MUSLIM WOMAN Posted June 18, 2012 Report Share Posted June 18, 2012 Asalamu'alaikum সালাম রোহিঙ্গারা সবাই অপরাধী ? খুব দু:খের সাথে লক্ষ্য করছি কিছু পত্রিকায় , অনলাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নেতিবাচকভাবে খবর পরিবেশিত হচ্ছে । খবরের মূল বক্তব্য হলো - রোহিঙ্গারা অপরাধপ্রবণ , তারা চুরি , ছিনতাই , মাদকের নেশা ও মাদক পাচারসহ সব ধরণের অন্যায় কাজের সাথে জড়িত । পাসপোর্ট জালিয়াতি করে সৌদি আরব ও অন্যান্য দেশে গিয়েও তারা সবাই বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে আর দোষ হচ্ছে নিরীহ গোবেচারা বাংলাদেশীদের । এসব খবর পড়লে যে কেউ ভাববে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের সব অপকর্মের পিছনে কেবল রোহিঙ্গারা দায়ী , পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ স্বভাবের মানুষ হলো মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানরা । সত্যি ভাবতে অবাক লাগে , রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যারা কলম ধরেছেন তাদের মধ্যে বলতে গেলে প্রায় সবাই মুসলমান , অন্তত নাম দেখে তাই তো মনে হয় । মিয়ানমারে সংখ্যালঘু মুসলমানদের উপর বছরের পর বছর নির্মম নির্যাতন চলছে , তাদেরকে সেদেশের নাগরিক হিসাবে মেনে নেয়া হচ্ছে না , এক বৌদ্ধ তরুণীর লাশ রোহিঙ্গাদের এলাকায় পাওয়ায় সব রোহিঙ্গাদের টার্গেট করে তাদের উপর বৌদ্ধদের হামলার কোন প্রতিবাদ না করে উল্টো সমালোচনা করা হচ্ছে কেন তারা পালিয়ে বাংলাদেশে আসছে ? যেখানে কিছু বিদেশী অমুসলিম সাংবাদিক প্রতিবেদন পাঠাচ্ছেন যে মিয়ানমার সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে মুসলমানদের ঘরবাড়িতে বৌদ্ধরা আগুন দিচ্ছে , তাদেরকে মেরে ফেলছে , নারীদের সম্ভ্রম নষ্ট করছে , সেখানে এসব অন্যায়ের কথা বিশ্বের মানুষদের সামনে তুলে না ধরে আমরা মুসলমানরা কী করছি ? আমরা আমাদের নির্যাতিত মুসলমান ভাই - বোনদের দোষের কথা সবাইকে জানাচ্ছি , তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লেগে গিয়েছি । অপপ্রচার বলছি এজন্য যে নিশ্চয়ই রোহিঙ্গাদের মধ্যে কেউ কোন না কোন অপরাধে জড়িত । কিন্ত্ত তাই বলে কিছু রোহিঙ্গাদের অপরাধমূলক কাজের জন্য মুসলমান হিসাবে আমাদের উপর তাদের অধিকার নষ্ট হয়ে যায় নি ও আমরা নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারি না । আগুন আর গুলি থেকে বাঁচার জন্য প্রতিবেশী মুসলমানরা আশ্রয়ের জন্য আমাদের কাছে আসছেন আর আমরাও তাদের বন্দুকের ভয় দেখিয়ে আবার সাগরের বুকে ভাসিয়ে দিচ্ছি , হায় , এই হলো আমাদের ঈমান । গণতন্ত্রের মানসকন্যা হিসাবে যার প্রশংসায় বিশ্ববাসী মুখে ফেনা তুলে ফেলে , সেই অং সান সুকি নিজ দেশের মুসলমানদের পাশে না দাড়িয়ে চলে গেলেন ইউরোপে নোবেল শান্তি পুরষ্কার আনতে , হায় রে । যদি কোন মুসলিমপ্রধান দেশে এভাবে বৌদ্ধ নিধন হতো , তাহলে কি তিনি এভাবে মহাখুশীতে ইউরোপ সফর করতেন ? আমি নিশ্চিত , যদি তিনি সফরে বেরও হতেন অবশ্যই তিনি বিশ্বের শক্তিশালী রাস্ট্রপ্রধানসহ জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবাধিকার সংগঠনগুলিকে আহবান করতেন বৌদ্ধদের উপর নির্যাতন বন্ধে সে দেশের সরকারের উপর চাপ দিতে । গণমাধ্যমে তিনি আবেগময়ী বক্তৃতা দিতেন শান্তিপ্রিয় বৌদ্ধদের উপর অত্যচার বন্ধ করার জন্য । এখন যখন গণমাধ্যমের দৃষ্টি তার উপর , তিনি মিয়ানমারে ‘ অহিংস ’ বৌদ্ধদের হাতে মুসলিম নিধন নিয়ে নিশ্চুপ । বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের সাথে মানবিক আচরণ করছে ? পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপুমণি এক সংবাদ সম্মেলনে দাবী করলেন , বিজিবি সদস্যরা রোহিঙ্গাদের সাথে মানবিক আচরন করছে । তিনি জানালেন , রোহিঙ্গাদের খাবার , পানি , ঔষধ সরবরাহ করা ছাড়াও তাদের বোটে জ্বালানীও দিয়ে দেয়া হচ্ছে । হয়তো তার দাবী সত্য । তবে এখন পর্যন্ত এমন কোন মানবিক আচরণের প্রমাণ যেমন অনলাইনে কোন স্টিল ছবি বা ভিডিও আমি দেখতে পাই নি । অনলাইনে গেলে এখন বাংলাদেশ বিরোধী মন্তব্য যেসব পাওয়া যায় , তার সারমর্ম হলো : বাংলাদেশীরা ৭১ সালে অমুসলিমদের সহায়তায় একটি মুসলিম দেশকে ভেঙ্গেছিল আর আজ তারা প্রতিবেশী মুসলমানদের আশ্রয় না দিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে । সাগরে ভাসতে থাকা রোহিঙ্গাদের কান্না , ছোট্ট শিশু আর কিশোরীর অসহায় মুখ , বাচ্চাকে কোলে নিয়ে রোহিঙ্গা মায়ের বিপন্ন চেহারা - এসব ছবি অনলাইনে দেখা যায় । কিন্ত্ত এর বিপরীতে বাংলাদেশ সরকার সত্যি যে রোহিঙ্গাদের কোন সাহায্য করছে , এমন কোন ইতিবাচক প্রচার অনলাইনে নেই । এর কারণ কী ? বাংলাদেশের নেতিবাচক ভাবমূর্তি : মুসলিম বিশ্বে বাংলাদেশের নেতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে উঠছে , এটা নিশ্চয়ই আমাদের জন্য ভাল নয় । মুসলিম উম্মাহ থেকে আমরা যেন বিচ্ছিন্ন না হয়ে পড়ি , সেজন্য এখনই আমাদের সাবধান হওয়া দরকার । এমপি রনিকে ধন্যবাদ : আজ সকালে বাংলাদেশ প্রতিদিনে রোহিঙ্গাদের নিয়ে সরকার দলীয় এমপি জনাব রনির লেখা পড়ে অবাক হলাম । কি সুন্দর গঠণমুলক লেখা লিখেছেন তিনি । যারা এই লেখা পড়েন নি , তারা পড়ে নিন। http://www.bd-pratid...pe_id=1&index=4 সকল মুমিন যেন এক দেহ : মদীনার আনসাররা এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত - জানি , আমাদের দেশ গরীব , আমরা গরীব - কিন্ত্ত আমাদের মনে রাখতে হবে মক্কা থেকে হিজরত করে যে সব মুসলমান মদীনায় গিয়েছিলেন তাদের আশ্রয় দানকারী আনসাররা সবাই বড়লোক ছিলেন না । তারা তাদের যা সম্পদ ছিল , তা হাসিমুখে স্বেচ্ছায় ভাগ করে নিয়েছিলেন সর্বস্ব হারিয়ে অসহায় হয়ে মদীনায় আশ্রয়ের জন্য আসা মুহাজিরদের সাথে । আল্লাহ এই উভয় দলের প্রশংসা করে বলেছেন , আল্লাহ তাদের প্রতি সন্ত্তুষ্ট এ তিনি তাদের জন্য প্রস্ত্তত করেছেন জান্নাত , যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত , যেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে , এটা মহাসাফল্য ( সুরা তওবা ; ৯ : ১০০ ) । রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলে আমরা রিজিকের ভয় করছি অথচ রিজিকের মালিক আল্লাহ । আজ আমরা বাচ্চার জন্মদিনে , গায়ে হলুদে বা বিয়ে বাড়িতে যে অপচয় করি , তার একটি অংশ এই অসহায় রোহিঙ্গাদের দান করলে তাদের আর সাগরে ভেসে বেড়াতে হবে না । তাছাড়া , ইন্টারনেট এখন অনেক শক্তিশালী হাতিয়ার । জাতিসংঘ বা অন্য কোন সংস্থার সাহায্যের বসে না থাকে সরকারিভাবে ও ব্যক্তিগতভাবে আমরা কি পারি না বিশ্বব্যাপী রোহিঙ্গাদের সাহায্যের ব্যপারে জনমত গড়ে তুলতে ? আল্লাহ তওফীক দিন । জাতিগতভাবে মুসলমানদের নির্মূল করে দেয়া হচ্ছে : মিয়ানমারে জাতিগতভাবে মুসলমানদের নির্মূল করে দেয়া হচ্ছে ,সাগরে ভাসতে ভাসতে তারা আসছে এদেশে আশ্রয়ের জন্য আর আমরাও তাদের তাড়িয়ে দিচ্ছি ।অথচ আমরা দাবী করি আমরা মুসলমান । আল্লাহর রাসূল হজরত মুহাম্মদ সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী : প্রীতি ও সহানুভূতিতে সকল মুমিন যেন এক দেহ, যার এক অঙ্গে ব্যথা হলে গোটা দেহ জ্বর ও অনিদ্রায় ভুগতে থাকে। সহীহ মুসলিম (২৫৮৬) সহায়ক সূত্র : ইন্টারনেট Link to comment Share on other sites More sharing options...
Recommended Posts
Create an account or sign in to comment
You need to be a member in order to leave a comment
Create an account
Sign up for a new account in our community. It's easy!
Register a new accountSign in
Already have an account? Sign in here.
Sign In Now