MUSLIM WOMAN Posted April 27, 2012 Report Share Posted April 27, 2012 সূর্যোদয়ের দেশে ইসলাম জহির উদ্দিন বাবর সূর্যোদয়ের দেশ জাপান বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ। সমুদ্রবেষ্টিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি জাপান পৃথিবীর সর্বপূর্বে অবস্থিত। শিল্পে, সমরে, শক্তিতে সবদিক থেকেই জাপান বেশ উন্নত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দুঃসহ স্মৃতি ভুলে জাপানিরা এখন বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। জাপানে এক সময় ইসলাম ও মুসলমানের অস্তিত্ব তেমন খুঁজে না পেলেও বর্তমানে বাড়ছে মুসলমানের সংখ্যা। জাপান সরকারের হিসাব মতে, জাপানে ৬ লাখ মুসলমান রয়েছে। জাপানে ইসলামের ইতিহাস খুব বেশি পুরনো নয়। ইসলামী ইতিহাসের প্রথম ও মধ্যযুগে এখানে কোনো মুসলমানের আগমন কিংবা কোনো দাওয়াতি তৎপরতার কথা জানা যায়নি। সম্ভবত উসমানী খেলাফতের সময় সুলতান আবদুল হামিদ সর্বপ্রথম ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে নৌপথে তার জাহাজ আল-তগরুলে (অষ ঞড়মৎঁষ) এক সৌজন্যমূলক মিশন জাপানে পাঠিয়েছিলেন। ওই প্রতিনিধি দলই সর্বপ্রথম জাপানে ইসলামের আলো ছড়ায়। তবে ট্র্যাজেডি হলো, এ প্রতিনিধি দল যখন তুরস্কে ফিরে যাচ্ছিল, তখন জাপানেরই সমুদ্রে প্রচণ্ড ঝড়ের আঘাতে জাহাজটি ডুবে যায়। ছয়শ' নয়জন যাত্রীর মধ্যে মাত্র ৬৯ জন জীবিত ছিলেন। অবশিষ্ট সবাই শহীদ হন। তাদের এই ত্যাগ আল্লাহর দরবারে কবুল হয়। জাপানের লোকদের ওপর এ দুর্ঘটনার গভীর প্রভাব পড়ে। চবি্বশ বছর বয়সী উচ্চশিক্ষিত এক যুবক তুরজিরু ইয়ামাডায় (ঞড়ৎধলরৎড় ণধসধফধ) দুর্ঘটনায় এত বেশি প্রভাবিত হন যে, তিনি দুর্ঘটনাকবলিত শহীদদের পরিবারের লোকদের জন্য সারাদেশে চাঁদা সংগ্রহের অভিযান চালান। ৫৪০ জন শহীদের পরিবারের জন্য বিরাট একটি অঙ্ক সংগ্রহ করে তিনি জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে সে অর্থ সহকারে তুরস্কে যান। এ সময় সুলতান আবদুল হামিদ তুরজিরুকে ডেকে নিয়ে দু'বছর তুরস্কে অবস্থান করে এখানের সেনা অফিসারদের জাপানি ভাষা শেখানোর প্রস্তাব দেন। এ প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে তিনি তুর্কি অফিসারদের জাপানি ভাষা শেখানোর পাশাপাশি নিজেও তুর্কি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন। ইসলাম সম্পর্কেও জ্ঞানার্জন শুরু করেন। কিছুদিন পরে তিনি মুসলমান হয়ে নিজের নামের সঙ্গে 'সিঙ্গিতুস' (ংযরহমঃংঁ) শব্দ যোগ করেন। জাপানি ভাষায় এর অর্থ 'চাঁদ'। এটাও জানা যায় যে, তিনি তার ইসলামী নাম রেখেছিলেন 'আবদুল খলিল'। তার মাধ্যমে জাপানে ইসলামের বেশ প্রচার ঘটে। জাপানে প্রাচীনকাল থেকেই এককভাবে কোনো ধর্মের প্রাধান্য নেই। প্রধান তিনটি ধর্মের ইতিহাস ও বাস্তবতা খুঁজে পাওয়া যায়। এক. সিনতোইজম। বর্তমানে রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসেবে স্বীকৃত। জাপানে সম্রাট পদ্ধতি চালু হলে রাজপরিবারের সঙ্গে মিশে এটি জাতীয় ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। দুই. ধর্মীয় দিক থেকে দ্বিতীয় বৌদ্ধধর্ম। ভারত থেকে আগত এই ধর্মের প্রতি জাপানিদের মধ্যে এক সময় ব্যাপক আলোড়ন ছিল। বর্তমানে অনুসারী তেমন না থাকলেও তার কিছু নিয়মনীতিকে জাপানিরা এখনও সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়। যেমন_ পশুপাখি হত্যা করা তো দূরের কথা, কেউ যদি কোনো একটি ছোট পাখি ধরারও চেষ্টা করে তাহলে জাপানি আইনে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। তিন. খ্রিস্টান ধর্ম। ১৫৪৩ খ্রিস্টাব্দে প্রথম জাপানে খ্রিস্টান ধর্মের প্রচলন ঘটে। ১৫৪৯ সালে রোমান ক্যাথলিকরা এখানে আসেন। তারা দ্রুত প্রভাব বিস্তার করে জাপানিদের মাঝে এবং এ সময়ে জাপানের মোট জনসংখ্যার ৪% লোক খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করে। বর্তমানে এ ধরনের খ্রিস্টানের সংখ্যা হবে ১০-১২ লাখের মতো। তবে জাপানে এখনও ইসলামের আশানুরূপ বিস্তার ঘটেনি। জাপানের স্থানীয়দের মধ্যে ইসলামের কাঙ্ক্ষিত বিকাশ ঘটেনি। বর্তমানে বিয়ে সূত্রে অনেক জাপানি ইসলামের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে। বিশেষ করে মেয়েদের মধ্যে ইসলাম গ্রহণের প্রবণতা বেশি। বেশ কিছু মসজিদও গড়ে উঠেছে জাপানে। তবে দাওয়াতি কাজ চলছে। এর ফলে হয়তো জাপানেও একদিন ইসলামের বৃক্ষটি সজীব হয়ে উঠবে। [email protected] http://www.samakal.com.bd/details.php?news=72&action=main&option=single&news_id=254800&pub_no=1036 Link to comment Share on other sites More sharing options...
Recommended Posts
Create an account or sign in to comment
You need to be a member in order to leave a comment
Create an account
Sign up for a new account in our community. It's easy!
Register a new accountSign in
Already have an account? Sign in here.
Sign In Now