MUSLIM WOMAN Posted February 12, 2011 Report Share Posted February 12, 2011 Asalamu'alaikum ‘ভালবাসার দিন’ বা ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’র কাহিনী প্রশ্ন: আমি মুসলমান । জানতে চাই আমি কি ভালবাসা উৎসব পালন করতে পারবো ? উত্তর . এই দিবস শুরু হলো কিভাবে ? চলুন আমরা প্রথমে সেটা জেনে নেই । আজ থেকে সতেরো শতাব্দী আগে “ভালবাসার দিন” ছিল রোমের মূর্তি উপাসকদের অন্যতম উৎসব । এটা ছিল তাদের ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের প্রকাশ । রোমানদের এই উৎসবের সাথে অনেক গল্প - উপকথা মিশে ছিল যা পরে খ্রিস্টানদের মধ্যে চালু হয় । এসবের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত গল্পটি হলো - রোমের প্রতিষ্ঠাতা রমিউলাস এক মাদী নেকড়ের দুধ পান করে হয় শক্তিশালী ও জ্ঞানী । রোমানরা প্রতি বছর ফ্রেরুয়ারির মাঝামাঝিতে এই ঘটনাকে স্মরণ করে উৎসব করতো । উৎসবে কুকুর ও ছাগল বলি দেয়া হতো । দু’জন শক্তিশালী তরুণ নিজেদের সারা গায়ে এই মৃত কুকুর ও ছাগলের রক্ত মাখাতো , তারপর দুধ ঢেলে সেই রক্ত পরিষ্কার করতো । এরপর শুরু হতো বিশাল কুচকাওয়াজ যার সামনে থাকতো সেই দুই তরুণ । তারা হাতে চামড়ার টুকরা নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতো ও যে তাদের সামনে আসতো , সেই চামড়া দিয়ে তাদেরকে আঘাত করতো । রোমান নারীরা বিশেষ করে যাদের বাচ্চা হতো না তারা খুশীমনে যুবকদের এই আঘাত নিজেদের শরীরে গ্রহণ করতো ; কেননা , প্রচলিত বিশ্বাস ছিল এতে তাদের সন্তান হবে । তাছাড়া বাচ্চা হতে ভবিষ্যতে যাতে কোন সমস্যা না হয় , তারও প্রতিষেধক হিসাবে অনেক নারী নিজ দেহে এই আঘাত নিতো । এছাড়া মনে করা হতো নেকড়ে থেকে নিজেদের পশুর পাল নিরাপদ থাকবে । এই সব বিশ্বাস ইসলাম বিরোধী ; কেননা , শক্তি , জ্ঞান , সন্তান , সম্পদ - এসব কিছুর দান করার ক্ষমতা শুধু আল্লাহর। সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন ও এই উৎসবের মধ্যে সম্পর্ক : সন্ত্ত ভ্যালেনটাইন সম্পর্কে বলা হয় যে ধর্মীয় বিশ্বাসের জন্য ২৯৬ খ্রীস্টাব্দে তিনি গথিক নেতা ক্লডিয়াসের অত্যাচারে রোমে ‘ শহীদ’ হন । তার স্মৃতিকে চিরস্থায়ী করতে তিনি যেখানে মারা যান সেখানে ৩৫০ খ্রীস্টাব্দে একটি গির্জা বানানো হয় । রোমানরা যখন খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণ করে তখন তারা এই উৎসবকে ‘ আধ্যাত্নিক ’ ভালবাসার বদলে ‘ শহীদের প্রতি ভালবাসা ’ হিসাবে পালন করা শুরু করে । তারা মনে করতো সন্ত্ত ভ্যালেনটাইন শান্তি ও ভালবাসার জন্য আত্মত্যাগ করেছেন । এই দিনকে প্রেমিক - প্রেমিকাদের উৎসব হিসাবেও চিহ্নিত করা হলো । এদিন বিবাহযোগ্যা নারীদের নাম কাগজে লিখে টেবিলের উপর রাখা হতো । এরপর তরুণদের ডাকা হতো নাম বাছাইয়ের জন্য । যে ছেলে যে মেয়ের নাম লেখা কাগজ তুলতো , পরের এক বছর সেই মেয়ের প্রতি সে নিবেদিত থাকতো । এভাবে একবছর মেলামেশার পর হয় সেই জুটি বিয়ে করতো , নয়তো পরের বছর আবার নতুন সাথী বাছাই করার জন্য ভালবাসার উৎসবে যোগ দিত । অনেক খ্রীস্টান ধর্মযাজক এই ঐতিহ্যের নিন্দা করেছেন , কেননা এটা তরুণ- তরুণীদের নৈতিক চরিত্র নষ্ট করে । ফলে রোমে এই প্রথা বন্ধ করা হয় । তবে পরে এটি আবারো চালু হয় যখন পশ্চিমা কিছু দেশে ‘ ভ্যালেনটাইনের বই ’ নামে ছোট ছোট কবিতার বই বিক্রি শুরু হয় । এই সব বইতে থাকতো প্রেমের কবিতা যা থেকে পছন্দমতো বেছে নিয়ে প্রেমিকা - প্রেমিকা একে অন্যকে শুভেচ্ছা হিসাবে পাঠাতো । কিভাবে প্রেমের চিঠি লিখতে হবে , এই বইগুলিতে সেসবও শেখানো হতো । আল - আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৌদ ইবরাহীম সালেহ বলেন : ইসলাম শান্তি , মানবতা ও ভালবাসার ধর্ম । আল্লাহ বলেন : মুমিনগণ একে অন্যের ভাই ভাই ; সুতরাং তোমরা ভাইদের মধ্যে শান্তি স্থাপন কর ও আল্লাহকে ভয় কর যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও ( সুরা হুজুরাত ; ৪৯ :১০ ) । ধর্মীয়ভাবে যা যা বৈধ , সেভাবে ভালবাসার প্রকাশ ঘটাতে হবে । সবচেয়ে বেশী গূরুত্ব পাবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল صلى الله عليه وسلم এর প্রতি ভালবাসা । ভালবাসা দিবসকে না বলুন : ভালবাসার দিনকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করার জন্য আজকাল বলা হচ্ছে এটা শুধু প্রেমিক – প্রেমিকাদের জন্য নয় , বরং মা – বাবা , ভাই –বোন , আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের জন্যও । কিন্ত্ত বাস্তবে আমরা কী দেখি ? এই দিবস তরুণ – তরুণীরা কিভাবে পালন করে ? যে যার প্রেমিক – প্রেমিকাকে শুভেচ্ছা কার্ড দেয় , দামী উপহার দেয় , কখনো দু’জনে মিলে নির্জনে , কখনো দল বেঁধে পার্কে , রেস্তোরায় আড্ডা , কেক কেটে একে অন্যকে খাইয়ে দেয় , কোন পার্টিতে গিয়ে নারী- পুরুষের একসাথে নাচ - গান করে , নেশা করে অর্থাৎ পশ্চিমা সংস্কৃতির খারাপ যা যা আছে , তা উদভ্রান্তের মত এদিন নকল করা হয় । একবারের জন্যও কি এই তরুণ – তরুণী ও তাদের অভিভাবকদের মনে ভাবনা আসে যে ইসলামে নারী – পুরুষের এই অবাধ মেলামেলা বৈধ নয় ? এই নির্লজ্জতা তাদের কোন করুণ পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে ? আল্লাহ বলেছেন , তোমরা প্রকাশ্যে বা গোপনে হোক , অশালীন কাজের কাছেও যেও না ( সুরা আন’আম; ৬ : ১৫১ ) । ভালবাসা দিবসে প্রেমিক – প্রেমিকা যখন প্রকাশ্যে বা নির্জনে ঘনিষ্ঠ হবে , তখন এই নির্লজ্জতাকে উৎসাহ দিতে তাদের সাথী হবে শয়তান । নির্লজ্জতার প্রতিযোগিতা : নির্লজ্জতা আজ মুসলমানদের মধ্যে ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে । আল্লাহর রাসূল صلى الله عليه وسلم বলেছেন , “ শালীনতা ঈমানের অংশ । সব ধর্মেরই কোন না কোন বৈশিষ্ট্য আছে , ইসলামের বৈশিষ্ট্য শালীনতাবোধ” । আমরা যেন এটা ভুলে না যাই ও ভালবাসা দিবসে নির্লজ্জতার প্রতিযোগিতায় মেতে না উঠি । ২৪/৩৬৫ : সত্যি যদি মা –বাবা , আত্নীয়স্বজনের জন্য কিছু করতে চান , তা করতে হবে ২৪/৭ বা ২৪/৩৬৫ অর্থাৎ সপ্তাহের সাত বা বছরের প্রতিটি দিন ; নির্দিষ্ট কোন দিন – তারিখ হিসাব করে নয় । তাছাড়া , সবচেয়ে যেটা ভয়ের ব্যপার তাহলো এই ভালবাসা বা ভ্যালেন্টাইনস ডের মুলে রয়েছে শিরক – যা ইসলামে সবচেয়ে বড় পাপ । আল্লাহ বলেন : যে কেউ আল্লাহর শরীক করলে নিশ্চয়ই আল্লাহ তার জন্য জান্নাত নিষিদ্ধ করবেন ও তার আবাস জাহান্নাম ( সুরা মায়িদাহ : ৫ : ৭২ ) । রাসূল صلى الله عليه وسلم বলেছেন : কেউ যদি আপন মায়ের সাথে ব্যভিচার করে , তাহলেও সে একদিন বেহেশতে যাবে যদি শিরকের পাপ না করে । কুফরী বিশ্বাস ও অশালীনতায় ভরা ভালবাসা দিন মুসলমানদের জন্য কোন উৎসব হতে পারে না । আল্লাহর রাসূল صلى الله عليه وسلم বলেছেন , মুসলমানদের উৎসব দুইটি - ঈদ – উল –ফিতর ও ঈদ – উল আযহা । ভালবাসার দিন পালনের নামে কোন অশালীন কাজে আমরা যেন জড়িয়ে না পড়ি , সেজন্য ইনশাআল্লাহ নিজ নিজ পরকালের স্বার্থেই সবাই সতর্ক থাকবো । যাদের ফেইসবুকে একাউন্ট আছে , তারা ভ্যালেন্টাইনস ডে’ কে না বলুন – এই দলে যোগ দিন । তথ্যসূত্র : ১ .Valentines Day a No-No for Muslims http://www.facebook.com/#!/event.php?ei ... 42&index=1 ২ . Valentine's Day From an Islamic Perspective http://www.islamonline.net/servlet/Sate ... z1DbvJb1Dl Link to comment Share on other sites More sharing options...
Recommended Posts
Create an account or sign in to comment
You need to be a member in order to leave a comment
Create an account
Sign up for a new account in our community. It's easy!
Register a new accountSign in
Already have an account? Sign in here.
Sign In Now