MUSLIM WOMAN Posted February 20, 2011 Report Share Posted February 20, 2011 Asalamu'alaikum হজরত মুহাম্মদ صلى الله عليه وسلم স্ত্রীদের তালাক দিতে কি সাহাবীদের আদেশ দিতেন ? ( পশ্চিমা গণমাধ্যম ২৪/৩৬৫ অর্থাৎ সারাবছর জুড়ে সবসময়ই ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচারে লিপ্ত । এসব অপপ্রচারে শুধু যে অমুসলমানরাই ইসলাম ও হজরত صلى الله عليه وسلم এর সম্পর্কে ভুল ধারণা রাখে তাই না , দু:খের বিষয় হলো অনেক মুসলমানও ইসলামের নানা বিষয় নিয়ে লজ্জিত থাকে । এর একটি হলো ইসলামে কেন পুরুষদের বহু বিবাহ স্বীকৃত বা কেন হজরত صلى الله عليه وسلم এর একাধিক স্ত্রী ছিল ? এসব ভুল ধারণা দূর করতে ফতোয়া ও অন্যান্য প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নীচের লেখাটি লিখলাম । কোন ভুল চোখে পড়লে জানাবেন ) । প্রশ্ন : কেন হজরত মুহাম্মদ صلى الله عليه وسلم এর ১১ জন স্ত্রী ছিল ? আমার বন্ধু বলে রাসূল صلى الله عليه وسلم ছিলেন নারীলোভী ও সাহাবীদের তিনি বলতেন স্ত্রীদের তালাক দিতে যাতে তিনি নিজে তাদেরকে বিয়ে করতে পারেন যেমন যায়েদকে বলেছিলেন । এটা কি সত্য ? উত্তর : সব প্রশংসা আল্লাহর যিনি জগতসমূহের রব । আল্লাহর শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক আমাদের নবী মুহাম্মদ صلى الله عليه وسلم এবং তাঁর পরিবার ও সাহাবীদের উপর । প্রিয় ভাই , আপনার বন্ধু যা বলেছে তা আর কিছুই না বরং পুরোটাই মিথ্যা ও জঘন্য অপবাদ । খুব সম্ভবত সে রাসূল صلى الله عليه وسلم এর সাথে যায়নাব বিনতে জাহাশের বিয়ে নিয়ে কথা বলেছে । প্রকৃতপক্ষে সন্তান দত্তক নেয়ার যে বহুল প্রচলিত রীতি সমাজে ছিল , তার বৈধতা বাতিল হয় এই বিয়ের মাধ্যমে । পালক সন্তানকে নিজের গর্ভজাত সন্তানের মত মনে করা হতো ও পালক অভিভাবকের বংশ – পরিচয়ে দত্তক সন্তান পরিচিত হতো । পবিত্র কুরআনে বলা হলো : তোমরা সন্তানকে পিতার পরিচয়ে ডাকো ( সুরা আহযাব ; আয়াত ৫ ) । যায়েদের সাথে রাসূল صلى الله عليه وسلم এর কোন রক্ত সম্পর্ক ছিল না । যায়নাব ছিলেন যায়েদ ইবনে হারিথার স্ত্রী । যায়েদ পরিচিত ছিলেন যায়েদ ইবনে মুহাম্মদ বলে কেননা রাসূল صلى الله عليه وسلم তাকে দত্তক নিয়েছিলেন । যায়েদ মাঝেমাঝেই রাসূল صلى الله عليه وسلم এর কাছে আসতো স্ত্রীর নামে অভিযোগ করতে । স্ত্রীর সাথে তার সম্পর্ক একদমই ভাল ছিল না । আল্লাহ এরমধ্যে রাসূল صلى الله عليه وسلم কে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে যায়েদ স্ত্রীকে তালাক দেবে ও যায়নাবের সাথে রাসূল صلى الله عليه وسلم এর বিয়ে হবে । তবু রাসূল صلى الله عليه وسلم যায়েদকে বোঝানোর চেষ্টা করতেন এই বলে যে : আল্লাহকে ভয় করো ও স্ত্রীকে নিজের কাছে রাখো । কিন্ত্ত যায়েদ স্ত্রীকে তালাক দেয় । এরপর যায়নাবের ইদ্দত সময় পার হওয়ার পর কুরআনের আয়াত নাজিলের প্রেক্ষিতে রাসূল صلى الله عليه وسلم এর সাথে যায়নাবের বিয়ে হয় । এ নিয়ে বিভ্রান্তি বা অপপ্রচারের কোন সুযোগ নেই । মহান আল্লাহ কুরআনে বলেন : তারপর যায়েদ যখন যায়নাবের সাথে বিয়ের সম্পর্ক ছিন্ন করলো , তখন আমি তাকে তোমার সাথে বিয়ে দিলাম যাতে বিশ্বাসীদের মনে কোন সংশয় না থাকে যে পালক ছেলের তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীদের সাথে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়াতে কোন দোষ নেই ( সুরা আহযাব : আয়াত ৩৮) । এই তালাক ও বিয়ের ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে দত্তক সন্তান গ্রহণের যে নিয়ম সমাজে চালু ছিল অর্থাৎ পালক ছেলেকে নিজের ছেলে হিসাবে পরিচয় দেয়া , তা বাতিল হয়। অনেকেই ইচ্ছা করেই অনেক বিষয় এড়িয়ে যায় যেমন , যায়নাব ছিলেন রাসূল صلى الله عليه وسلم এর আপন চাচাতো বোন । ছোট থাকতেই যাকে তিনি বড় হতে দেখেছেন , তাকে যদি রাসূল صلى الله عليه وسلم আগে থেকেই ভালবাসতেন , তাহলে যায়েদের সাথে যায়নাবের বিয়ের ঘটকালি কেন তিনি করেছিলেন ? চাইলে যায়েদের সাথে বিয়ে ও তালাকের আগেই তো তিনি যায়নাবকে বিয়ে করতে পারতেন । তাছাড়া একজন সাবেক ক্রীতদাসের তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী হিসাবে যায়নাবের জন্য উপযুক্ত স্বামী পাওয়া কঠিন হতো । এছাড়াও যে কোন বিশ্বাসী নারীর জন্য আল্লাহর রাসূল صلى الله عليه وسلم এর চেয়ে সেরা স্বামী আর কে হতে পারে ? পাশ্চাত্যের গণমাধ্যমের ইসলাম বিরোধী প্রচারের কারণে দু:খজনকভাবে অনেক মুসলমানও এই বিয়ে ও অন্য অনেক অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হন । সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া ? রাসূল صلى الله عليه وسلم যেন ধর্মপ্রচার না করেন , সেজন্য মক্কার কাফিররা তাঁর চাচার মাধ্যমে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল যে রাসূল صلى الله عليه وسلم যদি সম্পদ চান , যদি আরবের সবচেয়ে সুন্দরী নারীদেরকে চান তবে তাঁর চাহিদামত ধনসম্পদ ও সুন্দরী নারী উপহার হিসাবে দেয়া হবে ; শুধু তাই নয় , তাকে নিজেদের নেতাও বানানো হবে । রাসূল صلى الله عليه وسلم যদি অর্থ ও নারীলোভী হতেন , তবে কি তিনি এতসব লোভনীয় প্রস্তাব ফিরিয়ে দিতেন ? তিনি এসব ঘুষ প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন , চাচা , কাফিররা যদি আমার ডান হাতে সূর্য আর বাম হাতে চাঁদকেও এনে দেয় , তাহলেও আমি ইসলাম প্রচারে বিরত হবো না যতক্ষণ না বিজয় অথবা আমার মৃত্যু হয় । নারীলোভী হলে রাসূল صلى الله عليه وسلم বিধবা , তালাকপ্রাপ্তা , সন্তানসহ বয়স্কা নারীদের বিয়ে করবেন কেন যখন তাঁর সুযোগ ছিল সুন্দরী , কুমারী নারীদের বিয়ে করার ? মারিয়া ( ইনি স্ত্রী ছিলেন কি না সেটা নিয়ে বিতর্ক আছে ) ও আয়শা ছাড়া রাসূল صلى الله عليه وسلم এর অন্য সব স্ত্রী ছিলেন তালাকপ্রাপ্তা অথবা বিধবা । যে কোন সমাজেই বিধবা ও তালাকপ্রাপ্তা নারীদের পক্ষে একাকী জীবন কাটানো , সন্তান থাকলে তাকে মানুষ করা - এসব কষ্টসাধ্য কাজ । আগেকার আরব সমাজও এর ব্যতিক্রম ছিল না । রাসূল صلى الله عليه وسلم এসব বিধবা ও তালাকপ্রাপ্তা নারীদের বিয়ে করে সমাজে তাদের মর্যাদা বাড়িয়েছিলেন , অন্য অনেক বিধবা ও তালাকপ্রাপ্তা নারীদের জন্য বিয়ের মাধ্যমে নতুন করে বাঁচার ও স্বপ্ন দেখার সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন । একাকী জীবন সংগ্রামে রত নারীদের জন্য বিয়ের মাধ্যমে স্বামীর সাথে দায়িত্ব ভাগ করে নেয়ার মধ্যে লজ্জার কিছু নেই বরং এটি একটি সম্মানজনক উপায় । অর্থনৈতিক দায় – দায়িত্ব স্বামীর উপর ন্যস্ত করার মধ্য দিয়ে আল্লাহ নারীদের জীবন অনেক সহজ করে দিয়েছেন । ইসলামে তালাকপ্রাপ্তা ও বিধবাদের বিয়ের বিরুদ্ধে কিছু বলা হয় নি বরং এতে যাতে কেউ বাধা না দেয় সেটাই বরং পবিত্র কুরআনে বলা আছে । এটা খুবই অবাক হওয়ার বিষয় যে কিছু মানুষ বহু বিবাহের ব্যপারে রাসূল صلى الله عليه وسلم এর অধিকারকে স্বীকার করে না । ইসলাম কি বহু বিবাহ চালু করেছে ? অনেকের ধারণা আগে সব পুরুষ শুধু একটি বিয়েই করতো , হজরত صلى الله عليه وسلم প্রথম মানুষ যিনি বহুবিবাহ করেছেন । আসলে আগে বিয়ের কোন নির্দিষ্ট সীমা ছিল না ; সাধারণ পুরুষ থেকে শুরু করে রাজা - বাদশাহ , নবীগণ অসংখ্য বিয়ে করেছেন । এজন্য কেউ তাদের নিন্দা করে নি । এক মুসলিম চিন্তাবিদকে একবার পশ্চিমা এক ইয়াহূদী প্রশ্ন করলো : তোমরা কেমন করে এমন একজনকে শ্রদ্ধা করো যিনি নয়টা ( আসলে হবে ১১ ) বিয়ে করেছিলেন ? মুসলমান চিন্তাবিদ পাল্টা প্রশ্ন করলেন : তুমি কি তাওরাতের নবীদের সম্মান করো ? লোকটি বললো : হ্যাঁ । মুসলিম চিন্তাবিদ এরপর জানতে চাইলেন : তুমি কি হজরত দাউদকে সম্মান করো ? উত্তর আসলো : হ্যাঁ । আবার প্রশ্ন : তুমি কি হজরত সুলায়মানকে সম্মান করো ? আবারো উত্তর : হ্যাঁ । এখন মুসলিমের সহাস্য প্রশ্ন : দাউদের ছিল ১০০ স্ত্রী ; সুলায়মানের ছিল তিনশত স্ত্রী ও সাতশত উপপত্নী । তুমি এদেরকে সম্মান করছো , তাহলে হজরত صلى الله عليه وسلم এর প্রতি তোমার এত অশ্রদ্ধা কেন ? ইয়াহূদী একেবারে লা – জওয়াব হয়ে গেল । বহু বিবাহ নিয়ে ড. জাকিরের বক্তব্য : ড: জাকির নায়েক বলেন , পবিত্র কুরআনই একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেখানে বলা আছে , বিয়ে করো একজনকে .....পুরো আয়াতটি হলো বিয়ে করবে দুই , তিন অথবা চার ; আর যদি আশংকা করো সুবিচার করতে পারবে না তবে একজনকে ( সুরা নিসা ; আয়াত ৩ ) । আগে বিয়ের কোন সীমা ছিল না , শর্ত ছিল না ; ইসলাম বলে দিল সাধারণ পুরুষেরা একসাথে স্ত্রী রাখতে পারবে সর্বোচ্চ চারজন - সেটাও শর্তসাপেক্ষ - সুবিচার করতে হবে তাদের সাথে । শর্ত পূরণ করতে না পারলে বিয়ে একের বেশী করা যাবে না । ভগবান রামের পিতা রাজা দশরথের একাধিক স্ত্রী ছিল , হিন্দুদের উপাস্য ভগবান শ্রীকৃষ্ঞ ষোল হাজার বিয়ে করেছিলেন ; তাহলে মুসলমানরা কেন চার বিয়ে করতে পারবে না ? রাসূল মুহাম্মদ صلى الله عليه وسلم এর জন্য ব্যতিক্রম : চারের বেশ একসাথে স্ত্রী রাখার অধিকার শুধু ছিল রাসূল মুহাম্মদ صلى الله عليه وسلم এর জন্য ( সুরা আহযাব ; ৩৩:৫০) । এটি আল্লাহর দেয়া অধিকার । এ নিয়ে আল্লাহকে চ্যালেজ্ঞ করারা অধিকার তাঁর বান্দাদের নেই । গণমাধ্যমের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না : ইসলাম সম্পর্কে পড়াশোনা করুন , জানুন : মুসলমানদের নিজের ধর্মের পাশাপাশি অন্য ধর্ম সম্পর্কেও জানতে হবে ; যাতে এভাবে পাল্টা প্রশ্ন করে তাদের বিভিন্ন অপপ্রচারের জবাব দেয়া যায় । অথচ মুসলমানরা আজ অন্য ধর্ম সম্পর্কে তো দূরের কথা , ইসলাম ধর্মের যা যা বিষয় সম্পর্কে জানা অপরিহার্য , সেটাও তারা জানে না । গণমাধ্যমের অপপ্রচারের জন্য এই মুসলমান নামধারী অনেকেই ভাবে , যে কোন সন্ত্রাসের জন্য ইসলাম দায়ী , পৃথিবীতে সব সন্ত্রাসী মুসলমান , হজরত صلى الله عليه وسلم একের বেশী বিয়ে করে ঠিক করেন নি , আসতাগফিরুল্লাহ । আল্লাহ আমাদের হেদায়েত করুন । আমীন । তথ্যসূত্র : ১. .islamweb.net/emainpage/index.php?page=showfatwa&Option=FatwaId&Id=81505 ২.www.islamonline.net/servlet/Satellite?pagename=Islamonline-English-Ask_Scholar/FatwaE/FatwaE&cid=1119503544668 ৩. http://www.islamawareness.net/Polygamy/why.html Link to comment Share on other sites More sharing options...
Recommended Posts
Create an account or sign in to comment
You need to be a member in order to leave a comment
Create an account
Sign up for a new account in our community. It's easy!
Register a new accountSign in
Already have an account? Sign in here.
Sign In Now