাথে সবসময় রয়ে যায়। তবে এসব সম্ভব তখনই যখন আমরা আমাদের অতিথিকে তার যথাযথ মর্যাদা দিয়ে স্বাগতম জানাব।

 

 

আপনি কি ভাবছেন? আসলে আমি একটি পবিত্র মাসের ব্যপারে কথা বলব এই প্রবন্ধে। এখন হয়ত আপনি কিছুটা ধারণা করতে পারছেন আমি এতক্ষণ কি নিয়ে কথা বলছি।

 

 

হ্যাঁ; আমি কথা বলছি আরবী মাসের নবম মাস – রমজান মাস নিয়ে। রমজানের রোযা ইসলামের চতুর্থ স্তম্ভ এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। ২৯ অথবা ৩০ দিনের একটি মাস যা আমাদের জীবনে অতিথি হয়ে আসে; আর আমাদের অনেকের এই সাধারণ জীবনের মধ্যে ঘটিয়ে দেয় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন। মূল পরিবর্তনের মধ্যে কিছু বলা যেতে পারে, যেমন:

 

- আমাদের করে তুলে আল্লাহ্‌মুখী,

- ইসলামের ব্যপারে আমরা হয়ে উঠি আরও আন্তরিক,

- আর আমাদের প্রিয় রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম-এর সুন্নাহ অনুসরণে আমরা হয়ে উঠি আরও বেশী আগ্রহী।

 

রমজান বহু ফজিলতের/উপকারী একটা মাস। এ মাসে প্রতিনিয়ত আল্লাহ সুবহানাতালার রহমত ও বরকত বর্ষিত হয়। আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে –

 

“রমজান মাসের প্রথম রজনির যখন আগমন ঘটে তখন শয়তান ও অসৎ জিনগুলোকে বন্দি করা হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়, এ মাসে আর তা খোলা হয় না। জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, এ মাসে তা আর বন্ধ করা হয় না। প্রত্যেক রাতে একজন ঘোষণাকারী এ বলে ঘোষণা দিতে থাকে যে, হে সৎকর্মের অনুসন্ধানকারী তুমি অগ্রসর হও! হে অসৎ কাজের অনুসন্ধানকারী তুমি থেমে যাও! এ মাসের প্রতি রাতে আল্লাহ তাআলা জাহান্নাম থেকে বহু মানুষকে মুক্তি দিয়ে থাকেন”।

 

(তিরমিদি)

 

রমজানের প্রস্তুতিঃ

রমজান মাসের প্রস্তুতির ব্যপারে আমি যা বলব তা হচ্ছে আমরা এই মাসে প্রস্তুতি নেই; তবে তা শুধুমাত্র চানাবুট, পেয়াজু, হালিম, জিলাপী ইত্যাদি খাবার-দাবার এর মধ্যে সীমাবদ্ধ। আমার মতামত হচ্ছে পবিত্র এই মাসে শুধু এভাবে নিজের পেট ভর্তি নিয়ে ভাবতে মানা নেই, তাই বলে ইবাদতকে ভুলে গেলে চলবেনা। কারণ এই মাসে প্রত্যেকটি ভাল কাজের প্রতিদান আল্লাহ অনেক বেশি বাড়িয়ে দেন। আর তাই ভাল কাজের প্রতিযোগিতা করাটাই হওয়া উচিত আমাদের এই মাসের মূল উদ্দেশ্য। এই অতিথিকে যদি আপনি তার প্রকৃত মর্যাদা দিতে চান তাহলে আপনার উচিত হবে কিছু ভাল কাজের প্রস্তুতি নিয়ে ফেলা, যেমনঃ

 

ফ্যমিলির সবাই মিলে একটা ডিসকাশন করে ভাল কাজের তালিকা করা যেতে পারে

বেশি বেশি নফল ইবাদত-এর অভ্যাস গড়ে তোলা

রমজান মাসের জন্য দরকারি বাজার সেরে ফেলা (খেজুর অবশ্যই কিনতে ভুলবেননা)

ধীরে ধীরে নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রণ করা

গীবত, কারও ব্যপারে মিথ্যা কথা, কারও পিছে কথা লাগানো এসব থেকে নিজেকে দূরে রাখা

শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিশেষ করে চোখ, কান, মুখ এসবের যথাযথ ব্যবহার করা (মানে এগুলো দিয়ে খারাপ কাজ না করা)

বাসায় অন্যদের বিভিন্ন কাজে সাহায্য করার চেষ্টা করা

দান-খয়রাত এর হাত প্রসারিত করে দেওয়া

 

রমজানের মাস থেকে কি শিক্ষা নিতে পারি আমরা?

আপনার বাসায় কোন নতুন অতিথি আসলে তার থেকে আপনি কিন্তু অনেক ভাল কিছু শেখার চেষ্টা করেন। আমরাদের এই শেখার যে ইচ্ছা তা কিন্তু আমরা রমজান মাসের ক্ষেত্রেও কাজে লাগাতে পারি। কারণ এই পবিত্র মাস কিন্তু আমাদের জন্য নিয়ে আসে শিক্ষার এমন এক ঝুড়ি যাতে হাত দিলে সবার জন্যই কিছু না কিছু শিক্ষা নেওয়ার মত রয়ে যাবে। এখন ব্যপারটা হচ্ছে আমরা কে কতটুকু নিতে পারছি সেই ঝুড়ি থেকে। স্সকলারদের মতে রমজানের কিছু শিক্ষা এখানে উল্লেখ করলাম -

 

আল্লাহকে ভয় করতে শিখায় – আমরা রমজানের সময় হালাল জিনিস থেকে নিজেকে বিরত রাখি যা পরে আমাদের হারাম জিনিস থেকেও বেঁচে থাকতে শিখায়

আমাদের ধৈর্য গুন বাড়াতে সাহায্য করে – আমাদের ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত না খেয়ে থাকতে হয় এবং তার উপর অনেকের স্কুলে যাওয়া লাগে, অফিসে কাজ করা লাগে, বাসায় রান্না করা লাগে

আমরা এই মাসে ২৪ ঘণ্টা আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকি যেটা ফেরেশতাদের একটা গুন। যা আমাদের এর পরেও ইবাদেতের জন্য উৎসাহ যোগায়।

আমরা শয়তান থেকে এবং গুনাহ থেকে কিভাবে দূরে থাকতে পারব তা বুঝতে পারি

 

রমজানের মাসের প্রতিদানঃ

রমজান মাস সুন্দরভাবে পালন করার মাধ্যমে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা আমাদের কি পুরস্কার দিবেন তার বিশাল ভাণ্ডার থেকে? সাহল বিন সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

 

“জান্নাতের এক প্রবেশদ্বার রয়েছে যার নাম ‘রাইয়্যান’। কেয়ামতের দিন ঐ দ্বার দিয়ে রোযাদারগণ প্রবেশ করবে। তারা ছাড়া তাদের সাথে আর কেউই ঐ দ্বার দিয়ে প্রবেশ করবে না। বলা হবে: ‘কোথায় রোযাদারগণ?’ সুতরাং তারা ঐ দরজা দিয়ে (জান্নাতে) প্রবেশ করবে। অতঃপর যখন তাদের সর্বশেষ ব্যক্তি প্রবেশ করবে, তখন সে দ্বার রুদ্ধ করা হবে। ফলে সে দ্বার দিয়ে আর কেউই প্রবেশ করতে পারবে না”।

 

[বুখারী ও মুসলিম]

 

আসুন আমরা এই অতিথিকে সুন্দরভাবে স্বাগত জানাই। আর নিজেদের উদ্দেশ্যকে বিশুদ্ধ করে নেই এবং দুয়া করি, এই এক মাসের ইবাদতের এবং ধৈর্যের অনুশীলনের মাধ্যমে যেন পরের ১১ মাস আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার প্রদত্ত নিয়মকানুন গুলো সঠিকভাবে পালন করতে পারি।

Link to comment
Share on other sites

Create an account or sign in to comment

You need to be a member in order to leave a comment

Create an account

Sign up for a new account in our community. It's easy!

Register a new account

Sign in

Already have an account? Sign in here.

Sign In Now
×
×
  • Create New...