Jump to content
IslamicTeachings.org

মায়ের দাম


MUSLIM WOMAN

Recommended Posts

Asalamu'alaikum

 

 

 

 

মায়ের দাম

 

 

বাজারে জিনিষপত্রের দাম যেভাবে বাড়ে বা কমে , এই সমাজ -সংসারে মায়েদের দামও তেমনি কখনো কমে , কখনো বা খুব বেড়ে যায় ।

 

দাম যখন কমে :

 

একজন ছেলে যখন বিয়ে করে , তখন বলা যেতে পারে কিছুদিন পর্যন্ত মায়ের দাম একই থাকে বা সামান্য কমে । তারপর যখন বউ শাশুড়ির ঝগড়া শুরু হয় , মায়ের দাম কমতে কমতে একেবারেই শূন্যের বা বিয়োগের খাতায় নেমে আসে ।

 

সামান্য অজুহাতে বিশ্রী ভাষায় মায়ের সাথে ঝগড়া করতে অনেক ছেলেরই কোন অসুবিধা হয় না , বিবেকে আটকায় না। মায়ের বিরুদ্ধে ছেলের অভিযোগগুলি শুনলে কখনো হাসি পায় , কখনো স্তম্ভিত হতে হয় । মায়ের গুরুতর অপরাধগুলি হলো - মা কেন বৌমার অনুমতি ছাড়া কাজের বুয়াকে মিষ্টি খেতে দিল , কোন সাহসে মায়ের বুয়া ভাবীকে চা আগে না দিয়ে বাসায় বেড়াতে আসা বড় আপার বাচ্চার দুধ গরম করলো , তার শ্বশুরবাড়ি থেকে ড্রাইভার এসেছিল কিন্ত্ত তাকে ঠিকমত নাস্তা দেয়া হয় নি ইত্যাদি ইত্যাদি ।

 

যার সামর্থ্য আছে , সে মায়ের ও মায়ের পছন্দে রাখা কাজের বুয়ার এরকম নানা গুরুতর অপরাধে বাড়ি ছেড়ে চলে যায় । মায়ের কান্না তার মনকে স্পর্শ করে না ।

 

মায়ের দাম যখন বাড়ে :

 

সেই একই ছেলের কাছে মায়ের দাম কিছুটা বাড়ে যখন বউ কিছুদিন পর সন্তানসম্ভবা হয় । মাঝেমাঝেই বউয়ের অসুস্থ হওয়া ও নিজের বাসায় কাজের লোক না থাকার সমস্যায় ছেলেটি তখন হিমসিম খায় । যে ছেলে মায়ের সংসারে এতদিন অভ্যস্ত ছিল সকালে ঘুম থেকে উঠে খাবার টেবিলে নাস্তা দেখে , তাকে এখন সকালে খালি পেটে এমন কি এক কাপ চা না খেয়ে অফিসে যেতে হয় । প্রথমবারের মত সংসারের ঝামেলা কী জিনিষ বা মায়ের কাছে কতটা আরামে এতদিন ছিল , তা সে কিছুটা বুঝতে পারে ।

 

 

কিছুদিন বাইরের খাবার খেয়ে ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে তাকে তখন খোঁজখবর নেয়ার অজুহাতে আবার আসতে হয় অবহেলায় ছেড়ে চলে যাওয়া মায়ের কাছে । তারপর সেই খারাপ মা জঘন্য পরিবেশের বাসাতেই মাঝেমাঝেই এসে থাকতেও শুরু করে ছেলেটি , না একা নয় - বউসহ । এরকম নির্লজ্জ আচরণ স্রষ্টার সেরা সৃষ্টি মানুষ কত অনায়াসেই না করছে । আসতাগফিরুল্লাহ ।

 

 

মায়ের দাম উঠা নামা করে :

 

মায়ের দাম আরো বাড়ে যখন নতুন অতিথি আসে সংসারে আর যদি বউয়ের মা অন্য জেলায় থাকায় বা কোন সমস্যার জন্য মেয়ের কাছে এসে বেশীদিন থাকতে না পারেন । বউয়ের মা কতদিন তাদের কাছে এসে বাচ্চা সামলাতে পারবেন , তার উপর ছেলের কাছে নিজের মায়ের দাম উঠা নামা করে ।

 

 

মায়ের দাম যখন আকাশচুম্বী :

 

 

শিশুর মা যদি কর্মজীবি হন ও ছুটি ফুরিয়ে যাওয়ায় অফিসে যোগদানের সময় ঘনিয়ে আসে , তখন ছেলের কাছে মায়ের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে যায় । তখন যেভাবে হোক মাকে নিজের কাছে নিয়ে আসা চাই ই চাই । রাগ করে , জেদ ধরে , অনুরোধ করে হোক - অল্প কয়েকদিনের কথা বলে বাচ্চা কিছুটা বড় বা ভাল কোন কাজের বুয়া না পাওয়া পর্যন্ত মাকে নিজের বাসায় নিয়ে আসার সর্বাত্মক চেষ্টা চালায় ছেলে । মানুষ যে দরকারে কতটা স্বার্থপর ও নির্লজ্জ হতে পারে , তা এসব গুণধর ছেলেদের দেখলে কিছুটা আন্দাজ করা যায় ।

 

আল্লাহ আমাদের হেদায়েত করুন ।

 

মায়ের মর্যাদা নিয়ে ইসলাম কী বলে ?

 

আর আল্লাহ সুবহানু ওয়া তাআলা বলেন , আমি মানুষকে তার মাতা পিতার প্রতি সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি । তার মা তাকে গর্ভে ধারণ করে কষ্টের সাথে ও প্রসব করে কষ্টের সাথে ( সুরা আহকাফ ; ৪৬ : ১৫ ) ।

 

হজরত মুহাম্মদ সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যার মানে , সাবধান , মা বাবাকে অসন্ত্তষ্ট করবে না । বেহেশতের সুবাস হাজার বছরের দূরত্ব থেকে পাওয়া যাবে , কিন্ত্ত যে মা বাবার অবাধ্য ও যারা রক্তের সম্পর্ক ছিন্ন করে , তারা এর সুবাস পাবে না ।

 

এক লোক একবার রাসূল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এসে বললো , আমি আমার মাকে পিঠে করে ইয়ামেন থেকে মক্কায় বয়ে এনেছি যাতে মা হজ্জ করতে পারেন । এরপর তাওয়াফ ও সায়ী করার সময়ে , আরাফাত, মুজদালিফা ও মীনাতেও তাকে পিঠে বহন করেছি । আমার উপর তার যা অধিকার আছে ও মায়ের প্রতি আমার যা কর্তব্য , তা কি আমি পুরোটা পালন করি নি অর্থাৎ মায়ের ঋণ শোধ করেছি কি ?

 

রাসূল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : না , একটি ধূলিকণার সমানও শোধ হয় নি ।

রাসূল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যার মানে , যে মা বাবাকে অসন্ত্তষ্ট করলো , সে যেন আল্লাহকেই অসন্ত্তষ্ট করলো । যে মা বাবাকে রাগালো , সে যেন আল্লাহকেই রাগালো । আরেকটি হাদীসে আছে , যে মা বাবাকে কষ্ট দিল , সে আমাকে কষ্ট দিল এবং যে আমাকে কষ্ট দিল , সে আল্লাহকে কষ্ট দিল । যে আল্লাহকে কষ্ট দেয় সে অভিশপ্ত ।

 

 

 

*** নব- দম্পতিদের প্রতি অনুরোধ :

 

 

যৌথ সংসারে থাকতে না চাইলে দয়া করে মা-বাবা / শ্বশুর শাশুড়ির সাথে ঝগড়া করবেন না । তাদের ভালভাবে বুঝিয়ে কাছাকাছি কোন বাসায় আলাদা থাকুন , নিয়মিত তাদের সাথে যোগাযোগ রাখুন , আল্লাহ তওফীক দিন ।

Link to comment
Share on other sites

Create an account or sign in to comment

You need to be a member in order to leave a comment

Create an account

Sign up for a new account in our community. It's easy!

Register a new account

Sign in

Already have an account? Sign in here.

Sign In Now
×
×
  • Create New...