MUSLIM WOMAN Posted March 17, 2012 Report Share Posted March 17, 2012 চীনের একটি প্রাচীন মসজিদ চীন দেশে জুমার নামাজ ---কাজী শফিকুল আযম ষ্টাডি ট্যুরে চীনের রাজধানী বেজিং এ যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলাম সম্প্রতি । স্থানীয় আয়োজক সংস্থা রেনমিন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৈনিক কার্যতালিকায় দেখলাম যে শুক্রবারের কর্মসূচীতে দুপুরে প্রার্থনার জন্য মসজিদে যাওয়া অর্ন্তভুক্ত আছে। চীনে যেয়ে মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে পারবো জানতে পেরে মন অনেকটা ভাল হয়ে যায়। প্রথম অর্ধের ক্লাস শেষে দুপুর ১২.৩০ টার দিকে আমরা ১৫ জন বাংলাদেশী বাসে করে নামাজের জন্য রওনা হলাম । স্থানীয় গাইড এন্ডির কাছে জানতে পারলাম যে, বেজিং শহরের ডংজিমেন জেলার ডংজিমেন ওয়াই স্টীটে একটি মসজিদ আছে । অন্য কোন মসজিদের ঠিকানা তার জানা নেই। ডংজিমেন মেট্রো ষ্টেশনের কাছে চায়না টোবাকো বিল্ডিং এর পিছনে একটি গলিতে এই মসজিদটির অবস্থান। মসজিদ কমপাউন্ডটি পুরোনা ধাচের একতলা কাঠের ঘর দিয়ে ঘেরা।মাঝখানে উঠোন আছে। সামনের দিকে মূল মসজিদ বা নামাজের ঘর, অন্য তিনদিকে থাকার ঘর ও ওজু গোসল, টয়লেটের সাধারণ ব্যবস্থা ।পাশে একটি ছোট অফিস ঘর।বাইরে থেকে ঠিক মসজিদ হিসেবে বুঝা যায় না কারণ প্রচলিত মসজিদের ধাচে এর গড়ন নয়। পুরোনো ধাচের কাঠের ঢেউ খেলানো একতলা মসজিদের মূল কক্ষ ও পাশের একটি ঘরে নামাজ পড়ানো হয়ে থাকে। মসজিদের মূল ঘরে ৬ লাইনে ৯০ জন এবং পাশের কক্ষে ৬০ জনের মত মুসল্লি একত্রে নামাজ আদায় করতে পারে ।জুমার নামাজে দেখলাম যে ,নামাজের দুটো কক্ষই মুসল্লিতে ভরা। আমরা মসজিদের গেটে উপস্থিত হলে মসজিদের একজন খাদেম আমাদেরকে স্বাগত জানিয়ে ওজুর যায়গা দেখিয়ে দিল। ওজু ও টয়লেটের খুই সাধারণ ব্যবস্থা। মেয়েদের নামাজের আলাদা কোন ব্যবস্থা দেখলাম না। প্রায় ২/৩ ডিগ্রি তাপমাত্রায় মসজিদ ঘরে হিটিং এর কোন ব্যবস্থা না থাকায় ঘরের ভিতর বেশ ঠান্ডা। বুঝা যায় যে মসজিদটির আর্থিক অবস্থা খুব ভাল না। ইমাম প্রথমে চীনা ভাষায় এবং পরে আরবী ভাষায় খুতবা পাঠ করলেন। জুমার দুই রাকাত নামাজে প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহাসহ সুরা তাকাছুর এবং দ্বিতীয় রাকাতে সুরা ফাতিহাসহ সুরা এখলাস পাঠ করেন। নামাজে সব বয়সী মুসল্লী উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেল।নামাজ শেষে মসজিদের গেটে বিভিন্ন হালাল খাদ্য সামগ্রি বিক্রি হয়ে থাকে। সুযোগমত মসজিদের কিছু ছবি তুলতে ভুল করিনি যার কপি এখানে ছাপা হলো। চীনা ভাষা না জানার কারণে মসজিদের কোন ইতিহাস জানাতে পারি নি। হোটেল রুমে এসে তাই এই মসজিদ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করে মসজিদের ঠিকানা পেলাম কিন্তু বিস্তারিত কোন তথ্য বা ছবি নেই- লেখা হয়েছে যে, কোন তথ্য পেলে যেন আমরা জানাই। ইতিহাস ঘেটে জানলাম যে, বেজিং এ ইসলাম প্রচার শুরু হয়েছিল ১০ম শতকের শুরুর দিকে। এখানে নিউজাই মসজিদ প্রথম প্রতিষ্টিত হয় ৯৯৬ সালে যা বর্তমানে বেজিং এর সবচেয়ে বড় মসজিদ হিসাবে গণ্য যার বর্তমান আয়তন ৬০০০ বর্গ মিটার এবং এখানে এক সাথে প্রায় ১০০০ মুসল্লি একত্রে নামাজ আদায় করতে পারে। ইউয়ান ডাইনেষ্টিতে প্রতিষ্ঠিত হয় ডংশি মসজিদ ও আর্লিঝুয়াং মসজিদ। ডংশি মসজিদ বেজিং এর দ্বিতীয় বৃহত্তম মসজিদ এবং এই মসজিদেই বেজিং ইসলামিক এসোসিয়েশনের সদর দপ্তর অবস্থিত। পরবর্তি মিং ডাইনেষ্টিতে হুয়াসি মসজিদসহ আরো ৪টি মসজিদ তৈরী হয় । কুইং ডাইনেষ্টিকে ইসলামের সম্প্রসারণ কাল বলা হয়ে থাকে। এই সময়ে বেজিং এলাকায় নানডুয়া মসজিদসহ প্রায় ৩০ টি মসজিদ নির্মিত হয়। বর্তমানে বেজিং এর শহর ও উপশহর এলাকায় ৭২টির মত মসজিদ আছে- যার মধ্যে আলোচ্য মসজিদ একটি। বেজিং যেয়ে জুমার নামাজ পড়তে পারা ভ্যাগ্যের ব্যাপার। [ দৈনিক যুগান্তরে ৬ মে ২০১১ তারিখে প্রকাশিত ] http://jugantor.us/e...06/news0744.htm বইয়ের নাম : চলার পথে দেখা না দেখা লেখক : কাজী শফিকুল আযম [email protected] প্রাপ্তিস্থান : খোশরোজ কিতাব মহল , ১৫ বাংলাবাজার , পুরানো ঢাকা ও এস এস মার্ট , ধানমন্ডি , ( ল্যাব এইডের বিপরীতে ) মূল্য : ১২০ টাকা মাত্র Link to comment Share on other sites More sharing options...
Recommended Posts
Create an account or sign in to comment
You need to be a member in order to leave a comment
Create an account
Sign up for a new account in our community. It's easy!
Register a new accountSign in
Already have an account? Sign in here.
Sign In Now