Jump to content
IslamicTeachings.org

MUSLIM WOMAN

Members
  • Posts

    1,173
  • Joined

  • Last visited

  • Days Won

    41

Everything posted by MUSLIM WOMAN

  1. Asalamu'alaikum Warning : Shocking Image [ নির্যাতিতা কাজের মেয়ে হাসিনা - হায় কী দূর্ভাগ্য এ বালিকার । দেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে নামের মিল থাকলেও ‘ মানুষ ‘ হিসাবে ন্যূনতম সম্মান , ভালবাসা বা কোন মানবিক আচরণ এই হাসিনার ভাগ্যে জোটে নি। শুধু তাই নয় , চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে ও ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে , এই আশ্বাসে নির্যাতনকারী গৃহকত্রীর মায়ের কাছেই দিয়ে দেয়া হলো একে । জানি না , এরপর কী ঘটেছে । ফলো – আপ খবর আমাদের দেশে খুব কমই হয় । কী জীবন এই গরীব শিশুদের । আল্লাহর রাসূল صلى الله عليه وسلم সাহাবীদের সাবধান করে বলতেন , তোমার অধীন যে আছে , তার দোষ যদি তুমি এই দুনিয়ায় মাফ না করো , তাহলে কিভাবে আশা করবে , আল্লাহ কিয়ামতের দিন তোমার দোষ মাফ করবেন ? মনে হয় , কিছু মানুষের ধারণা , তারা এত বেশী সওয়াব অর্জন করে ফেলেছেন যে বেহেশতে যাওয়া শুধু সময়ের ব্যপার মাত্র । তাই বেত দিয়ে কাজের শিশুকে ক্ষত – বিক্ষত করার সময় বা কাপড় পুড়িয়ে ফেললে শাস্তি হিসাবে ইস্ত্রি দিয়ে ছোট্ট একটি শরীর পুড়িয়ে ফেলার সময় এদের মনে একবারের জন্যও আল্লাহর শাস্তির ভয় জাগে না । আল্লাহ আমাদেরকে হেদায়েত করুন , আমীন ] কাজের লোক ছাড়া এদেশের উচ্চবিত্ত তো বটেই , মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যদেরও একটা দিন কাটানো সত্যি কঠিন । যাদের উপর আমরা এতটা নির্ভর করি , যারা বাসায় না থাকলে প্রিয়জনদের নিয়ে আরামে দিন কাটাতে পারবো না , তাদের আমরা কতটুকু ভালবাসি ? তাদের সুখের দিকে কতটুকু নজর দেই ? মানুষের সামান্য সম্মানটুকু কি তাদের আমরা দেই , না সামান্য বেতনের বিনিময়ে তাদেরকে কেনা দাস মনে করি ? আমাদের পরিচিত পরিবেশেই এমন অনেকে আছেন যাদের বাসায় কখনোই কাজের লোক থাকে না । মাঝেমাঝে খুব অবাক লাগে – বাংলাদেশের মত গরীব একটি দেশে এত অভাবী মানুষ থাকার পরেও কেন কিছু কিছু বাসায় কাজের লোক থাকে না ? রহস্যটা কী ? বাসায় কাজের লোক থাকে না কেন ? • কাজ বেশী করানো • বিশ্রাম না দেয়া , • পেট ভরে খেতে না দেয়া , • বেতন কম , সেই তুলনায় কাজ বেশী , • নৃশংস ও অমানবিক আচরণ যেমন - কাজে সামান্য ভুল হলে গরম ইস্ত্রি বা গরম খুন্তি দিয়ে গায়ে ছ্যাঁকা লাগানো , গরম পানি ঢেলে গা পুড়িয়ে দেয়া , কথায় কথায় গালিগালাজ – মারধর করা , • কাজ ছেড়ে দিতে চাইলে চুরির অপবাদ দিয়ে মারধর করা , পুলিশের ভয় দেখানো , • বাড়িতে যেতে না দেয়া – অনেক সময় বছরের পর বছর বাসায় আটকে রেখে কাজ করানো হয় । একদিনের জন্য কাজ থেকে ছুটি মেলে না বা বাড়ি থেকে কেউ আসলে দেখা করতে না দেয়া ইত্যাদি । কাজের লোক না ক্রীতদাস ? নানা কারনে একটি পরিবারের বদনাম হয়ে গেলে অনেক চেষ্টা করেও সে বাসার জন্য কাজের লোক পাওয়া যায় না । তখন তারা জঘন্য সব কৌশল গ্রহণ করে । যেমন , খুব গরীব শিশুর অভিভাবকের হাতে অগ্রিম বেতন হিসাবে একবারে দশ – বারো হাজার টাকা দেয় । এভাবে তারা শিশুটিকে অনেকটা কিনে ফেলে । এরপর যদি শিশুটি পরে কাজ করতে না চায় , তখন বলা হয় বেতনের টাকা , ঢাকায় আসার খরচ - এসব আগে ফেরত দাও । যেহেতু গরীবের সংসারে টাকা নানা দরকারে খরচ হয়ে যায় , গরীব মা –বাবা এত টাকা জোগাড় করতে পারে না , তাই বাধ্য হয়ে শিশুটিকে নানা মারধর সহ্য করে ঢাকার ছোট ছোট ফ্ল্যাট বাসায় বন্দী জীবন কাটাতে হয় । কখনো বাবা বা কোন আত্মীয় দেখা করতে আসলে নানা অজুহাতে তাদের সাথে শিশুটির দেখা করতে দেয়া হয় না , বলে দেয়া হয় আর যেন কেউ না আসে , বেতনের টাকা বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হবে । অনেক সময় নতুন বাসায় গিয়ে শিশুর অভিভাবককে ঠিকানা দেয়া হয় না । ঢাকার ঘরে ঘরে এমন অনেক ‘ ক্রীতদাস ‘ আছে , যারা পরিবার থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন । সম্প্রতি নতুন আইন হয়েছে যে , বারো বছরের কম বয়সী কাউকে ঘরে কাজের লোক হিসাবে রাখা যাবে না । তবে এসব আইন পালন করা হচ্ছে কি না , তা কে দেখবে ? তাছাড়া , বাস্তবতা হলো গরীব দেশের মা – বাবারা বাধ্য হয়েই শিশুকে কাজ করতে পাঠান । তাই আইন করে বাসায় নাবালক কাজের লোক রাখা বন্ধ করা যাবে না , তবে তদারকির কোন ব্যবস্থা করা কি যায় না ? ঘরে ঘরে কাজের লোকদের অবস্থা যাচাই করা জরুরী হয়ে পড়েছে : সরকারের পক্ষ থেকে বাসায় বাসায় গিয়ে শিশু গৃহকর্মীদের অবস্থা যাচাই করা এখন সময়ের দাবী । প্রতি ঘরে যাওয়া সম্ভব না হলে বাসার কাজের লোককে স্থানীয় কোন স্কুল , এনজিও বা থানায় তিন মাসে কমপক্ষে একবার সশরীরে হাজির করার নিয়ম করতে হবে । যে বাসায় সে আছে , সেখানে সে থাকতে চায় কি না , তাকে সেখানে মারধর করা হয় কি না , ঠিকমত খেতে দেয়া হয় কি না - এসব জানার জন্য স্কুল শিক্ষিকা বা শিশু মন্ত্রণালয়ের নিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবকদের সাহায্য নেয়া যেতে পারে । হ্যাঁ , এই নিয়ম চালু হলে আমরা যারা সুবিধাভোগী মানুষ , তাদের ঝামেলা বাড়বে । এছাড়া অনেক তথাকথিত শিক্ষিত , আধুনিক মানুষদের মুখোশও খুলে যাবে কিন্ত্ত বন্দী জীবন থেকে অনেক শিশু ক্রীতদাস হয়তো মুক্তি পাবে । ছবি : http://desher-khobor.blogspot.com/2011/ ... st_10.html
  2. Asalamu'alaikum একজন রাজমিস্ত্রী বাড়ি বানাতে খুবই দক্ষ ছিল । তাকে দিয়ে বাড়ি বানিয়ে সেগুলি চড়া দামে বিক্রি করে তার চাকরিদাতা বাড়ি নির্মাতা ব্যবসায়ী প্রচুর লাভ করতেন । তাই তিনি এই রাজমিস্ত্রীর উপর খুব সন্ত্তষ্ট ছিলেন । একদিন সেই রাজমিস্ত্রী এসে জানালো তার শরীর ভাল যাচ্ছে না , তাই সে ঠিক করেছে কাজ ছেড়ে দেবে । শুনে ব্যবসায়ী দু:খ পেলেন । অনুরোধ করলেন , তুমি কি আমাকে আরেকটি সুন্দর বাসা বানিয়ে দেবে ? প্রথমে রাজমিস্ত্রী রাজী হলো না । কিন্ত্ত অনেকদিন যার অধীনে কাজ করেছে , তার বারবার অনুরোধে বাধ্য হয়ে সে রাজী হলো । তবে অন্যবার সে যেমন যত্ন করে বাড়ি বানায় , এবার তা সে করলো না । খুবই দায়সারা কাজ করে কোনমতে বাড়ি বানানো শেষ করলো সে । আসলে সে চাচ্ছিলো নিজ পরিবারে ফিরে গিয়ে বিশ্রাম নিতে , তাই দায়িত্ব ঠিকমত পালন না করেই সে শেষ করলো বাড়িটা । মালিককে সে জানালো কাজ শেষ , তাই এখন চলে যাবে সে । মালিক তাকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বলে হাতে একটি চাবি ও কাগজ নিয়ে বের হলেন । রাজমিস্ত্রীকে হতভম্ব করে দিয়ে মালিক বললেন , এই বাড়িটি তিনি উপহার হিসাবে তাকে দিচ্ছেন । এই বলে বাড়ির মালিকানা দলিল ও ঘরে ঢোকার চাবি তার হাতে তুলে দিলেন । রাজমিস্ত্রীর আফসোসের সীমা থাকলো না । হায় হায় , কী বোকামীই না সে করেছে । যখন তার সুযোগ ছিল সুন্দর করে একটি বাড়ি বানিয়ে তার মালিক হওয়ার , তখন সে সেই কাজে চরম অবহেলা করেছে । এখন যতই দু:খ আর আফসোস করা হোক না কেন , সুযোগ আর ফিরে আসবে না । সেরা বাড়ি বানানোর সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে , এখন ফাঁকি দিয়ে বানানো জোড়াতালির এই বাসাই তার ভাগ্যে থাকলো । ইস , সে যদি আগে জানতে পারতো যে সে এই বাড়ির মালিক হবে , তাহলে কত যত্ন করেই না সে বানাতো বাড়িটা । আমাদের জীবনটাও এই রাজমিস্ত্রীর মত । আল্লাহ এই দুনিয়ায় আমাদের পাঠিয়েছেন যেন আমরা বেহেশতে আমাদের প্রাসাদ সুন্দর করে বানাতে পারি । আমরা তা না করে দায়িত্বে অবহেলা করছি । সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার আগেই আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা অনন্তকালের জন্য যেখানে থাকবো , তা কোথায় হবে , কেমন হবে ? আমরা কি দুনিয়ায় এরকম একটি বাসা পাওয়ার জন্য পাগল নই ? অথবা এমন একটি প্রাসাদের মালিক হতে যা যা করা সম্ভব তা করতে কি রাজী হবো না ? এরকম প্রাসাদসম একটি বাসার দাম কোটি কোটি টাকা । আমাদের কয়জনের সামর্থ্য আছে এত খরচ করার ? কিন্ত্ত কোটি টাকা খরচ না করেই যদি অতুলনীয় বেহেশতে এসব বাসার থেকেও লক্ষ কোটি গুণ ভাল বাসায় থাকা যায় , তাহলে কেমন হয় ? কেউ যদি এই সুযোগ নষ্ট করে , তাহলে সে কি চরম বোকামী করবে না ? আমরা এই চরম বোকামী করবো না কি সুযোগটা কাজে লাগাবো ? পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন , আমি মানুষ ও জিন্নকে সৃষ্টি করেছি আমার ইবাদতের জন্য ( সুরা যারিয়াত ; ৫১ : ৫৬ ) । আল্লাহর রাসূল صلى الله عليه وسلم বলেছেন , যে দিনে –রাতে মোট বারো রাকাত নামাজ আদায় করবে , তার জন্য বেহেশতে বাড়ি বানানো হবে । এই বারো রাকাত সালাত হলো ১ . ফজরের দুই রাকাত ফরযের আগের দুই রাকাত সুন্নত , ২. যোহরের চার রাকাত ফরযের আগে চার রাকাত ও ফরযের পরের দুই রাকাত সুন্নত ; ৩ . মাগরিবের তিন রাকাত ফরযের পরে দুই রাকাত সুন্নত , ৪. ইশার চার রাকাত ফরযের পরে দুই রাকাত সুন্নত । রোজ এই পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে প্রতিবার মাত্র কয়েক মিনিট সময় লাগে । দুনিয়ায় অল্পদিনের জন্য একটি বাড়ির মালিক হতে মানুষ কত কষ্টই না করে - ব্যাংক থেকে চড়া সুদে ধার নেয় , বন্ধু – আত্মীয়দের কাছে হাত পাতে , জমি – গয়না বন্ধক রাখে বা বিক্রি করে । এই ধার শোধ করতে বা বন্ধকী জিনিষ ফিরে পেতে দিনের পর দিন কত কষ্টই না সহ্য করতে হয় । দু:চিন্তায় অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন , দু:খ করেন কেন সুদে ধার নিলাম । অথচ সুদের পাপ থেকে মুক্ত থেকে ও এরচেয়ে অনেক কম কষ্ট করে আমরা দামী দামী রত্ন বসানো মহামূল্যবান এক বা অনেক প্রাসাদের মালিক চিরকালের জন্য হতে পারি । শিরকের মহাপাপ থেকে মুক্ত থেকে এক স্রষ্টার উদ্দেশ্যে রোজ কয়েক মিনিটের ইবাদত আমাদেরকে দোযখের আগুন থেকে বাঁচানোর পাশাপাশি বেহেশতের এমন সব সম্পদের মালিক বানাবে , যা আমাদের কল্পনাতেও আসবে না । মনে রাখবেন , , বেহেশতের এক বিন্দু পরিমাণ জায়গা এই পুরো দুনিয়ার সব সম্পদ বা মহাবিশ্বের থেকেও অনেক মূল্যবান । ভেবে দেখুন , কী করবেন আপনি ? সহায়ক সূত্র : http://www.islamcan
  3. Asalamu'alaikum যা আশংকা করা হয়েছিল , তাই ঘটছে । সাম্রাজ্যবাদীরা লিবিয়ার অশান্ত পরিবেশের সুযোগে সেখানে হামলা চালিয়েছে । এখনো পর্যন্ত শুধু আকাশ পথেই আক্রমণ চালালেও খুব তাড়াতাড়ি যে স্থলপথেও আক্রমণ শুরু হবে , তা একরকম নিশ্চিতভাবেই বলা যায় । ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরুন কথা দিয়েছে - লিবিয়া আরেকটি ইরাক হবে না । যাক্ । নিম্চিন্ত হওয়া গেল । পশ্চিমা নেতাদের কথা আমরা তো বিশ্বাস করতেই পারি । সাদ্দামের কাছে অস্ত্র থাকা নিয়ে তারা যে সত্য ভাষণ দিয়েছিল , তা তো পুরো দুনিয়া দেখেছে । এখন দেখার বিষয় , লিবিয়ার তেল সম্পদকে কব্জা করে এরপর কোন মুসলিম প্রধান দেশকে তারা তাদের লোভ ও হিংস্রতার শিকার বানায় । হে আল্লাহ , মুসলমানদের আপনি কাফিরদের অত্যাচারের পাত্রে পরিণত করবেন না , আমীন ।
  4. Asalamu'alaikum ২৯. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ্‌ বলেছেন, “আমার বান্দা যখন আমাকে নিভৃতে স্বরণ করে, আমিও তাকে নিভৃতে স্মরণ করি। আর সে যখন আমাকে কোন মজলিসের মধ্যে স্মরণ করে, আমিও তাকে এমন এক মজলিশের মধ্যে স্মরণ করি, যা তার সেই মজলিশের চেয়েও উত্তম- যাতে সে আমাকে স্মরণ করেছিল।” তিবরানী এ হাদীসটি হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন। ৩০. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- এমন কোন জাতি নেই যারা আল্লাহর যিকিরের জন্য মজলিসে বসেছে অথচ জনৈক ঘোষক আকাশ থেকে তাদেরকে এই বলে আহবান করেননি-“নিশ্চয়ই তোমাদের পাপ ক্ষমা করা হয়েছে এবং তোমাদের পাপসমূহ পূণ্য দ্বারা পরিবর্তিত করে দেয়া হয়েছে।” আসকারী এ হাদীসটি হযরত হানযালা আবসী (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন। ৩১. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান আল্লাহ বলেছেন, “হে আদম সন্তান! ফজর ও আসর নামাযের পরে কিছু সময়ের জন্য আমাকে স্মরণ কর। তা হলে উভয় নামাযের মধ্য সময়ে আমি তোমাকে সহায়তা করব।” আবূ নুয়াঈ’ম এ হাদীসটি আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
  5. Asalamu'alaikum وَلَقَدْ آتَيْنَا مُوسَى الْكِتَابَ وَقَفَّيْنَا مِن بَعْدِهِ بِالرُّسُلِ وَآتَيْنَا عِيسَى ابْنَ مَرْيَمَ الْبَيِّنَاتِ وَأَيَّدْنَاهُ بِرُوحِ الْقُدُسِ أَفَكُلَّمَا جَاءكُمْ رَسُولٌ بِمَا لاَ تَهْوَى أَنفُسُكُمُ اسْتَكْبَرْتُمْ فَفَرِيقاً كَذَّبْتُمْ وَفَرِيقاً تَقْتُلُونَ 87 অবশ্যই আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছি। এবং তার পরে পর্যায়ক্রমে রসূল পাঠিয়েছি। আমি মরিয়ম তনয় ঈসাকে সুস্পষ্ট মোজেযা দান করেছি এবং পবিত্র রূহের মাধ্যমে তাকে শক্তিদান করেছি। অতঃপর যখনই কোন রসূল এমন নির্দেশ নিয়ে তোমাদের কাছে এসেছে, যা তোমাদের মনে ভাল লাগেনি, তখনই তোমরা অহংকার করেছ। শেষ পর্যন্ত তোমরা একদলকে মিথ্যাবাদী বলেছ এবং একদলকে হত্যা করেছ। وَقَالُواْ قُلُوبُنَا غُلْفٌ بَل لَّعَنَهُمُ اللَّه بِكُفْرِهِمْ فَقَلِيلاً مَّا يُؤْمِنُونَ 88 তারা বলে, আমাদের হৃদয় অর্ধাবৃত। এবং তাদের কুফরের কারণে আল্লাহ অভিসম্পাত করেছেন। ফলে তারা অল্পই ঈমান আনে। وَلَمَّا جَاءهُمْ كِتَابٌ مِّنْ عِندِ اللّهِ مُصَدِّقٌ لِّمَا مَعَهُمْ وَكَانُواْ مِن قَبْلُ يَسْتَفْتِحُونَ عَلَى الَّذِينَ كَفَرُواْ فَلَمَّا جَاءهُم مَّا عَرَفُواْ كَفَرُواْ بِهِ فَلَعْنَةُ اللَّه عَلَى الْكَافِرِينَ 89 যখন তাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে কিতাব এসে পৌঁছাল, যা সে বিষয়ের সত্যায়ন করে, যা তাদের কাছে রয়েছে এবং তারা পূর্বে করত। অবশেষে যখন তাদের কাছে পৌঁছল যাকে তারা চিনে রেখেছিল, তখন তারা তা অস্বীকার করে বসল। অতএব, অস্বীকারকারীদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত।
  6. Asalamu'alaikum ( পর্ব ২ ) ছেলেদের তূলনায় মেয়েরা আগেই বয়:প্রাপ্ত হয় : ১. সবচেয়ে কম বয়সে মা হয়েছে পেরুর পাঁচ বছর ৭ মাস ২১ দিনের লীনা মেডিনা । ইউক্রেনের লিজা ছয় বছরে , নাইজেরিয়ার মামযি আট বছরে মা হয় । বারো বছরের আগে যারা মা হয়েছে , তাদের তালিকা অনলাইনে পাবেন । ৫- ১১ বয়সী এই মায়েরা প্রমাণ করে যে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা অনেক আগেই বয়:প্রাপ্ত হয় । ২. মেয়েরা বালেগা হয় সাধারণত ৮-১২ বছরের মধ্যে - এটা নির্ভর করে আবহাওয়া , জাতিগত বৈশিষ্ট্য ও জেনেটিকস এর উপর । তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে পাঁচ বছর বয়সের আগেই মেয়েদের মাসিক শুরু হয় । ৩. এই যুগেও বিভিন্ন দেশে যেমন ভারত উপমহাদেশ , উত্তর আফ্রিকা , আরবে নয় বছর বয়সের আগেই অনেক মেয়ের বিয়ে হয় । ৪ . চৌদ্দ বছরের মেয়ের সাথে চল্লিশ বছরের পুরুষের প্রেমকে আমেরিকানরা ‘ বিকৃত রুচি ’ বলবে কিন্ত্ত চীনারা তা বলবে না , কেননা সেখানে মেয়েদের বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স ১৪ । ৫. আমেরিকায় আগে দশ বছরের মেয়েকে বিয়ে দেয়া যেত । ১৮৮৯ সালে ক্যালিফোর্ণিয়ায় মেয়েদের বিয়ের বয়স বাড়িয়ে ১৪ করা হয় ; পরে অন্য স্টেটসগুলিতেও আইন করে বিয়ের বয়স বাড়ানো হয় । ৬. জাপানে দশ বছর বয়স থেকে ও স্পেনে ১২ বছর হলে বৈধভাবে শারীরিক ঘনিষ্ঠতা উপভোগ করা যায় । বাংলাদেশে সম্প্রতি এক কলেজ ছাত্রী ও তার প্রেমিকের হাতে কাজের মেয়ে খুন হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে । পুলিশ জানাচ্ছে , মা -বাবা ঘুমিয়ে যাওয়ার পরে কলেজ পড়ুয়া মেয়ে দরজা খুলে প্রেমিককে ঘরে ঢোকায় । তাদের ঘনিষ্ঠতার দৃশ্য কাজের মেয়ে দেখা ফেলায় তাকে খুন করা হয় । এটা সত্যি হলে কী ভয়ংকর কথা । যে মেয়ে বিয়ের জন্য পুরোপুরি তৈরী ও যার নৈতিকতা নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই , সময়মত তার বিয়ে না দিলে সে যে কোন সময় বড় পাপে জড়িয়ে পড়বে । আমাদের সমাজে ও পুরো দুনিয়ায় অনেক বড় বড় সমস্যা আছে , আসুন সেসব নিয়ে মাথা ঘামাই । খামোকা এক সুখী দম্পতির পিছনে নাই বা লাগলেন । সম্প্রতি প্রথম আলোর ব্লগে দেখলাম এই বিয়ের বিরুদ্ধে জঘন্য ভাষায় লেখা হয়েছে । সত্যি দৃ:খজনক । অনেক মুসলমান পুরুষ কোন বিধবা বা তালাকপ্রাপ্তা নারীকে বিয়ে করতে চায় না , কিন্ত্ত কমবয়সী মেয়েদেরকে বিয়ে করার জন্য তার অভিভাবকের অভাবকে কাজে লাগায় । টাকার লোভ দেখিয়ে বা টাকা ধার দিয়ে সুদসহ তা ফেরত দেয়ার জন্য তাগাদা দিয়ে অবশেষে মা -বাবাকে বাধ্য করে মেয়ের বিয়ে তার সাথে দিতে - এভাবে জোর করে বিয়ের অনুমতি ইসলামে নেই । খামোকা নিজের লোভের কারণে জোর করে গরীব ঘরের মেয়েকে বিয়ে করার সময় সুন্নত পালন করছি এটা দাবী করে ইসলাম বিরোধীদের হাতে ধর্মের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের হাতিয়ার তুলে দেবেন না । সুন্নত পালন যদি করতেই হয় , তবে আগে বিধবা ও তালাকপ্রাপ্তা নারীদের সন্তানসহ বিয়ে করুন , মা ও সেই সন্তানকে ভালবাসা দিন , মর্যাদা দিন । আপনাকে নিয়ে আপনার স্ত্রী যেন গর্ব করে বলতে পারেন : আমি দুনিয়ার সম্পদ চাই না , আমার স্বামীকে চাই ’ ।
  7. Asalamu'alaikum আমি দুনিয়ার সম্পদ চাই না , স্বামীকে চাই ( পর্ব ১ ) ‘ আমি পূর্ণিমার চাঁদকে আমার স্বামীর চেহারার সাথে তুলনা করলাম - বুঝতে পারলাম না কে বেশী সুন্দর - চাঁদ না আমার স্বামী ? ’ ‘ আমি দুনিয়ার সম্পদ চাই না , আমার স্বামীকে চাই ’ - এ সব কথা যে স্ত্রী বলেন তিনি কি সুখী না অসুখী ? যে কোন বিবেকবান মানুষ বলবেন এসব স্বামী গর্বে গর্বিতা সুখী স্ত্রীর মনের কথা । কিন্ত্ত সত্যি অদ্ভূত যে শত শত বছর ধরে এই সুখী দম্পতির বিরুদ্ধে কিছু মানুষ নোংরা ভাষায় অপপ্রচার চালিয়ে আসছে । রাসূল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিয়ে নিয়ে সবসময়ই অমুসলিমরা নোংরা ভাষায় সমালোচনা করে এসেছে । বিশেষ করে আয়েশা رضي الله عنهم এর সাথে তাঁর বিয়ে নিয়ে তাদের অশালীন বক্তব্য উল্লেখ করাও সম্ভব নয় । কিয়ামতের দিনে তারা তাদের প্রাপ্য শাস্তি নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছ থেকে পাবে । এই বিয়ে পশ্চিমাদের বর্তমান সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ নিয়ে বিচার করলে হবে না । আমাদের মনে রাখতে হবে এই বিয়ে হয়েছিল আজ থেকে প্রায় হাজার বছর আগে । তাছাড়া পশ্চিমা সভ্যতা আমাদের জন্য কোনকিছু বিচারের মানদন্ড নয় । পশ্চিমা সমাজের বর্তমান মূল্যবোধ : আমেরিকায় গত প্রসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারের সময় আমরা দেখেছি ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী সারাহ পলিনের ১৬/১৭ বছরের অবিবাহিতা মেয়ে বাচ্চা কোলে নিয়ে মার পিছু পিছু তার সব নির্বাচনী সভায় যাচ্ছে । কোন মার্কিন নাগরিক এ নিয়ে শোকে – দু:খে মাতম করেছে বলে আমার জানা নেই । কেউ সারাহ পলিনকে বা তার মেয়ের প্রেমিকের মা – বাবাকে গ্রেফতারের দাবী জানায় নি কিন্ত্ত বাংলাদেশে ১৮ বছর হওয়ার মাত্র এক মাস আগে কোন মেয়েকে তার মত নিয়েও বিয়ে দিতে চাইলে সেটা হয়ে যাবে শিশু নির্যাতন । পুলিশ এসে বিয়ের কাজী , দুই পক্ষের মা-বাবা , বর সবাইকে থানায় নিয়ে যাবে , মামলা হবে তাদের বিরুদ্ধে । আমেরিকার এক স্কুলে ১৭ জন ছাত্রী যাদের কারো বয়সই ষোল বছরের বেশী না , তারা একসাথে গর্ভবতী হয়েছে । তাদের ইচ্ছা সব কুমারী মায়েরা একসাথে থেকে নিজেদের বাচ্চা ‘ মানুষ ‘ করবে । হায় সভ্যতা । এরাই হলো আধুনিক ; আর মহান স্রষ্টা যে পবিত্র বিয়েকে স্বীকৃতি দিয়েছেন , তা এই আধুনিক পশ্চিমাদের চোখে বর্বরতা , নারী নির্যাতন । পশ্চিমা দেশগুলিতে ১৪/১৫ বছরের স্কুলের মেয়েরা একাধিক ছেলেবন্ধুর সাথে অবৈধভাবে মেলামেশা করে , বিয়ে না করে বাচ্চার মেয়ে হয় , তাতে কারো কোন অসুবিধা নেই , কেউ চোখ কপালে তুলে বলে না এতে শিশু নির্যাতন হচ্ছে । অথচ এই পশ্চিমারাই আজ থেকে হাজার বছর আগের এক সুখী দম্পতির বয়স নিয়ে অশালীন ভাষায় কুৎসিত আক্রমণ করে । পশ্চিমারা স্কুলছাত্রীদের হাতে বিনা পয়সায় তুলে দিচ্ছে জন্মনিয়ন্ত্রণের সামগ্রী , স্কুলে যৌনশিক্ষা দেয়া হয় নয় বছর বয়সীদের । আগে ১২ বছরের কমে কাউকে এ নিয়ে কিছু শেখানো হতো না কিন্ত দেখা গেল বারো বছর বয়সের আগেই অনেক মেয়ে ছেলেবন্ধু নিয়ে ঘুরছে ; যার অবধারিত ফল বিয়ে না করেই সন্তানের মা হওয়া , কখনো ক্লিনিকে গিয়ে গর্ভপাত বা সন্তান হত্যা । তাই এখন সিদ্ধান্ত পাল্টে ৯ বছরের মেয়েদের নিরাপদ যৌনজীবন অর্থাৎ কিভাবে এইডসে আক্রান্ত না হয়ে বা গর্ভবতী না হয়ে যৌনতাকে তারা উপভোগ করবে তা শেখানো হয় । আসতাগফিরুল্লাহ । আর এরাই কি না আল্লাহর রাসূলের বৈধ বিবাহিত জীবনের বিরুদ্ধে কথা বলে । আর অনেক মুসলমান নামধারীরাও এদের কথায় হয় বিভ্রান্ত । ধিক্ আমাদের । ষোল - সতেরো বছর বয়সী মেয়ের বিয়ে যদি তার ও অভিভাবকের সম্মতিতে হয় , তবে তা ইসলামিক শরীয়াহতে স্বীকৃত । কিন্ত্ত এই বিয়ে আজ মানুষের আইনে নিষিদ্ধ কিন্ত্ত এই আমরাই পশ্চিমা মিডিয়ার কল্যাণে বিয়ে বহির্ভূত তরুণ –তরুণীদের এমন কী কিশোর – কিশোরীদের প্রেমকে মেনে দিচ্ছি । ভালবাসা দিবস আজ এদেশের অবিবাহিত তরুণ – তরুণীদের অন্যতম প্রিয় একটি উৎসব । বিভিন্ন ধর্মে বিয়ে : ইয়াহুদী ধর্মে মেয়েদের বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স কত ? ১. ইয়াহুদীরা যাকে মৌখিক তাওরাত বলে ( oral torah ) , সেই হা - তালমুদ হা - বাভলীতে আছে , এটা পছন্দনীয় যে মাসিক শুরু হয়ে গেলে দেরী না করে একটি মেয়েকে বিয়ে দেয়া উচিত ( Sanhedrin 76b) । ২. ইয়াহুদীদের ধর্মগ্রন্থের অন্য জায়গায় ( ketuvot 6 a ) যে মেয়ে এখনো বালেগা হয় নি , তার সাথে কিভাবে সহবাস করতে হবে , সেই নিয়ম বলা আছে । খ্রীস্ট ধর্মে বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স কত ? একজন খ্রীস্টান যিনি অনলাইনে বাইবেলের উপর বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন (http://www.toughlove.faithweb.com ) তাকে আমি কয়েক বছর আগে ই-মেলে প্রশ্ন করেছিলাম : বাইবেলে নারীদের বিয়ের বয়স কত হবে বলে নির্দেশ দেয়া হয়েছে অর্থাৎ কমপক্ষে ১৮ বা ২০ হতে হবে , এমন কোন আয়াত আছে কি না ? তার উত্তর : বিয়ের কোন সর্বনিম্ন বয়স বাইবেলে বলে দেয়া হয় নি । বাইবেলের পুরাতন সমাচারে আছে স্রষ্টার ছেলে দাউদ বৃদ্ধ বয়সে মৃত্যুশয্যায় শুয়ে অল্পবয়সের কুমারীকে বিয়ে করেছিলেন । এটা প্রমাণ করে যে মেয়ের বয়স কম হওয়া বা স্বামী - স্ত্রীর মধ্যে বয়সের ব্যবধান বেশী হলেও সেটা ইয়াহুদী বা খ্রিস্টানদের বিয়েতে কোন বাধা নয় । খ্রিস্টানদের প্রভু যিশুর কুমারী মা মেরীর সাথে জোসেফের যখন বিয়ে হয় , তখন সেই যুগের রীতি অনুসারে মেরীর বয়স খুব বেশী হলে ১৩/১৪ ছিল ; জোসেফের বয়স ছিল ত্রিশের বেশী । এখনকার মানুষের তৈরী আইনে নাবালিকা বিয়ের অপরাধে স্ত্রীর দ্বিগুণ বয়সী স্বামী জোসেফ যাকে বাইবেলের বংশ তালিকায় যিশুর পিতা হিসাবে দেখানো হয়েছে , তার জেল ও জরিমানা এই দুই শাস্তিই প্রাপ্য । হিন্দু ধর্মে বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স কত ? ১. হিন্দু ধর্মগ্রন্থ মনু স্মৃতিতে আছে বয়:প্রাপ্তির আগেই মেয়েদের বিয়ে দেয়া উচিত ( গৌতমা ১৮ -২১ ) । ২. হিন্দু শাস্ত্রে এমন নির্দেশও আছে যে , কাপড় পড়তে শুরু করে নি , এমন শিশু কন্যাকে বিয়ে দেয়া ভাল । কেননা , পিতার বাসায় থাকার সময় যদি কোন মেয়ের মাসিক শুরু হয় , তবে মা , বাবা ও বড় ভাই নরকে যাবে । ৩. হিন্দু শাস্ত্র আরো বলে বয়:প্রাপ্তির পরেও কোন পিতা যদি মেয়ের বিয়ে না দেন , তবে মেয়ের প্রতিবারের মাসিকের সময় সেই পিতা ভ্রুণ হত্যার পাপ করলো । এমন উপদেশও দেয়া হয়েছে যে সেই মেয়ের উচিত নিজের বিয়ের ব্যবস্থা করা । ৪.মনুর আইনে বলা আছে : ৩০ বছরের যুবকের উচিত ১২ বছরের ও ২৪ বছর বয়সের যুবকের উচিত আট বছরের কুমারীকে বিয়ে করা । ৫. হিন্দু প্রধান দেশ নেপাল ও ভারতে আগে ৫/৬ বছর বয়সেই মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেয়া হতো । এখন মানুষের তৈরী আইনে দেশভেদে হিন্দু মেয়েদের বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স একেক রকম । এ বিয়ে নিয়ে আরো কিছু তথ্য : ১ . আয়েশা رضي الله عنهم এর সাথে বিয়ের ঘটনা রাসুল صلى الله عليه وسلم স্বপ্নের মাধ্যমে আগেই জানতে পেরেছিলেন । নবীদের স্বপ্ন ওহী লাভের অন্তর্ভূক্ত । তাই মুসলমানদের এটা বিশ্বাস করতে হবে যে এই বিয়ের আদেশ আল্লাহর কাছ থেকেই এসেছিল । এ নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে কোন লজ্জা থাকা উচিত নয় । তাছাড়া , এই বিয়েতে মেয়ে , মেয়ের অভিভাবকের মত ছিল ও কারো উপর কোন জোর করা হয় নি । ২ . এটি অনেকেরই জানা নেই যে আয়েশা رضي الله عنهم এর বিয়ে প্রথমে ঠিক হয়েছিল অন্য একজনের সাথে । তার নাম জুবায়ের ইবনে আল মুতাম । ইসলাম কবুল না করায় জুবায়েরের সাথে এই বিয়ে আর হয় নি । এটি একটি প্রমাণ যে তখনকার রীতি অনুসারে আয়েশা رضي الله عنهم বিয়ের উপযুক্ত ছিলেন । ৩. . আয়েশা رضي الله عنهم এর আকদ ( যাওয়াজ ) হয় ছয় বছর বয়সে ও তিনি স্বামীর ঘরে যান অর্থাৎ তাঁর বিবাহিতা জীবন শুরু হয় দীর্ঘ তিন বছর পর - নয় বছর বয়সে । এই দীর্ঘ তিন বছর রাসূল صلى الله عليه وسلم স্ত্রীকে নিজের কাছে আনেন নি কেন ? নিশ্চয়ই তিনি স্ত্রীর বয়:প্রাপ্তিতে পৌঁছানোর অপেক্ষায় ছিলেন । অর্থাৎ আয়েশা رضي الله عنهم মাসিক শুরুর পর বালেগা হয়েই সংসার জীবন শুরু করেন । ইসলামে শরীয়াতে মাসিক শুরু হলে একটি মেয়েকে বালেগা বা প্রাপ্তবয়স্কা হিসাবে গণ্য করা হয় । শরীরবিদ্যা সম্পর্কে যার সামান্য জ্ঞান আছে , সে জানে মাসিক শুরু হওয়ার মানে হলো এই মেয়ে এখন মা হতে শারীরিকভাবে সক্ষম । ৪. সে সময়ে রাসূল صلى الله عليه وسلم এর ঘরে অন্য স্ত্রী ছিল ; তাই আয়েশা رضي الله عنهم এর উপর সংসার জীবনের গূরু দায়িত্ব পালনের বোঝাও চাপানো হয় নি । ৫. রাসূল صلى الله عليه وسلم এর সাথে বিয়ের পরে তিনি গৃহবন্দী হয়ে যান বা তাঁর কাছে কেউ যেতে পারতো না , এমনটি ঘটে নি । খেলার সাথী বা বান্ধবীরা বিয়ের পরেও নিয়মিত আসতো আয়েশা رضي الله عنهم এর কাছে । রাসূল صلى الله عليه وسلم অনেক সময় আলখেল্লা দিয়ে নিজেকে আড়াল করতেন যাতে বান্ধবীদের সাথে স্ত্রীর খেলায় কোন অসুবিধা না হয় । আয়েশা رضي الله عنهم বলেন , একদিন আমি যখন পুতুল নিয়ে খেলছিলাম , তখন রাসূল صلى الله عليه وسلم আসলেন । তিনি জানতে চাইলেন , ও আয়েশা , এটা কী খেলা ? আমি বললাম : এটা সুলায়মানের ঘোড়া । শুনে তিনি হাসলেন । ৬. বিবাহিতা জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য সময় আয়েশা رضي الله عنهم কাজে লাগিয়েছেন জ্ঞান চর্চায় । তিনি সরাসরি আল্লাহর নবী صلى الله عليه وسلم এর কাছ থেকে কুরআন ও সুন্নাহর শিক্ষা নিয়েছেন ও তাঁর জীবনযাত্রা স্ত্রী হিসাবে একদম কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছেন যে সৌভাগ্য অন্য কারো হয় নি । দুই হাজারের বেশী হাদীস বর্ণনা করেছেন এমন চারজনের মধ্যে আয়েশা رضي الله عنهم অন্যতম ও একমাত্র নারী এবং রাসূল এর তিন কুরআনে হাফেজ স্ত্রীর তিনি একজন । রাসূল মারা যাওয়ার পর অনেক সাহাবী কুরআন ও হাদীসের ব্যখ্যায় আয়েশা رضي الله عنهم এর কাছ থেকে উপদেশ নিতেন । তার জীবন এটাই প্রমাণ করে যে পুরষদের থেকে মেয়েরা অনেক বেশী শিক্ষিতা হতে পারেন ও পুরুষদের মধ্যে যারা চিন্তাবিদ ও বিশেষজ্ঞ হিসাবে বিবেচিত , তাদেরকেও তিনি শেখাতে পারেন । ৭ . যারা এই বিয়ের বিরুদ্ধে কথা বলে তারা ভুলে যায় যে : আল্লাহ ওহী পাঠিয়ে রাসূল صلى الله عليه وسلم কে নির্দেশ দেন স্ত্রীদের কাছে জানতে যে তারা দুনিয়ার সম্পদ নিয়ে আলাদা হতে চান কি না । হাদীসে আছে , স্ত্রীদের মধ্যে আয়শা সবার আগে বলে উঠেন , অবশ্যই আমি আল্লাহ ও তার রাসূল এবং আখেরাত কামনা করি ।
  8. Asalamu'alaikum وَإِذْ أَخَذْنَا مِيثَاقَكُمْ لاَ تَسْفِكُونَ دِمَاءكُمْ وَلاَ تُخْرِجُونَ أَنفُسَكُم مِّن دِيَارِكُمْ ثُمَّ أَقْرَرْتُمْ وَأَنتُمْ تَشْهَدُونَ 84 যখন আমি তোমাদের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিলাম যে, তোমরা পরস্পর খুনাখুনি করবে না এবং নিজেদেরকে দেশ থেকে বহিস্কার করবে না, তখন তোমরা তা স্বীকার করেছিলে এবং তোমরা তার সাক্ষ্য দিচ্ছিলে। ثُمَّ أَنتُمْ هَـؤُلاء تَقْتُلُونَ أَنفُسَكُمْ وَتُخْرِجُونَ فَرِيقاً مِّنكُم مِّن دِيَارِهِمْ تَظَاهَرُونَ عَلَيْهِم بِالإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَإِن يَأتُوكُمْ أُسَارَى تُفَادُوهُمْ وَهُوَ مُحَرَّمٌ عَلَيْكُمْ إِخْرَاجُهُمْ أَفَتُؤْمِنُونَ بِبَعْضِ الْكِتَابِ وَتَكْفُرُونَ بِبَعْضٍ فَمَا جَزَاء مَن يَفْعَلُ ذَلِكَ مِنكُمْ إِلاَّ خِزْيٌ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ يُرَدُّونَ إِلَى أَشَدِّ الْعَذَابِ وَمَا اللّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ 85 অতঃপর তোমরাই পরস্পর খুনাখুনি করছ এবং তোমাদেরই একদলকে তাদের দেশ থেকে বহিস্কার করছ। তাদের বিরুদ্ধে পাপ ও অন্যায়ের মাধ্যমে আক্রমণ করছ। আর যদি তারাই কারও বন্দী হয়ে তোমাদের কাছে আসে, তবে বিনিময় নিয়ে তাদের মুক্ত করছ। অথচ তাদের বহিস্কার করাও তোমাদের জন্য অবৈধ। তবে কি তোমরা গ্রন্থের কিয়দংশ বিশ্বাস কর এবং কিয়দংশ অবিশ্বাস কর? যারা এরূপ করে পার্থিব জীবনে দূগর্তি ছাড়া তাদের আর কোনই পথ নেই। কিয়ামতের দিন তাদের কঠোরতম শাস্তির দিকে পৌঁছে দেয়া হবে। আল্লাহ তোমাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে বে-খবর নন। أُولَـئِكَ الَّذِينَ اشْتَرَوُاْ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا بِالآَخِرَةِ فَلاَ يُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَلاَ هُمْ يُنصَرُونَ 86 এরাই পরকালের বিনিময়ে পার্থিব জীবন ক্রয় করেছে। অতএব এদের শাস্তি লঘু হবে না এবং এরা সাহায্যও পাবে না।
  9. Asalamu'alaikum “I spent thirty years learning manners, and I spent twenty years learning knowledge.” - ‘Abdullah bin al-Mubarak
  10. Asalamu'alaikum যিকির .আল্লাহর যিকির বা স্মরণ সম্পর্কেঃ ২৭. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- বান্দা যখন বলে, “হে আমার প্রতিপালক! হে আমার প্রতিপালক!” আল্লাহ তখন বলেন, “হে আমার বান্দা! আমি উপস্থিত আছি। তুমি চাও, তুমি যা চাইবে তোমাকে তাই দেয়া হবে।” ইবনে আবিদ্‌- দুনইয়া ও বায়হাকী এ হাদীসটি হযরত আয়েশা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন। ২৮. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ বলবেন, “যে লোক কোন একদিন আমাকে স্মরণ করেছে বা কোন এক স্থানে আমাকে ভয় করেছে, তাকে দোযখের অগ্নি থেকে বের কর।” তিরমিযী এ হাদীসটি হযরত আনাস (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
  11. Asalamu'alaikum بَلَى مَن كَسَبَ سَيِّئَةً وَأَحَاطَتْ بِهِ خَطِيـئَتُهُ فَأُوْلَـئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ 81 হাঁ, যে ব্যক্তি পাপ অর্জন করেছে এবং সে পাপ তাকে পরিবেষ্টিত করে নিয়েছে, তারাই দোযখের অধিবাসী। তারা সেখানেই চিরকাল থাকবে। وَالَّذِينَ آمَنُواْ وَعَمِلُواْ الصَّالِحَاتِ أُولَـئِكَ أَصْحَابُ الْجَنَّةِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ 82 পক্ষান্তরে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তারাই জান্নাতের অধিবাসী। তারা সেখানেই চিরকাল থাকবে। وَإِذْ أَخَذْنَا مِيثَاقَ بَنِي إِسْرَائِيلَ لاَ تَعْبُدُونَ إِلاَّ اللّهَ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَاناً وَذِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَقُولُواْ لِلنَّاسِ حُسْناً وَأَقِيمُواْ الصَّلاَةَ وَآتُواْ الزَّكَاةَ ثُمَّ تَوَلَّيْتُمْ إِلاَّ قَلِيلاً مِّنكُمْ وَأَنتُم مِّعْرِضُونَ 83 যখন আমি বনী-ইসরাঈলের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিলাম যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারও উপাসনা করবে না, পিতা-মাতা, আত্নীয়-স্বজন, এতীম ও দীন-দরিদ্রদের সাথে সদ্ব্যবহার করবে, মানুষকে সৎ কথাবার্তা বলবে, নামায প্রতিষ্ঠা করবে এবং যাকাত দেবে, তখন সামান্য কয়েকজন ছাড়া তোমরা মুখ ফিরিয়ে নিলে, তোমরাই অগ্রাহ্যকারী।
  12. সালাম আলাইকুম অশান্ত আরব বিশ্ব : মার্কিন - ইয়াহুদী ষড়যন্ত্র না অভ্যূত্থান ? ষড়যন্ত্র মতের পক্ষে যুক্তি : মুসলমানদের বিরুদ্ধে ইয়াহুদী ষড়যন্ত্রের কথা বললে অনেকেই হেসে উড়িয়ে দেন । কিন্ত্ত অতীত সাক্ষী – বহু প্রমাণ আছে মুসলমানদের বিরুদ্ধে এ ধরণের ষড়যন্ত্রের । ৯/ ১১ এর দু:খজনক ঘটনার পিছনে ইয়াহুদীদের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উড়িয়ে দেয়া যায় না । মিথ্যা অজুহাতে ইরাক আক্রমণ করে এখনো সেখানে যে যুদ্ধ পশ্চিমারা চালিয়ে যাচ্ছে , তার জন্য চরমপন্থী ইয়াহুদীদের নিয়ন্ত্রিত ও সমর্থিত গণমাধ্যমও দায়ী। এ ধরণের সর্বশেষ ষড়যন্ত্র দেখা গেল অল্প কিছুদিন আগে যখন আরব বিশ্বে অশান্তির সুযোগে ইসরাইল জেরুসালেমের পবিত্র আল কুদস আল – শরীফে নিজেদের শক্তি বাড়ায় । সংবাদমাধ্যমগুলি যখন ব্যস্ত লিবিয়া ও অন্য আরব দেশের বিক্ষোভের খবর নিয়ে , তখন ইসরাইল এই সময়কে বেছে নেয় সেনাবাহিনীর তিনটি কলেজকে পূর্ব - জেরুসালেমে স্থানান্তরের জন্য । অন্য সময়ে এটি করলে বিষয়টি যত আলোচিত হতো , এই সময়ে করাতে তা গণমাধ্যমে তেমন আলোচিত হলো না । মিসরে কী ঘটছে ? ২০১১ সালের ২৪ জানুয়ারী মিসরের সেনাপ্রধান লে: জে: সামি এনার নেতৃত্বে উচ্চপদস্থ এক সামরিক প্রতিনিধি দল ওয়াশিংটনে তিনদিনের সফরে যায় । মিসরে এর একদিন পরেই প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু হয় ও সেনাপ্রধান ২৮ জানুয়ারী পর্যন্ত আর দেশে ফিরলেন না । আমরা জানি না তারা সেখানে কী ধরণের নির্দেশ পেয়েছেন তবে এটা বিশ্বাস করা কঠিন যে মিসরে কী ঘটছে না ঘটছে সে বিষয়ে সেনাপ্রধানের সাথে পেন্টাগণের কর্মকর্তারা কথা বলে নি । মিসরের ‘ অভ্যুত্থান ‘ মার্কিন ও ইসরাইলের পরিকল্পনা ? ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে ইসরাইলের সেই সময়ের আভ্যন্তরীন নিরাপত্তা মন্ত্রী এভি ডিচটার তেল- আবিবে এক বক্তৃতা দেন । সেখানে তিনি বলেন কিভাবে মিসরে ক্ষমতা হস্তান্তর চায় ইসরাইল ও আমেরিকা । তিনি তিনটি চিত্র তুলে ধরেন । ১ . মুসলিম ব্রাদারহুড সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতির সুযোগ নেবে ও নিজেদেরকে সরকারে অন্তর্ভূক্ত করার চেষ্টা চালাবে । ২. সেনাবাহিনী ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নেবে , ৩. মুবারকের বদলে ওমর সুলায়মান বা জামাল মুবারাককে ক্ষমতায় বসানো হবে । তবে এই ভবিষ্যতবাণী করা হয় যে পরিস্থিতি বেশী খারাপ হলে নির্বাচন করতে হতে পারে যাতে পছন্দের নতুন কাউকে ক্ষমতায় আনা যায় । ডিচটার আরো জানায় ইসরাইল ও আমেরিকা মিসরের আভ্যন্তরীন অবস্থাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছে ও যে কোন পরিস্থিতি যাতে মোকাবেলা করা যায় সেজন্য তাদেরকে সম্পদ – সামর্থ্যকে ব্যবহার করছে । আমরা জানি মুবারকের থেকেও ওমর সুলায়মানকে ইসরাইল বেশী কাছের মানুষ ভাবে । সুলায়মান মার্কিনীদের হয়ে তাদের ব্যক্তিগত নির্যাতনকারী হিসাবে কাজ করেছে । সিআইএর এক গোয়েন্দার মত হলো : যদি কাউকে জীবনে আর কোনদিন দেখতে না চাও , তাকে মিসরে পাঠিয়ে দাও । আমরা আজ দেখছি মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতারা রাজী হয়েছেন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কোন প্রার্থী না দিতে । আরো আশ্চর্যজনক যে তারা এখন বলছে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেতেও তারা চেষ্টা করবে না । এই দল ঘোষণা দিয়েছে তাদের রাজনৈতিক দলের নাম হবে ফ্রিডম ও জাস্টিস পার্টি । তুরস্কের জাস্টিস এন্ড ডেভেলাপমেন্ট পার্টির সাথে কেমন মিল রয়েছে দেখুন । তুরস্কের একটি দলের নামের মত করে নাম বেছে নেয়ার মধ্য দিয়ে হয়তো মুসলিম ব্রাদারহুড পশ্চিমাদের কাছে এই বার্তা পাঠাচ্ছে : আমরা ইসরাইলের সাথে শান্তিচুক্তি বজায় রাখবো বা তুরস্কের মতো ধর্মনিরপেক্ষ মুসলিম রাষ্ট্র হবো । তুরস্ক সম্পর্কে তারিক রামাদান এর মন্তব্য : তুরস্ক থেকে অনেক কিছু শেখার আছে ও তাদের উদাহরণ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের প্রেরণার উৎস । তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আজো মুসলিম নারীরা হিজাব পড়ে যেতে পারেন না যা ধর্মভীরু মেয়েদের উচ্চশিক্ষার জন্য একটি বড় বাঁধা । ইসলামের বিরুদ্ধে কামাল আতাতুর্ক নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল ; আজো তার সমর্থকরা সেই ঘৃণা ও বিদ্বেষ উত্তরাধিকার সূত্রে বহন করে চলেছে । তাই জ্যাক স্ট্র ও তার মত ইসলাম বিরোধী পশ্চিমা রাজনীতিবিদরা চায় অন্য সব আরব ও মুসলিমপ্রধান দেশগুলি তুরস্কের আদর্শ গ্রহণ করুক । সংবিধানের ফাঁদ : ২০০৭ সালের জুনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশ এক সম্মেলনে বলে : অনেকেই আজ আমাদের সাথে যোগ দিতে পারে নি । কেননা , তাদেরকে অন্যায়ভাবে জেলে বা ঘরে আটক রাখা হয়েছে । আমি সেই দিনের অপেক্ষায় আছি যেদিন বেলারুসের আলেকজান্ডার কযুলিন , মিয়ানমারের আউং সান সূ চী , কিউবার অস্কার ইলিয়াস , মিসরের আয়মান নূর আমাদের সাথে সম্মেলনে যোগ দেবেন । নূর পরে স্বাস্থ্যগত কারণে ২০০৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারীতে মুক্তি পান । নূরের এই বিশেষ মর্যাদা শুধু এজন্য নয় যে সে সংবিধান নতুন করে লেখার প্রকল্প হাতে নিয়েছে ; আরো কারণ হলো মিসরকে সে পুরোপুরি পশ্চিমা আদর্শে গড়ে তুলতে চায় । মিসরে বেশ কয়েকটি দল দাবী জানাচ্ছে সংবিধান নতুন করে লেখার ও এর ২ নং অধ্যাদেশ বাতিল করার জন্য যাতে বলা আছে : ইসরাম রাষ্ট্রধর্ম ; আরবী রাষ্ট্রভাষা ও বিচার বিভাগের মূল উৎস হলো শরীয়াহ আইন । মুবারকের পদত্যাগের পর আল - ওরাসাত দলকে প্রথম স্বীকৃতি দেয়া হলো । এই দল দাবী করে যে কোন খ্রিষ্টানকে দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বানাতে হবে । মিসরের কিছু দল সংবিধান বদলানোর দাবীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে । সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য সেনাবাহিনী কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত কমিটি এই বিষয়কে উপেক্ষা করে চলেছে । অবশ্য পাশ্চাত্যপন্থী কিছু দল নতুন সংবিধানের খসড়া এর মধ্যেই বানিয়েছে । মিসরের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান হাফিয আবু সায়দা জানান তার খসড়া তৈরী হয়ে আছে । দেশ চলছে আগের মতই ? মিসরে জরুরী অবস্থা আজো বহাল , রাজনীতিবিদরা এখনো জেলে বন্দী , সংবিধান নতুন করে লেখা হচ্ছে সেই সামরিক জান্তার আশীর্বাদ নিয়ে যারা এখনো মোবারককে নিরাপত্তা দিয়ে চলেছে । মোবারক দেশের ভিতরেই এক বিনোদন কেন্দ্রে আরাম – আয়েশেই দিন কাটাচ্ছে । এ কী ধরণের গণ – অভ্যূত্থান যেখানে পরিবর্তন বলতে শুধু হাতেগোণা কয়েকজনকে ক্ষমতা থেকে দূরে থাকতে হচ্ছে কিন্ত্ত পুরো দেশ চলছে আগের মতোই আর দেশে এখনো জরুরী অবস্থা বহাল ? পশ্চিমাদের ভন্ডামি : পশ্চিমাদের ভন্ডামি বা দ্বিমুখী আচরণের প্রমাণ তারা গত ৪০ বছর ধরে লিবিয়ায় গাদ্দাফিকে ক্ষমতায় থাকতে দিয়েছে । ব্রিটিশরা এই একনায়কের তেল চুক্তি করেছে । আর এখন এই পশ্চিমারাই গাদ্দাফির বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের অস্ত্র দিয়ে সমর্থন দেয়ার কথা বলছে । হিলারী ক্লিনটন ইরান , বাইরাইনে , মিসরে বিক্ষোভের সময় সেই সব তরুণদের প্রশংসা করেছেন যারা যোগাযোগ প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আন্দোলন জোরদারে ভূমিকা রেখেছে । অথচ সৌদি আরবের বিক্ষোভকারীদের প্রশংসা তার মুখে শোনা যায় নি । সৌদি আরবে যখন সরকার বিরোধীরা বিশেষ করে শিয়ারা বিক্ষোভ করতে চায় , তখন মার্কিনীরা তা সমর্থন করে না কেন ? কারণ সহজেই আন্দাজ করা যায় - সৌদি বাদশাহ আমেরিকার ঘনিষ্ঠ মিত্র । কখনো আমেরিকা একটি দেশের বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন জানায় ও তাদেরকে সশস্ত্র আন্দোলন করার জন্য অস্ত্র সররাহ করতে চায় , মানবিক সাহায্যের নামে সে দেশে সামরিক অভিযানকে সমর্থন দেয় , কোন দেশের আকাশকে ‘ নো ফ্লাই ‘ জোন হিসাবে ঘোষণা দিতে চায় , আবার কখনো বিক্ষোভকারীদের দাবী যুক্তিযুক্ত হলেও সে ব্যপারে তারা নীরব থাকে - আমেরিকার এই ভন্ডামি মুসলমানদের নিন্দা কুড়াচ্ছে ও তাদেরকে আরো বেশী মার্কিন বিদ্বেষী করে তুলছে । আসলে আমেরিকা এখনো বুঝে উঠতে পারছে না আরব বিশ্বে তাদের প্রভাব বজায় রাখার জন্য ঠিক কী করা দরকার । আমেরিকার যে কোন নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের পিছনে ইয়াহুদীদের প্রভাব থাকে । যিশু খ্রিস্ট ইসরাইলের এক ইয়াহুদি পরিবারে জন্ম নেন ও খ্রিস্টানদের পবিত্র বাইবেলে আছে যারা স্রষ্টার এই নির্বাচিত জাতিকে সাহায্য করবে তারা স্রষ্টার করুণা লাভ করবে । তাই অনেক খ্রিষ্টান মনে করে ইয়াহুদিদের সাহায্য করা তাদের পবিত্র কর্তব্য । এছাড়াও ইয়াহুদী লবি আমেরিকায় অত্যন্ত প্রভাবশীল । তাই যে কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় আমেরিকাকে ভাবতে হয় যেন তাতে ইসরাইলের স্বার্থের কোন ক্ষতি না হয় । মুসলিম বিশ্বের প্রতি পশ্চিমাদের নীতি নিয়ে ভাবার সময় এসেছে : পশ্চিমারা এখন মুসলিম বিশ্বের প্রতি তাদের নীতি পর্যালোচনা করার চেষ্টা চালাবে । কেননা , তারা দেখছে পুতুল সরকারকে সমর্থন দিয়ে আর লাভ হচ্ছে না ও নিজেদের দূর্বলতাও প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছে । পশ্চিমা নাগরিকদের কর্তব্য নিজ নিজ দেশের সরকার প্রধানের উপর চাপ সৃষ্টি করা যাতে তারা আর দূর্নীতিগ্রস্থ একনায়কদের সমর্থন না দেয় । যুগ যুগ ধরে একনায়কদের সমর্থন দিয়ে ও তাদেরকে ক্ষমতায় থাকতে সাহায্য করে , আবার দরকার ফুরিয়ে গেলে তাদেরকে আকাশ থেকে মাটিতে ফেলে দিয়ে নতুন কোন একনায়ককে ক্ষমতায় বসানো – এই অশুভ চক্র চালিয়ে যাওয়ার জন্য পশ্চিমারা মুসলিম বিশ্বে ঘৃণার পাত্রে পরিণত হচ্ছে । আমরা মরে যাই নি : অন্যায় – অবিচার যতদিন ধরেই চলুক না কেন , যখন আল্লাহর আদেশ আসবে , তখন অত্যাচারীর পতন ঘটবে ও তিনি অত্যাচারী শাসককে পুরো দুনিয়ার সামনে অপমানিত করবেন । পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলে দিয়েছেন , আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা বদলান না যতক্ষণ না তারা নিজ অবস্থা নিজে বদলায় ( সুরা রাদ ; আয়াত ১১ ) । মুসলমানরা নিজেদের ভাগ্য বদলাতে চেষ্টা করছে এখন ; একনায়কদের বিরুদ্ধে তারা রাস্তায় নেমেছে , ইয়ামেনের শিশুরা জানিয়ে দিয়েছে রাষ্ট্রপতি সালেহ পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা পড়াশোনা করবে না । অর্থনৈতিক শোষণ ও বিভিন্ন অবিচারের বিরুদ্ধে সাধারণ মুসলমানদের সচেতনতা ও রাস্তায় নারী – পুরুষ – শিশুদের নেমে আসা মুসলিম উম্মাহকে এই আত্মবিশ্বাস দেয় যে আমরা হয়তো অসুস্থ ; এতটাই অসুস্থ যে শরীর –মন অবশ হয়ে আছে , তবু আমরা মরে যাই নি । আমরা মরে যাবো না – সবসময়ই সংস্কার ও ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটাবো । আরব বিশ্বের মানুষদের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ আমাদের এই বিশ্বাস দেয় যে উম্মাহ সত্যিই পরিবর্তন ঘটাতে পারে । আরব বিশ্বের বর্তমান অশান্ত পরিবেশ ও বিক্ষোভ যদি মুসলিম বিরোধীদের কোন ষড়যন্ত্র হয়ে থাকে ,ইনশাআল্লাহ তা সফলকাম হবে না । আর এটি যদি ষড়যন্ত্র নাও হয় , তবুও এটা নিশ্চিত যে ইসলাম বিরোধী শক্তি এ থেকে সুযোগ নিতে চাইবে । উম্মাহর দরকার সঠিক নেতৃত্ব যারা আর সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে অন্যায়ভাবে মুসলিম দেশগুলিকে শোষণ করতে দেবে না : আল্লাহ মুসলিম উম্মাহর জন্য যা কল্যাণকর , তা নির্ধারণ করে দিন , সহজসাধ্য করে দিন , আমীন । [ সহায়ক সূত্র : Conspiracy: Not a Theory But History ; http://www.ummahpulse.com/2011/02/conspiracy-not-theory-but-history.html Why is Hillary Not Defending the Rights of Saudi Protesters? http://www.informationclearinghouse.info/article27639.htm ; Revolution in Libya: A proof for the Ummah http://www.islam21c.com/politics/2288-revolution-in-libya-a-proof-for-the-ummah?utm_source=MRDF&utm_campaign=14fa70b600-i21c_jan_newsletter_wk4_21_27_2011&utm_medium=email
  13. Asalamu'alaikum ২৬. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান ও মর্যাদাশালী আল্লাহ্‌ বলেছেন, আমার এরূপ কিছু সংখ্যক বান্দা আছে, যারা মানুষকে দেখানোর জন্য ভেড়ার চামড়া পরিধান করে। তাদের হৃদয় মুসাব্বরের কাঠের চেয়েও বেশি তিতা আর তাদের কথা মধুর চেয়েও মিষ্টি। তারা মানুষের কাছে নিজের দীন-ধর্ম নিয়ে অহঙ্কার করে। তারা কি আমার দেয়া আবকাশ দ্বারা প্রবঞ্চিত হয়েছে? না আমার সাথে সমকক্ষতার দুঃসাহস লাভ করতে চলেছে? কিন্তু আমি আমার সত্তার কসম করে বলছি, তাদের প্রতি আমি এমন বিপর্যয় আনয়ন করব যে, তাতে অত্যন্ত ধৈর্য্যশীলগণও হয়রান হয়ে পড়বে।” ইবনু আসাকির এ হাদিসটি হয়রত আয়েশা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
  14. Asalamu'alaikum أَوَلاَ يَعْلَمُونَ أَنَّ اللّهَ يَعْلَمُ مَا يُسِرُّونَ وَمَا يُعْلِنُونَ 77 তারা কি এতটুকুও জানে না যে, আল্লাহ সেসব বিষয়ও পরিজ্ঞাত যা তারা গোপন করে এবং যা প্রকাশ করে? وَمِنْهُمْ أُمِّيُّونَ لاَ يَعْلَمُونَ الْكِتَابَ إِلاَّ أَمَانِيَّ وَإِنْ هُمْ إِلاَّ يَظُنُّونَ 78 তোমাদের কিছু লোক নিরক্ষর। তারা মিথ্যা আকাঙ্খা ছাড়া আল্লাহর গ্রন্থের কিছুই জানে না। তাদের কাছে কল্পনা ছাড়া কিছুই নেই। فَوَيْلٌ لِّلَّذِينَ يَكْتُبُونَ الْكِتَابَ بِأَيْدِيهِمْ ثُمَّ يَقُولُونَ هَـذَا مِنْ عِندِ اللّهِ لِيَشْتَرُواْ بِهِ ثَمَناً قَلِيلاً فَوَيْلٌ لَّهُم مِّمَّا كَتَبَتْ أَيْدِيهِمْ وَوَيْلٌ لَّهُمْ مِّمَّا يَكْسِبُونَ 79 অতএব তাদের জন্যে আফসোস! যারা নিজ হাতে গ্রন্থ লেখে এবং বলে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ-যাতে এর বিনিময়ে সামান্য অর্থ গ্রহণ করতে পারে। অতএব তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের হাতের লেখার জন্য এবং তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের উপার্জনের জন্যে। وَقَالُواْ لَن تَمَسَّنَا النَّارُ إِلاَّ أَيَّاماً مَّعْدُودَةً قُلْ أَتَّخَذْتُمْ عِندَ اللّهِ عَهْدًا فَلَن يُخْلِفَ اللّهُ عَهْدَهُ أَمْ تَقُولُونَ عَلَى اللّهِ مَا لاَ تَعْلَمُونَ 80 তারা বলেঃ আগুন আমাদিগকে কখনও স্পর্শ করবে না; কিন্তু গণাগনতি কয়েকদিন। বলে দিনঃ তোমরা কি আল্লাহর কাছ থেকে কোন অঙ্গীকার পেয়েছ যে, আল্লাহ কখনও তার খেলাফ করবেন না-না তোমরা যা জান না, তা আল্লাহর সাথে জুড়ে দিচ্ছ।
  15. Asalamu'alaikum ২৫. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ তাঁর কোন এক কিতাবে অবতীর্ণ করেছেন এবং তাঁর কোন এক নবীর প্রতি প্রত্যাদেশ পাঠিয়েছেন, ঐ সকল লোকদেরকে বল, যারা দীন-ধর্ম ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্যে শিক্ষা গ্রহণ করে এবং আমলের উদ্দেশ্য ছাড়া জ্ঞান অর্জন করে এবং পরকালীন আমলের বিনিময়ে পৃথিবী অন্বেষণ করে, আর ভেড়ার চামড়ার লেবাস পরিধান করে, আর তাদের হ্রদয় নেকড়ের অন্তরের ন্যায় এবং তাদের ভাষা মধুর চেয়েও মিষ্টি এবং ধার্মিকের বেশে দুনিয়া অর্জনে আত্ন নিয়োগ কারী এ ভন্ড প্রবঞ্চকদের বিরুদ্ধে মহান আল্লাহ্‌ কঠোর সর্তকবানী করেছেন। আল্লাহ তাদের সামনে এমন কঠিন পরীক্ষা উপস্থিত করবেন বলে কসম করেছেন যে, তা অতি চালাক লোককেও স্তম্ভিত করে তুলবে। তাদের হৃদয় মুসাব্বর গাছের চেয়েও বেশি তিতা। আর কি আমাকেই প্রবঞ্চিত করছে, না আমার প্রতি উপহাস করছে? এতএব আমি নিজের নামে কসম করলাম, তাদের জন্য আমি এরূপ বিশৃঙ্খলা নাযিল করব, যাতে তাদের মধ্যেকার অতিশয় দৃঢ়মনা জ্ঞানী ব্যক্তিও স্তম্ভিত হয়ে পড়বে।” আবূ সাঈদ সুক্কাশ ও ইবনু ন্নাজ্জার এ হাদীসটি হযরত আবুদ্‌ দারদা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
  16. Asalamu'alaikum فَقُلْنَا اضْرِبُوهُ بِبَعْضِهَا كَذَلِكَ يُحْيِي اللّهُ الْمَوْتَى وَيُرِيكُمْ آيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ 73 অতঃপর আমি বললামঃ গরুর একটি খন্ড দ্বারা মৃতকে আঘাত কর। এভাবে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শণ সমূহ প্রদর্শন করেন-যাতে তোমরা চিন্তা কর। ثُمَّ قَسَتْ قُلُوبُكُم مِّن بَعْدِ ذَلِكَ فَهِيَ كَالْحِجَارَةِ أَوْ أَشَدُّ قَسْوَةً وَإِنَّ مِنَ الْحِجَارَةِ لَمَا يَتَفَجَّرُ مِنْهُ الأَنْهَارُ وَإِنَّ مِنْهَا لَمَا يَشَّقَّقُ فَيَخْرُجُ مِنْهُ الْمَاء وَإِنَّ مِنْهَا لَمَا يَهْبِطُ مِنْ خَشْيَةِ اللّهِ وَمَا اللّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ 74 অতঃপর এ ঘটনার পরে তোমাদের অন্তর কঠিন হয়ে গেছে। তা পাথরের মত অথবা তদপেক্ষাও কঠিন। পাথরের মধ্যে এমন ও আছে; যা থেকে ঝরণা প্রবাহিত হয়, এমনও আছে, যা বিদীর্ণ হয়, অতঃপর তা থেকে পানি নির্গত হয় এবং এমনও আছে, যা আল্লাহর ভয়ে খসেপড়তে থাকে! আল্লাহ তোমাদের কাজকর্ম সম্পর্কে বে-খবর নন। أَفَتَطْمَعُونَ أَن يُؤْمِنُواْ لَكُمْ وَقَدْ كَانَ فَرِيقٌ مِّنْهُمْ يَسْمَعُونَ كَلاَمَ اللّهِ ثُمَّ يُحَرِّفُونَهُ مِن بَعْدِ مَا عَقَلُوهُ وَهُمْ يَعْلَمُونَ 75 হে মুসলমানগণ, তোমরা কি আশা কর যে, তারা তোমাদের কথায় ঈমান আনবে? তাদের মধ্যে একদল ছিল, যারা আল্লাহর বাণী শ্রবণ করত; অতঃপর বুঝে-শুনে তা পরিবর্তন করে দিত এবং তারা তা অবগত ছিল। وَإِذَا لَقُواْ الَّذِينَ آمَنُواْ قَالُواْ آمَنَّا وَإِذَا خَلاَ بَعْضُهُمْ إِلَىَ بَعْضٍ قَالُواْ أَتُحَدِّثُونَهُم بِمَا فَتَحَ اللّهُ عَلَيْكُمْ لِيُحَآجُّوكُم بِهِ عِندَ رَبِّكُمْ أَفَلاَ تَعْقِلُونَ 76 যখন তারা মুসলমানদের সাথে মিলিত হয়, তখন বলেঃ আমরা মুসলমান হয়েছি। আর যখন পরস্পরের সাথে নিভৃতে অবস্থান করে, তখন বলে, পালনকর্তা তোমাদের জন্যে যা প্রকাশ করেছেন, তা কি তাদের কাছে বলে দিচ্ছ? তাহলে যে তারা এ নিয়ে পালকর্তার সামনে তোমাদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করবে। তোমরা কি তা উপলব্ধি কর না?
  17. Asalamu'alaikum পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে , “ আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন যথার্থ কারণ ছাড়া তোমরা তাকে হত্যা করবে না ( সুরা আনআম ; ৬ :১৫‌১ ) । কুরআনের নীতি অনুসারে যথাযথ কারণ ছাড়া কোন নিরপরাধ মানুষকে খুন করা মানে যেন পুরো মানবজাতিকে মেরে ফেলা । আল্লাহ বলেন : বনী ইসরাঈলের প্রতি এই বিধান দিলাম যে , নরহত্যা বা দুনিয়ায় ধ্বংসাত্নক কাজ করা ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন দুনিয়ার সব মানুষকেই হত্যা করলো , আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে সে যেন সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করলো ( সুরা মায়িদা ; ৫ :৩২) । আল্লাহ মানুষকে বারবার সাবধান করে বলেছেন : আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন , যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করবে না ( সুরা বনী ইসরাইল ; ১৭:৩৩ ) । তাহলে মনে প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক , কেন তবে এই কুরআনেই বলা হয়েছে : .. যেখানে তাদেরকে পাবে হত্যা করবে ? অনেকের অভিযোগ , অমুসলিমদের হত্যা করার জন্য কুরআন মুসলমানদেরকে বিনা শর্তে অনুমতি ও উৎসাহ দিয়েছে । ইসলামের বিরুদ্ধে এটি আরেকটি অপপ্রচার । এই অভিযোগ ও ভুল ধারণার উত্তর হলো , এই আয়াতগুলি পড়ার সময় এর পটভূমি বা ইতিহাস জানতে হবে । সবচেয়ে ভাল হয় যদি পটভূমি জানার পাশাপাশি এই আয়াতের আগের ও পরের কিছু আয়াতও পড়ে নিন । সুরা বাকারা : ‌২.‌১৯০ - যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তোমরাও আল্লাহর পথে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো ; কিন্ত্ত সীমা লংঘন করো না । নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালংঘনকারীদের ভালবাসেন না । ২.১৯১ - যেখানে তাদেরকে পাবে হত্যা করবে এবং যে জায়গা থেকে তারা তোমাদেরকে বের করে দিয়েছে , তোমরাও সেই জায়গা থেকে তাদেরকে বের করবে । হত্যা থেকে ফিতনা গুরুতর । মসজিদুল হারামের কাছে তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করবে না যে পর্যন্ত তারা সেখানে তোমাদের সাথে যুদ্ধ না করে । যদি তারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তবে তাদেরকে হত্যা করবে , এটাই কাফিরদের পরিণাম । ২.১৯২ - যদি তারা বিরত হয় , তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল , পরম দয়ালু । ২.১৯৩ - আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবে যতক্ষণ না ফিতনা দূর হয় ও আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠিত হয় । যদি তারা বিরত হয় তবে যালিমদের ছাড়া আর কাউকে আক্রমণ করা চলবে না । ২.১৯৪ – পবিত্র মাস পবিত্র মাসের বিনিময়ে । যার পবিত্রতা অলঙ্ঘনীয় তার অবমাননা সবার জন্য সমান । তাই যে কেউ তোমাদেরকে আক্রমণ করবে , তোমরাও তাকে একইভাবে আক্রমণ করবে ও তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং জেনে রাখো যে , আল্লাহ অবশ্যই মুত্তাকীদের সাথে থাকেন ( সুরা বাকারা ; ২:১৯০-১৯৪) । সুরা নিসা : ৪:৮৯ - তারা এটাই চায় যে তারা যেমন কুফরী করেছে তোমরাও তেমন কুফরী করো ; যাতে তোমরা তাদের সমান হয়ে যাও । তাই আল্লাহর পথে হিজরত না করা পর্যন্ত তাদের মধ্য থেকে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে না । যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে তাদেরকে যেখানে পাবে গ্রেফতার করবে ও হত্যা করবে এবং তাদের মধ্য থেকে কাউকেও বন্ধু ও সহায়করূপে গ্রহণ করবে না । ৪:৯০ - কিন্ত্ত তাদেরকে নয় যারা এমন এক সম্প্রদায়ের সাথে মিলিত হয় যাদের সাথে তোমরা অংগীকারবদ্ধ অথবা যারা তোমাদের কাছে এমন অবস্থায় আসে যখন তাদের মন তোমাদের সাথে অথবা তাদের সম্প্রদায়ের সাথে যুদ্ধ করতে সংকুচিত হয় । আল্লাহ যদি ইচ্ছা করতেন তবে তাদেরকে তোমাদের উপর ক্ষমতা দিতেন ও তারা নিশ্চয়ই তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতো । তাই তারা যদি তোমাদের সাথে যুদ্ধ না করে ও শান্তি প্রস্তাব করে , তবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা অবলম্বনের পথ রাখেন না । ৪:৯১ - তোমরা কিছু লোককে পাবে যারা তোমাদের সাথে ও তাদের সম্প্রদায়ের সাথে শান্তি চাইবে । যখনই তাদেরকে ফিতনার দিকে ডাকা হয় ,তখনই এই বিষয়ে তারা তাদের আগের অবস্থায় ফিরে যায় । যদি তারা তোমাদের কাছ থেকে চলে না যায় , তোমাদের কাছে শান্তি প্রস্তাব না করে ও তাদের হাত সংবরণ না করে , তবে তাদেরকে যেখানেই পাবে গ্রেফতার করবে ও হত্যা করবে এবং তোমাদেরকে তাদের বিরুদ্ধাচরণের স্পষ্ট অধিকার দিয়েছি । এখন সত্যি করে বলুন তো , এসব আয়াত কি অমুসলিমদের হত্যা করার ঢালাও অনুমতি দিচ্ছে ? এসব আয়াত কখন নাজিল হয়েছিল ? এসব আয়াত নাজিল হয়েছিল যখন মুসলমানরা মক্কার অমুসলমানদের দ্বারা নিয়মিতভাবে আক্রমণের শিকার হচ্ছিলো । মদীনার মুসলমানদেরকে মূর্তি উপাসকরা ভীত – সন্ত্রস্ত করে তুলেছিল । বর্তমান সময়ের আলোকে বলা যায় , মুসলমানরা নিয়মিতভাবে সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছিলো ; সেজন্য মুসলমানদেরকে অনুমতি দেয়া হয় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার । এই আয়াতগুলি সন্ত্রাস করতে বলা হয় নি বরং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সতর্কবাণী । এই সতর্কবাণীর মধ্যেও লক্ষ্য করে দেখুন মুসলমানদেরকে কতটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা হয়েছে .... কিন্ত্ত সীমা লংঘন করো না (‌২.‌১৯০) । ড: জাকির বলেন জিহাদ অনেক ধরণের হয় । এক ধরণের জিহাদ হলো যুদ্ধের ময়দানে অত্যাচারী ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে লড়াই করা । হিন্দুদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ গীতা ও মহাভারতে যুদ্ধের অনেক বর্ণনা আছে । আপন পরিবারের মধ্যে যুদ্ধ , রক্ত সম্পর্কিত আত্মীয়রা একের বিরুদ্ধে অন্যে যুদ্ধ করছে , এমন কাহিনী ওখানে আছে । যদি কোন হিন্দুকে প্রশ্ন করেন , তাহলে কি তোমাদের ধর্ম বলে আপন আত্মীয়কে খুন করতে , তখন তারা বলবে না , না , ওটা ছিল ধর্মযুদ্ধ । অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই । পবিত্র কুরআনও ঠিক একই কথা বলে , অন্যায়ের বিরুদ্ধে জিহাদ করো । ইসলামের অনেক সমালোচক যেমন ভারতের অরুণ সুরী তার বইতে সুরা তওবার ৫ নং আয়াতের কথা বিকৃতভাবে লিখেছে : লড়াই করো ও মুশরিক / কাফির ( হিন্দুদের ) হত্যা করো যেখানেই পাবে । অথচ পবিত্র কুরআনে হিন্দু কথাটা নেই । অরুণ সুরী তার বইতে আরো যা উল্লেখ করেন নি তাহলো , সুরা তওবার শুরুতে মুসলমান ও মুশরিকদের মধ্য চুক্তির কথা বলা হয়েছে । মক্কার মুশরিকরা এই চুক্তি ভঙ্গ করলে আল্লাহ তাদেরকে চার মাস সময় দেন সঠিক পথে আসার জন্য , নয়তো তাদেরকে যুদ্ধের মুখোমুখি হতে হবে বলে সাবধান করে দেয়া হয় । এই আয়াত শান্তির সময় ঘরে - বাজারে –খেলার মাঠে অবস্থানরত নিরস্ত্র , নিরীহ বেসামরিক অমুসলিমদের জন্য প্রযোজ্য নয় : নিষিদ্ধ মাস পার হলে মুশরিকদের যেখানে পাবে হত্যা করবে , বন্দী করবে , অবরোধ করবে ও প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের জন্য ওঁৎ পেতে থাকবে ( ৯:৫ ) । অরুণ সুরী এরপর সুরা তওবার ৬ নং আয়াতটি তার বইতে উল্লেখ করেন নি । যে কোন যুক্তিবাদী মানুষই বুঝতে পারবেন যে ঐ আয়াতেই রয়েছে এই অপপ্রচারের উত্তর । মুশরিকদের মধ্যে কেউ তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করলে তুমি তাকে আশ্রয় দিবে যাতে সে আল্লাহর বাণী শুনতে পায় ; তারপর তাকে তার নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দিবে , কারণ তারা অজ্ঞ ( সুরা তওবা ; ৯:৬ ) । ড. জাকির বলেন , যুদ্ধের সময় কোন সেনাপতি বড়জোর সৈন্যদের এটা বলতে পারে যে বন্দীকে মেরো না , ছেড়ে দাও । কোন ধর্মগ্রন্থে যুদ্ধরত সৈন্যদের এই আদেশ দেয়া হয়েছে যে শত্রুদের নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দাও ? একমাত্র কুরআনেই পাবেন এমন মহৎ নির্দেশ । ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় মার্কিন সৈন্যদের প্রতি নির্দেশ ছিল ভিয়েতনামী যোদ্ধাদের দেখলেই খুন করতে হবে । এর মানে কি এই যে এখন যে কোন আমেরিকান যেখানেই ভিয়েতমানী কাউকে দেখবে , তাকেই মেরে ফেলবে ? দেখুন , ইয়াহুদী ও খ্রিস্টানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থে যুদ্ধ ও হত্যার কত বিবরণ রয়েছে । “তোমরা যে দেশ অধিকার করবার জন্য যাচ্ছ সেখানে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুই তোমাদের নিয়ে যাবেন ...... তিনি যখন তাদের তোমাদের হাতের মুঠোয় এনে দেবেন এবং তোমরা তাদের হারিয়ে দেবে তখন তোমরা তাদের একেবারে ধ্বংস করে ফেলবে। তোমরা তাদের সংগে কোন সন্ধি করবে না এবং তাদের প্রতি কোন দয়া দেখাবে না। দ্বিঃবিঃ ৭:১-২) (দ্বিঃবিঃ 20:10) “তোমরা কোন গ্রাম বা শহর আক্রমণ করতে যাওয়ার আগে সেখানকার লোকদের কাছে বিনা যুদ্ধে অধীনতা মেনে নেবার প্রস্তাব করবে। (দ্বিঃবিঃ 20:11) যদি তাতে তারা রাজী হয়ে তাদের ফটক খুলে দেয় তবে সেখানকার সমস্ত লোকেরা তোমাদের অধীন হবে এবং তোমাদের জন্য কাজ করতে বাধ্য থাকবে। (দ্বিঃবিঃ 20:12) কিন্তু তারা যদি সেই প্রস্তাবে রাজী না হয়ে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামে তবে সেই জায়গা তোমরা আক্রমণ করবে। (দ্বিঃবিঃ 20:13) তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যখন সেই জায়গাটা তোমাদের হাতে তুলে দেবেন তখন সেখানকার সব পুরুষ লোকদের তোমরা মেরে ফেলবে। (দ্বিঃবিঃ 20:14) তবে স্ত্রীলোক, ছেলেমেয়ে, পশুপাল এবং সেই জায়গার অন্য সব কিছু তোমরা লুটের জিনিস হিসাবে নিজেদের জন্য নিতে পারবে। শত্রুদের দেশ থেকে লুট করা যে সব জিনিস তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের দেবেন তা তোমরা ভোগ করতে পারবে। (দ্বিঃবিঃ 20:15) যে সব শহর তোমাদের দেশ থেকে দূরে আছে, যেগুলো তোমাদের কাছের জাতিগুলোর শহর নয়, সেগুলোর প্রতি তোমরা এই রকম করবে। (দ্বিঃবিঃ 20:16) কিন্তু তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু সমপত্তি হিসাবে যে সব জাতিদের গ্রাম ও শহর তোমাদের দিতে যাচ্ছেন সেখানকার কাউকেই তোমরা বাঁচিয়ে রাখবে না। (দ্বিঃবিঃ 20:17) তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে তোমরা হিত্তীয়, ইমোরীয়, কনানীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় এবং যিবূষীয়দের সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে ফেলবে। (গণনা 31:17) এখন তোমরা এই সব ছেলেদের এবং যারা কুমারী নয় এমন সব স্ত্রীলোকদের মেরে ফেল; (গণনা 31:18) কিন্তু যারা কুমারী তাদের তোমরা নিজেদের জন্য বাঁচিয়ে রাখ। (লূক 19:27) আমার শত্রুরা যারা চায় নি আমি রাজা হই, তাদের এখানে নিয়ে এস এবং আমার সামনে মেরে ফেল।’ ” গণমাধ্যম শুধু প্রচার করে কুরআনে যুদ্ধের আয়াত আছে । অথচ অন্য ধর্মগ্রন্থগুলিতেও দেখবেন যুদ্ধ ও হত্যার অনুমতি দেয়া হয়েছে তবে গণমাধ্যমে সেসবের বিরুদ্ধে কোন নিন্দা বা সমালোচনা আপনার চোখে পড়বে না কেননা গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করছে যিয়নিস্টরা ( উগ্র ইয়াহুদীবাদী ও তাদের সমর্থকরা যারা ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী ) । আমরা যেন ইসলাম বিরোধী এদের কোন অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হই , আমীন । সহায়ক সূত্র : ড: জাকির নায়েক , http://www.islamawareness.net/Hinduism/ ... part9.html , ড: মুজাম্মেল সিদ্দিক , সভাপতি , ফিকাহ কাউন্সিল , উত্তর আমেরিকা , ইসলাম অনলাইন ,http://www.christbd.org/component/option,com_joombible/Itemid,385/layout,biblia/view,biblia
  18. Asalamu'alaikum রিয়া বা ছোট শির্‌ক রিয়া বা ছোট শির্‌ক সম্পর্কে আমলের উদ্দেশ্য ও বাসনাঃ ২৩. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ বলেন, “আমি তো কোন বিচক্ষণ ব্যক্তির কথাই কবূল করি না; বরং আমি তার উদ্দেশ্য ও বাসনাই কবুল করে থাকি। অতঃপর তার ইচ্ছা ও প্রত্যাশা যদি আল্লাহ যা ভালবাসেন ও পছন্দ করেন তাই হয়; তবে তার উদ্দেশ্যকে আমি আমার প্রশংসা ও মর্যাদায় পরিবর্তিত করে দেই, যদিও সে কথা সে নাও বলে থাকে।” হামযাহা সাহমী এ হাদীসটি হযরত মুহাজির ইবনে হাবীব (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন। লোক দেখানো আমলের পরিণতিঃ ২৪. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- কেয়ামতের দিন কিছু লোককে বেহেশতের দিকে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হবে। তারা যখন বেহেশতের কাছাকাছি হবে তখন তারা ওর সুঘ্রাণ পাবে এবং বেহেশতের প্রাসাদগুলো এবং আল্লাহ্‌ তাতে তার অধিবাসীদের জন্য যা কিছু তৈরী করেছেন, তার দিকে তাকাবে। তখন ডেকে বলা হবে, “তাদেরকে ফিরিয়ে আন, ওতে ওদের কোন অংশ নেই।” তখন তারা হতাশ হয়ে ফিরে আসবে যেমনটি পূর্ববর্তীগণ কখনো ফিরে আসেনি। তারপর তারা বলবে-“হে আমাদের রব, যদি তুমি আমাদেরকে তোমার প্রতিদানের বেহেশতে এবং তাতে তোমার বন্ধুদের জন্য যা তৈরি করে রেখেছ তা দেখানোর আগেই দোযখে প্রবেশ করাতে, তবে আমাদের জন্য সহজ হত।” আল্লাহ বলবেন, “ওরে পাপিষ্টরা, তোদের (শাস্তির) জন্য আমি এই মনস্থ করেছি। তোমরা যখন নিরালায় থাকতে তখন বড় বড় পাপ করে আমার মুকাবিলা করতে, আর যখন লোকদের মধ্যে আসতে তখন তাদের সাথে বিনয়ের সাথে দেখা করতে। মনে মনে তোমরা আমাকে যেরূপ বড় মনে করতে, মানুষদেরকে তার উল্টা দেখাতে। তোমরা মানুষকে ভয় করতে কিন্তু আমাকে আমাকে করতে না, মানুষকে বড় মনে করতে, কিন্তু আমাকে করতে না তোমরা মানুষের জন্য নিজেকে পবিত্র সাজাতে, কিন্তু আমার জন্য সাজাতে না এ জন্য আমি যে আজ তোমাদেরকে বেহেশতে থেকে বঞ্চিত করেছি (তার উদ্দেশ্য ) তা দিয়ে তোমাদেরকে শাস্তি দিব।” তিবরানী এ হাদীসটি হযরত আদী ইবনে হাতিম (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন
  19. Asalamu'alaikum قَالُواْ ادْعُ لَنَا رَبَّكَ يُبَيِّن لَّنَا مَا لَوْنُهَا قَالَ إِنَّهُ يَقُولُ إِنّهَا بَقَرَةٌ صَفْرَاء فَاقِـعٌ لَّوْنُهَا تَسُرُّ النَّاظِرِينَ 69 তারা বলল, তোমার পালনকর্তার কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা কর যে, তার রঙ কিরূপ হবে? মূসা (আঃ) বললেন, তিনি বলেছেন যে, গাঢ় পীতবর্ণের গাভী-যা দর্শকদের চমৎকৃত করবে। قَالُواْ ادْعُ لَنَا رَبَّكَ يُبَيِّن لَّنَا مَا هِيَ إِنَّ البَقَرَ تَشَابَهَ عَلَيْنَا وَإِنَّآ إِن شَاء اللَّهُ لَمُهْتَدُونَ 70 তারা বলল, আপনি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করুন-তিনি বলে দিন যে, সেটা কিরূপ? কেননা, গরু আমাদের কাছে সাদৃশ্যশীল মনে হয়। ইনশাআল্লাহ এবার আমরা অবশ্যই পথপ্রাপ্ত হব। মূসা (আঃ) বললেন, তিনি বলেন যে, এ গাভী ভূকর্ষণ ও জল সেচনের শ্রমে অভ্যস্ত নয়-হবে নিষ্কলঙ্ক, নিখুঁত। قَالَ إِنَّهُ يَقُولُ إِنَّهَا بَقَرَةٌ لاَّ ذَلُولٌ تُثِيرُ الأَرْضَ وَلاَ تَسْقِي الْحَرْثَ مُسَلَّمَةٌ لاَّ شِيَةَ فِيهَا قَالُواْ الآنَ جِئْتَ بِالْحَقِّ فَذَبَحُوهَا وَمَا كَادُواْ يَفْعَلُونَ 71 তারা বলল, এবার সঠিক তথ্য এনেছ। অতঃপর তারা সেটা জবাই করল, অথচ জবাই করবে বলে মনে হচ্ছিল না। وَإِذْ قَتَلْتُمْ نَفْساً فَادَّارَأْتُمْ فِيهَا وَاللّهُ مُخْرِجٌ مَّا كُنتُمْ تَكْتُمُونَ 72 যখন তোমরা একজনকে হত্যা করে পরে সে সম্পর্কে একে অপরকে অভিযুক্ত করেছিলে। যা তোমরা গোপন করছিলে, তা প্রকাশ করে দেয়া ছিল আল্লাহর অভিপ্রায়।
  20. Asalamu'alaikum Similarities between Muslims & Jewish Holy Books. মুসলমান ও ইয়াহুদীদের ধর্মগ্রন্থের মধ্যে মিল কল্পনা করুন , কুরআন ও হাদীসে বলা হয়েছে ইয়াহুদীরা বিষধর সাপের বংশধর বা বিশ্বাসঘাতক ও বিদ্বেষপরায়ন । পশ্চিমা গণমাধ্যম এক মূহুর্তের জন্যও তাহলে কাউকে এসব ভুলতে দিত না যে মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থে স্রষ্টার পবিত্র ভূমির নির্বাচিত মানুষদের সম্পর্কে কী বলা হয়েছে । অথচ এখন কোন গণমাধ্যমেই তাওরাত বা বাইবেলে ইয়াহুদীদের সম্পর্কে যীশু কী বলেছেন , তার কোন সমালোচনা দেখবেন না । কুরআনে ইয়াহুদীদের সম্পর্কে আল্লাহ কত চমৎকার কথা বলেছেন , সেসবের উল্লেখও কোথাও পাবেন না । দুই ধর্মের বিশ্বাসীদের ধর্মগ্রন্থই বর্ণনা করে কিভাবে ইয়াহুদীরা আল্লাহর রহমতপ্রাপ্ত হয়েছিল , একইসাথে কিভাবে তারা আল্লাহ কাছ থেকে অভিশাপ ও শাস্তি পেয়েছিল , সেটাও বলা হয়েছে । এরপরেও গণমাধ্যমে অপপ্রচার চলে ও অমুসলিমরা অভিযোগ করে যে কুরআন ইয়াহুদী বিদ্বেষী ও তাদের বিরুদ্ধে অযথাই অত্যন্ত কঠোর ভাষায় নিন্দা করে । এই অভিযোগ ও অপপ্রচার কেন ? কাদের স্বার্থে ? জানা না থাকলে আন্দাজ করে বলা কঠিন কোন আয়াত কোন ধর্মগ্রন্থ থেকে নেয়া । পাঠক , চেষ্টা করে দেখুন তো বলতে পারেন কি না । নবীদের যারা খুন করেছে আপনারা তাদেরই বংশধর। “সাপের দল আর সাপের বংশধরেরা! কেমন করে আপনারা নরকের শাস্তি থেকে রক্ষা পাবেন? ইস্রায়েল জাতির লোকেরা অন্যান্য জাতির সমস্ত লোকদের কাছ থেকে নিজেদের আলাদা করে নিল। তারা দাঁড়িয়ে নিজেদের পাপ ও তাদের পূর্বপুরুষদের অন্যায় স্বীকার করল। “…. আমাদের পূর্বপুরুষদের ব্যবহার ছিল অহংকারে পূর্ণ; তারা একগুঁয়ে হয়েছিল আর তোমার আদেশ পালন করে নি। এমন কি, তারা নিজেদের জন্য ছাঁচে ফেলে একটা বাছুরের মূর্তি তৈরী করে বলেছিল, ‘ইনিই তোমাদের ঈশ্বর; মিসর দেশ থেকে ইনিই তোমাদের বের করে এনেছেন।’ এইভাবে যখন তারা তোমাকে ভীষণ অপমান করেছিল “কিন্তু তবুও তারা অবাধ্য হয়ে তোমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল; তোমার আইন-কানুন তারা ত্যাগ করেছিল। তোমার যে নবীরা তাদের সতর্ক করতেন যাতে তারা তোমার দিকে ফিরে আসে সেই নবীদের তারা মেরে ফেলেছিল; তারা তোমাকে ভীষণ অপমান করেছিল। “তোমার আইন-কানুনের দিকে ফিরে আসবার জন্য তুমি তাদের সতর্ক করেছিলে কিন্তু তাদের ব্যবহার ছিল অহংকারে পূর্ণ; তারা তোমার সব আদেশ অমান্য করেছিল। তোমার যে সব নির্দেশ পালন করলে মানুষ বাঁচে তার বিরুদ্ধে তারা পাপ করেছিল। তারা একগুঁয়েমি করে এবং ঘাড় শক্ত করে তোমার কথা শুনতে চায় নি। ....আমাদের পূর্বপুরুষেরা তোমার আইন-কানুন মেনে চলেন নি; তোমার আদেশ কিম্বা সতর্কবাণী তাঁরা শোনেন নি। আমি নিশ্চিত , অনেক মুসলমান পাঠক ও অমুসলিমদের প্রায় সবাই ভাবছেন এসব আয়াত পবিত্র কুরআন থেকে নেয়া হয়েছে । কিন্ত্ত না ; এসব ইয়াহুদী ও খ্রিস্টানদের পবিত্র গ্রন্থ থেকে নেয়া ( তৌরাত , নহিমিয়া ৯:১-২৬ ) ( ১ম সিপারা : মথি ২৩: ২৫-৩৩ ) । এরকম আরো অনেক উদাহরণ দেয়া যায় তবে লেখা বড় যাবে বলে দিচ্ছি না । পাঠক ইচ্ছা করলে অনলাইনে বা কিনে তৌরাত , বাইবেল পড়ে দেখে নিতে পারেন : হজরত মুসা আলাইহিস সালাম ইয়াহুদীদের সতর্ক করে বলেছিলেন ...তিনি তোমাদের বদদোয়া দেবেন ) দ্বিতীয় বিবরণ ; ২৮ :২০ । এছাড়াও পড়ুন ( নবীদের কিতাব ; মিকাহ ৩:১-১২ ) , হোসিয়া ; ৮:১৪ ; হেজকিল ২:৩ । নীচে কুরআনের আয়াতগুলি পড়ে দেখুন : হে বনী-ইসরাঈলগণ, তোমরা স্মরণ কর আমার সে অনুগ্রহ যা আমি তোমাদের প্রতি করেছি এবং তোমরা পূরণ কর আমার সাথে কৃত প্রতিজ্ঞা, তাহলে আমি তোমাদেরকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি পূরণ করব। ( সুরা বাকারা ; ২:৪০। হে বনী-ইসরাঈলগণ! তোমরা স্মরণ কর আমার অনুগ্রহের কথা, যা আমি তোমাদের উপর করেছি এবং (স্মরণ কর) সে বিষয়টি যে, আমি তোমাদেরকে উচ্চমর্যাদা দান করেছি সমগ্র বিশ্বের উপর ( সুরা বাকারা ; ২:৪৭) কুরআনে ইয়াহুদীদের ভুলের কথা , তাদের অপরাধের কথা মনে করিয়ে তা থেকে তাদের বিরত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে কিন্ত্ত সেটাকে বলা হয় জাতিগত বিদ্বেষ বা ইয়াহুদী বিরোধীতা , এটা দু:খজনক । কুরআন বর্ণনা করে কী ঘটেছে অতীতে – যদি এটি ইয়াহূদীদের বিরুদ্ধে কঠোরতা প্রদর্শন হয় , তবে কেন কেউ বলে না ইয়াহুদীদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থেই তাদের বিরুদ্ধে অনেক কঠোর কথা আছে ? তাই কুরআন ইয়াহুদী বিদ্বেষী , এমন অমূলক অভিযোগ দয়া করে আর করবেন না । ইয়াহুদীদের বিরুদ্ধে কঠোর কথা থাকার পরেও যদি তাওরাত ( বাইবেলের পুরাতন নিয়ম ) ও বাইবেলের নতুন নিয়মের বিরুদ্ধে কেউ কিছু না বলে , তবে কুরআনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বন্ধ করুন । আশা করি , ভবিষ্যতে কেউ যদি এই অভিযোগ করে যে কুরআন ইয়াহুদী বিদ্বেষী এক ধর্মগ্রন্থ , তাহলে মুসলমানরা তো বটেই , অমুসলিমরাও এই অভিযোগ খন্ডন করবেন । কুরআন সেটাই বলে যা অতীতে ইয়াহুদীরা করেছে ও যা তাদের নিজের পবিত্র গ্রন্থই সাক্ষ্য দেয়। সহায়ক সূত্র : http://www.convertstoislam.org http://www.mechon-mamre.org/p/pt/pt35b09.htm http://www.christbd.org/component/optio ... ew,biblia/
  21. Asalamu'alaikum وَلَقَدْ عَلِمْتُمُ الَّذِينَ اعْتَدَواْ مِنكُمْ فِي السَّبْتِ فَقُلْنَا لَهُمْ كُونُواْ قِرَدَةً خَاسِئِينَ 65 তোমরা তাদেরকে ভালরূপে জেনেছ, যারা শনিবারের ব্যাপারে সীমা লঙ্ঘণ করেছিল। আমি বলেছিলামঃ তোমরা লাঞ্ছিত বানর হয়ে যাও। فَجَعَلْنَاهَا نَكَالاً لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهَا وَمَا خَلْفَهَا وَمَوْعِظَةً لِّلْمُتَّقِينَ 66 অতঃপর আমি এ ঘটনাকে তাদের সমসাময়িক ও পরবর্তীদের জন্য দৃষ্টান্ত এবং আল্লাহভীরুদের জন্য উপদেশ গ্রহণের উপাদান করে দিয়েছি। وَإِذْ قَالَ مُوسَى لِقَوْمِهِ إِنَّ اللّهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَذْبَحُواْ بَقَرَةً قَالُواْ أَتَتَّخِذُنَا هُزُواً قَالَ أَعُوذُ بِاللّهِ أَنْ أَكُونَ مِنَ الْجَاهِلِينَ 67 যখন মূসা (আঃ) স্বীয় সম্প্রদায়কে বললেনঃ আল্লাহ তোমাদের একটি গরু জবাই করতে বলেছেন। তারা বলল, তুমি কি আমাদের সাথে উপহাস করছ? মূসা (আঃ) বললেন, মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে আমি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি। قَالُواْ ادْعُ لَنَا رَبَّكَ يُبَيِّن لّنَا مَا هِيَ قَالَ إِنَّهُ يَقُولُ إِنَّهَا بَقَرَةٌ لاَّ فَارِضٌ وَلاَ بِكْرٌ عَوَانٌ بَيْنَ ذَلِكَ فَافْعَلُواْ مَا تُؤْمَرونَ 68 তারা বলল, তুমি তোমার পালনকর্তার কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা কর, যেন সেটির রূপ বিশ্লেষণ করা হয়। মূসা (আঃ) বললেন, তিনি বলছেন, সেটা হবে একটা গাভী, যা বৃদ্ধ নয় এবং কুমারীও নয়-বার্ধক্য ও যৌবনের মাঝামাঝি বয়সের। এখন আদিষ্ট কাজ করে ফেল।
  22. Asalamu'alaikum Do Muslims Hate non-Muslims? প্রশ্ন : মুসলমানরা কি অমুসলিমদের ঘৃণা করে ? মুসলমানরা অন্য ধর্মের সবাইকে ঘৃণা করে – এটা ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে একটি অপপ্রচার । নির্দিষ্ট কোন জাতি , ধর্ম , বর্ণ , ভাষা বা দেশের মানুষকে ঘৃণা করার অধিকার মুসলমানদের নেই । ইসলাম বর্ণ বৈষম্য বা জাতিগত হিংসা সমর্থন করে না । তবে মুসলমানরা কুফর বা এক আল্লাহতে অবিশ্বাসকে ঘৃণা করে । আমরা সব মানুষকে ভালবাসি , সম্মান করি তবে অপছন্দ করি স্রষ্টায় তাদের অবিশ্বাসকে ও স্রষ্টার পাশাপাশি অন্য উপাস্য গ্রহণকে । একজন ডাক্তার রোগীকে ঘৃণা করেন না , তবে রোগকে তিনি অপছন্দ করেন ও চান যে চিকিৎসা করে অসুস্থ মানুষকে সেই রোগ থেকে মুক্তি দিতে । তেমনি মুসলমানরা আল্লাহর অবাধ্যতাকে ঘৃণা করেন ও তাদের চেষ্টা হলো মানুষকে এই অসুস্থতা থেকে মুক্তি দিয়ে আল্লাহর অনুগত বান্দায় পরিণত করা । অমুসলিমদের সাথে সদয় আচরণ করতে কুরআনে কোন নিষেধ নেই । আল্লাহ বলেন : ধর্মের ব্যপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে নি ও তোমাদেরকে দেশ থেকে বার করে দেয় নি , তাদের প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শন ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদের মানা করে না ( সুরা মুমতাহিনা : আয়াত ৮ ) । কুরআনে বলা হয়েছে : কোন সম্প্রদায়ের শত্রুতা যেন তোমাদের কখনো প্ররোচিত না করে ন্যায়বিচার বর্জন করতে । ন্যায়বিচার করবে । ন্যায়বিচার করাই তাকওয়ার নিকটতম ( সুরা মায়িদা ; আয়াত ৮ ) অমুসলিমদের সাথে ভাল ব্যবহারের আদর্শ স্থাপন করে গিয়েছেন আল্লাহর সর্বশেষ নবী ও রাসূল হজরত মুহাম্মদ صلى الله عليه وسلم যখন মক্কা বিজয় করেন , তখন তার সাথে ছিল দশ হাজার সশস্ত্র অনুগত সাহাবী । এই সেই মক্কাবাসী যারা তাকে পরিবারসহ অনাহারে রেখেছিল দিনের পর দিন , যারা হত্যা করেছে তার প্রাণপ্রিয় কন্যা , চাচাসহ অনেক প্রিয়জনকে । এই মূর্তি পূজারী , স্বজন হত্যাকারী , নির্মম অত্যাচার করে প্রিয় জন্মভূমি মক্কা থেকে রাসূল صلى الله عليه وسلم কে বিতাড়নকারীদের সাথে নবী صلى الله عليه وسلم এর আচরণ কেমন ছিল ? ঘৃণাই যদি ইসলামের শিক্ষা হতো , তাহলে রাসূল صلى الله عليه وسلم এই অপরাধীদের সবাইকে মেরে ফেলতেন । কিন্ত্ত তিনি ক্ষমার আদর্শ স্থাপন করলেন । হাতেগোণা ১০/১২ জন যুদ্ধ অপরাধীকে শাস্তি দিয়ে পুরো মক্কাবাসীকে মাফ করা হলো ; যুদ্ধ বিজয়ী সেনাদের হাতে বিধর্মী একজন নারীরও সম্মান নষ্ট হলো না । পাশ্চাত্য গণমাধ্যম কখনো হজরত মুহাম্মদ صلى الله عليه وسلم এর এসব আদর্শ ও মহত্বের ঘটনা প্রচার করে না । পশ্চিমারা শুধু ( তাদের মতে ) ক্রশবিদ্ধ অবস্থায় যীশু খ্রীস্ট অত্যাচারীদের মাফ করেছিলেন , সেটাই প্রচার করে । কিন্ত্ত তারা এটা বলে না সত্যি যদি এই ঘটনা ঘটেও থাকে অর্থাৎ ক্রুশবিদ্ধ হওয়াটা , তাহলে সেসময় যীশুর পক্ষে প্রতিশোধ নেয়ার কোন শক্তি ছিল না । অথচ রাসূল صلى الله عليه وسلم যখন অপরাধীদের ক্ষমা করলেন , তখন তিনি ছিলেন প্রতিশোধ নেয়ার মত ক্ষমতাবান । ইসলাম যে ক্ষমা ও মহত্বের ধর্ম , এর থেকে বড় প্রমাণ আর কী হতে পারে ? সব মানুষ আল্লাহর সৃষ্টি । আল্লাহ বলেন : হে মানুষ ; আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী থেকে , পরে তোমাদেরকে ভাগ করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে যাতে তোমরা একে অন্যের সাথে পরিচিত হতে পারো ( সুরা হুজুরাত : ৪৯ :১৩ ) । মুসলমানদেরকে আল্লাহ নির্দেশ দেন সদয় ব্যবহারের : ...আর ভাল ব্যবহার করো পিতা – মাতার সাথে , আত্মীয়দের সাথে , ইয়াতীমের সাথে , মিসকিনদের সাথে , নিকট – প্রতিবেশী ও দূর দূর প্রতিবেশীদের সাথে , সঙ্গী-সাথী ও পথচারীদের সাথে ও তোমাদের অধিকারে থাকা দাস-দাসীদের সাথে । নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না দাম্ভিক , অহংকারী ব্যক্তিকে ( সুরা নিসা : আয়াত ৩৬ ) । আয়াতটি ভাল করে পড়ে দেখুন - এমন কী যে পথচারী অর্থাৎ যাকে আমি চিনিও না , তার সাথেও খারাপ ব্যবহার করার অনুমতি আল্লাহ আমাকে দেন নি । তাই অমুসলিম প্রতিবেশীর সাথে খারাপ ব্যবহার করা , তার প্রার্থনার ঘরে গিয়ে উপাসনার মূর্তি ভাঙ্গা বা তার উপাস্যের গয়না চুরি করা কোন মুসলমানের কাজ নয় । মুসলমান পুরুষদের আল্লাহ অনুমতি দিয়েছেন ইয়াহুদী ও খ্রিস্টান নারীদের বিয়ে করতে যদি তারা সৎ চরিত্রের হয় : তোমাদের আগে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের সচ্চরিত্রা নারী তোমাদের জন্য বৈধ করা হলো যদি তোমরা তাদের দেনমোহর দাও বিয়ের জন্য , প্রকাশ্য ব্যভিচার বা গোপন প্রেমিকা গ্রহণের জন্য নয় ( সুরা মায়িদা ; আয়াত ৫ ) । আসমানী কিতাবের মানুষদের জবাই করা মাংস মুসলমানদের জন্য হালাল । ইসলামের শিক্ষা যদি অন্য ধর্মের সবাইকে ঘৃণা করাই হতো , তবে নিশ্চয়ই এসব বিষয়ের অনুমতি আল্লাহ দিতেন না । তাই মুসলমানরা অন্য ধর্মের সবাইকে ঘৃণা করে , আসুন এই অপপ্রচারে কেউ যেন আর বিভ্রান্ত না হয় , সেজন্য আমরা বেশী বেশী করে ইসলামের বাণী সবার মাঝে প্রচার করি । আল্লাহ আমাদেরকে সেই তওফীক দান করুন । তথ্যসূত্র : http://www.islamonline
  23. Asalamu'alaikum সময় ও কালকে গালি দেয়াও শিরকঃ ২০. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান মর্যাদাশীল আল্লাহ ্‌ বলেছেন, “আদম সন্তান কালকে গালি দিয়ে আমাকে কষ্ট দেয়, অথচ আমিই কাল, কর্তৃত্ব আমারই হাতে, আমিই রাত-দিনের পরিবর্তন করি।” আহমদ, আবূ দাউদ ও শায়খাইন এ হাদীসটি হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন। ২১. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সময়কে গালি দিও না; মহান আল্লাহ বলেছেন, “আমিই সময়। দিন ও রাতকে আমি নতুন রূপ দান করি, আর আমিই শাসকদের উপর আরেক শাসকদেরকে চাপিয়ে থাকি।” বাহয়াকী এ হাদীসটি হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন। ২২. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান আল্লাহ্‌ বলেন, “আমি আমার বান্দার কাছে ঋণ চেয়েছিলাম, কিন্তু সে আমাকে ঋণ দেয়নি। আর আমার বান্দা আমাকে গালি দিয়েছে, অথচ সে তা জানে না। সে বলে, হায়রে সময়! হায়রে সময়! মূলত আমিই সময়।”
  24. Asalamu'alaikum إِنَّ الَّذِينَ آمَنُواْ وَالَّذِينَ هَادُواْ وَالنَّصَارَى وَالصَّابِئِينَ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَعَمِلَ صَالِحاً فَلَهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ وَلاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ 62 নিঃসন্দেহে যারা মুসলমান হয়েছে এবং যারা ইহুদী, নাসারা ও সাবেঈন, (তাদের মধ্য থেকে) যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও কিয়ামত দিবসের প্রতি এবং সৎকাজ করেছে, তাদের জন্য রয়েছে তার সওয়াব তাদের পালনকর্তার কাছে। আর তাদের কোনই ভয়-ভীতি নেই, তারা দুঃখিতও হবে না। وَإِذْ أَخَذْنَا مِيثَاقَكُمْ وَرَفَعْنَا فَوْقَكُمُ الطُّورَ خُذُواْ مَا آتَيْنَاكُم بِقُوَّةٍ وَاذْكُرُواْ مَا فِيهِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ 63 আর আমি যখন তোমাদের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলাম এবং তুর পর্বতকে তোমাদের মাথার উপর তুলে ধরেছিলাম এই বলে যে, তোমাদিগকে যে কিতাব দেয়া হয়েছে তাকে ধর সুদৃঢ়ভাবে এবং এতে যা কিছু রয়েছে তা মনে রেখো যাতে তোমরা ভয় কর। ثُمَّ تَوَلَّيْتُم مِّن بَعْدِ ذَلِكَ فَلَوْلاَ فَضْلُ اللَّهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُ لَكُنتُم مِّنَ الْخَاسِرِينَ 64 তারপরেও তোমরা তা থেকে ফিরে গেছ। কাজেই আল্লাহর অনুগ্রহ ও মেহেরবানী যদি তোমাদের উপর না থাকত, তবে অবশ্যই তোমরা ধবংস হয়ে যেতে।
  25. বিশ্বকাপ ক্রিকেট নিয়ে বাংলাদেশের নারী – পুরুষ সবাই উত্তেজনায় মেতে আছেন । নানাভাবে আবেগের প্রকাশ ঘটাচ্ছেন তারা । এর একটি হলো বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের জার্সির মত নিজেরাও সেই একই ধরণের পোশাক পরছেন । ছেলেরা পুরুষ খেলোয়াড়দের মত কাপড় পড়লে তাতে দোষের কিছু নেই ; কিন্ত্ত এখন ক্যামেরার সামনে , খবরের কাগজে গেন্জ্ঞি গায়ে হাসিমুখে তরুণীরা ছবি তুলছেন , সেটা দেখে মনে হলো তারা ভাবছেন দারুণ একটা কাজ করা হলো । দেশের খেলোয়াড়দের সমর্থন দেয়ার জন্য বাংলাদেশের মেয়েরা কি আর কোন পোশাক খুঁজে পেলেন না ? সেলোয়ার – কামিজ – ওড়না বা শাড়িতে কি বাংলাদেশের লাল- সবুজ পতাকার ডিজাইন করা যেত না ? আমাদের সব ফ্যাশন ডিজাইনাররা কোথায় ? এখনো পর্যন্ত এমন ডিজাইনের কাপড় পড়া মহিলা দর্শকদের টিভি পর্দায় বা কাগজের ফ্যাশন পাতায় দেখলাম না । নাকি ক্যামেরা শুধু বেছে বেছে অতি - আধুনিকাদেরকেই দেখাচ্ছে ? বাংলাদেশের ফ্যাশন জগত ও মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করছে কারা ? কেন মুসলিম প্রধান একটি দেশে যে পোশাক ( গেন্জ্ঞি – প্যান্ট ) আমাদের ধর্মীয় – সামাজিক জীবনে মেয়েদের জন্য গ্রহণযোগ্য নয় , সেসব পড়তে মেয়েদের উৎসাহ দেয়া হচ্ছে ? নির্লজ্জতা ছড়িয়ে পড়ার জন্য যা যা সহায়ক সেসব ধারণা ও কাজকে উৎসাহ জোগানোর জন্য পৃষ্ঠপোষকদের কোন অভাব এদেশে হয় না । যাই হোক , আমাদের মনে রাখতে হবে আল্লাহর রাসূল صلى الله عليه وسلم সেই নারী – পুরুষকে অভিশাপ দিয়েছেন যারা একে অন্যের মত অর্থাৎ নারীরা পুরুষের মত ও পুরুষরা নারীর মত সাজসজ্জা ও পোশাক পরেন । মুসলমান নারীদের পোশাক পরার সময় সতর্ক থাকতে হবে যেন তা এত পাতলা না হয় যে শরীর দেখা যায় অর্থাৎ কাপড় পড়েও উলংগ – এমনটি হওয়া থেকে সাবধান । কাপড় অবশ্যই ঢিলা হবে , অমুসলিমদের অনুকরণে বা তাদের ধর্মীয় - সংস্কৃতির প্রকাশ ঘটাচ্ছে এমন কাপড় পরবেন না । বাংলাদেশের মুসলিম নারীরা দেশপ্রেমের নামে ধর্মীয় বিধি- নিষেধ নাই বা অগ্রাহ্য করলেন । মানুষ ক্ষ্যাত বলবে ? বলুক । পৃথিবীর সব মানুষের কাছ থেকে সুন্দর ও আধুনিকা হিসাবে প্রশংসা পেলেও কোন লাভ নেই যদি এক আল্লাহ অখুশী হন । আল্লাহ ফ্যাশনের নামে অতি- আধুনিকা হওয়ার অভিশাপ থেকে মুসলমান মা – বোনদের রক্ষা করুন , আমীন । “ হে নবী ; তুমি তোমার স্ত্রীগণকে , কন্যাগণকে ও বিশ্বাসী নারীদেরকে বল , তারা যেন তাদের চাদরের কিছু অংশ নিজেদের উপর টেনে দেয় .... ( ৩৩ : ৫৯ ) । বিশ্বাসী নারীদের বল , তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে ও তাদের লজ্জাস্থান রক্ষা করে , তারা যা সাধারণত প্রকাশ করে থাকে তাছাড়া তাদের আভরণ প্রদর্শন না করে , তাদের গ্রীবা ও বুক যেন মাথার কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখে ....( ২৪: ৩০-৩১)
×
×
  • Create New...